বিখ্যাত ব্যক্তিদের অকালমৃত্যু
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
যুগে যুগে পৃথিবীতে অনেক মহান ব্যাক্তি এসেছেন। যথাসময়ে তারা মৃত্যুবরণ করেছেন । কিছু মহান আত্মা আমাদের খুব অল্প সময়ের মধ্যে ছেড়ে চলে গেছেন। এমনই কিছু মহান ব্যক্তিদের অকালমৃত্যুর কথা আজ বলবো।
অ্যানা ফ্র্যাংক
অ্যানা ফ্রাঙ্ক হলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভিষীকাময় অধ্যায়ের অনেক বড় একজন সাক্ষী। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনিশ্চিত দিনগুলোর কথা ডায়েরীতে লিখেছিলেন নিয়মিতভাবে। তার মৃত্যুর পর ডায়েরীটি প্রকাশিত হয়।
সবাই জানতে পারে অ্যানা ফ্রাংকের নাম। শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে এই নিষ্পাপ বালিকাটির কথা। মাত্র ১৬ বছর বয়সে আমস্টারডমে পিতার অফিসে ২ বছর লুকিয়ে থাকাকালে নাজী সৈন্যদের দ্বারা আটক হন অ্যানা ও তার বড় বোন।
এরপর তাদেরকে বার্গেন বেলজান কন্সাট্রেশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে ১৭ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। যুদ্ধ শেষে তাঁর পরিবারের একমাত্র বেঁচে থাকা ব্যক্তি বাবা অটো ফ্র্যাংক আমস্টারডামে ফিরে আসেন এবং অ্যানার দিনলিপিটি (ডায়েরী) খুঁজে বের করেন।
তাঁর প্রচেষ্টাতেই দিনলিপিটি ১৯৪৭ সালে প্রকাশিত হয়। এটি মূল ওলন্দাজ ভাষা থেকে পরবর্তীকালে ১৯৫২ সালে প্রথমবারের মতো ইংরেজিতে অনূদিত হয়। এর ইংরেজি নাম হয় ‘দ্য ডায়েরী অফ আ ইয়াং গার্ল’। এটি বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ডায়েরীটি অ্যানার ১৩তম জন্মদিনে উপহারস্বরূপ দেয়া হয়েছিলো। যেখানে অ্যানার জীবনের ১২ জুন ১৯৪২ থেকে ১ আগস্ট ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত সময়ের ঘটনাগুলো ফুটে উঠেছে।
মার্টিন লুথার কিং
মার্টিন লুথার কিং হলেন আমেরিকার নিগ্রোদের মুক্তির আন্দোলনের অন্যতম মহান পুরুষ। তিনি মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতি অনুসরণ করে আমেরিকান নিগ্রোদের পূর্ণ নাগরিক রূপে প্রতিষ্ঠিত করেন।
তাঁর বিখ্যাত ভাষণ হলো “আই হ্যাভ এ ড্রিম।” যা পৃথিবীর বিখ্যাত ভাষনগুলোর মধ্যে একটি। ১৯৬৮ সালে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারান এই মহান নেতা।
বব মার্লি
বব মার্লির নাম কম বেশি আমরা সবাই জানি। সারাজীবন তিনি গেয়েছেন জনমানুষের গান। তৃতীয় বিশ্বের কোনো দেশ থেকে উঠে আসা রক শিল্পীর মধ্যে যার নামটি সবার আগে উচ্চারিত হয় তিনি হলেন প্রয়াত নেস্তা রবার্ট মার্লি বা বব মার্লি।
তিনি ছিলেন একাধারে গায়ক, গীতিকার এবং সঙ্গীতপরিচালক। ষাটের দশকে জ্যামাইকায় জন্ম নেয় রেগী মিউজিকের ধারা। সেই ধারাকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করে তোলার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন মার্লি।
বব মার্লির গান লেখার ক্ষমতা ছিলো অসাধারণ। গানও যে প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে তা বিশ্ববাসীর চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন তিনি। বিদ্রোহ আর প্রতিবাদের পাশাপাশি বিশ্বাস এবং কোনো কিছু অর্জনে দৃঢ় সংকল্পের জয়গানও গেয়েছেন। গেয়েছেন ‘নো ওম্যান নো ক্রাই’-এর মতো গানও।
তার গাওয়া “গেট আপ স্ট্যান্ড আপ”, “বাফেলো সোলজার”,”ওয়ান লাভ”,”নো উওম্যান নো ক্রাই”, দখল করে নিয়েছে সকলের মন। তিনি বিখ্যাত রাস্তাফেরী আন্দোলনের অন্যতম কর্ণধার। রেগী সঙ্গীতের এই বরপূত্র মাত্র ৩৬ বছর বয়সে ম্যালানোমায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
প্রতিক্ষণ/এডি/নির্ঝর