বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাহাজঃ হারমনি অব দ্য সিস
সিফাত তন্ময়
টাইটানিক! বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাহাজ গুলোর কথা বলতেই আমাদের চোখে যার চিত্র ফুটে ওঠে। তবে সেটা এখন অতীত, বর্তমানে সাগরে ভাসছে টাইটানিকের চেয়েও ৫ গুন বড় বিলাশবহুল জাহাজ। নাম হারমনি অব দ্য সিস, বিশ্বে এ পর্যন্ত নির্মিত সবচেয়ে বড় ও ভারী জাহাজ এটি । ঘন্টায় ২৫ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারা হারমনি অব দ্য সিস ছয় হাজার সাতশো ৮০ জন যাত্রী বহন করতে পারে, এর উচ্চতা উচ্চতা এক হাজার একশো ৮৭ ফুট লম্বা ও দুইশো ৩০ ফুট , । এতে রয়েছে মোট ১৮টি ডেক। এর মধ্যে ১৬টি ডেকে রয়েছে দুই হাজার সাতশো ৪৭টি কেবিন। যা কিনা বর্তমানে যেকোনো জাহাজের চেয়ে অনেক বেশি। এটি এত বড় যে যাত্রীরা যাতে হারিয়ে না যান সেজন্য তাদের জিপিএস সিস্টেম।
পরতে পরতে বিস্ময় এবং বিশালতার এই জাহাজটিকে সেন্ট্রাল পার্ক, পুল, ফিটনেস সেন্টার, বিনোদন কেন্দ্রসহ মোট ৭টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে । এবং বিশ্বের প্রথম ভাসমান উদ্যানটি এই জাহাজেই অবস্থিত। যেখানে ১২ হাজার গাছের চারা এবং ৫৬টি গাছ রয়েছে। জাহাজের পেছনের অংশে রয়েছে ৭৫০টি আসন বিশিষ্ট থিয়েটার, যার মধ্যে রয়েছে সুইমিং পুল। মজার ব্যাপার হচ্ছে, জাহাজের এই জায়গাটি দিনে ব্যবহৃত হয় সুইমিং পুল হিসেবেই অথচ রাতে ব্যবহৃত হয় সাগরের একটি থিয়েটার হিসেবে। কেবিন বা থিয়েটার ছাড়াও জাহাজের প্রায় প্রতিটি অংশেই রয়েছে অসংখ্য বার, পোশাক ও বিভিন্ন দ্রব্যাদির দোকান আর রেস্টুরেন্ট।
এ ছাড়াও রয়েছে ভলিবল কোর্ট, বাস্কেটবল কোর্ট, চারটি বিশালাকৃতির সুইমিং পুল, জাহাজে আরো রয়েছে ইয়ুথ জোন, যেখানে আছে কম্পিউটার গেমিং ও সাইন্স ল্যাবরেটরিসহ নানা আকর্ষণীয় বিষয়, থিম পার্ক এবং বাচ্চাদের জন্য বিশেষ নার্সারি ও খেলাধূলার স্থান। আর পায়ে হেঁটে বেড়ানোর জন্য সুদৃশ্য জায়গা তো আছেই।৭১ টি দেশের প্রায় ২৪০০ জন ক্রু নিয়োজিত রয়েছেন জাহাজটি পরিচালনায়। শুধু জানালার কাচে জমা নোনা জল পরিষ্কার করার জন্য রয়েছে ডজন খানেক ক্রু এবং ১৮টি রোবট।বিলাসবহুল এই জাহাজে করে ক্যারিবিয়ান সাগরের বুকে ভেসে বেড়াতে চাইলে আপনাকে গুণতে হবে ভিতরের দিকে কেবিন ভাড়া ১৪৫৮ মার্কিন ডলার এবং দ্বিতল বিশিষ্ট সমুদ্রের দিকে মুখ করা সুইট ভাড়া ৩২০০ মার্কিন ডলার । তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে হারমনি দ্য সিসের যাত্রী হতে হলে আপনাকে ২ বছর আগে বুকিং দিতে হবে। মোট ৯ রাত, ৯ দিন উত্তর ক্যারিবিয়ান সাগরের বুকে আপনি এই জাহাজে করে ঘুরতে পারবেন।
প্রতিক্ষণ/এডি/এস. টি