‘বৃষ্টি’ পড়ে টাপুর টুপুর
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডট কম:
‘’আল্লাহ মেঘ দে পানি দে, ছায়া দেরে তুই, আল্লাহ মেঘ দে। আসমান হইলো টুটা টুটা, জমিন হইলো ফাটা, মেঘ রাজা ঘুমাইয়া রইছে মেঘ দিব তোর কেটা আল্লাহ মেঘ দে” এই গান গেয়ে-গেয়ে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা কুলা মাথায় নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে বেড়ায় এক ফুঁটা বৃষ্টির আশায়।
বৃষ্টি নামানোর জনপ্রিয় এ গানটির কথা মনে পড়লেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সবুজে মোড়ানো গ্রামের কথা।
চারদিক যখন রোদের দগ্ধতায় ওষ্ঠাগত প্রাণ, কিছুতেই যখন আর বৃষ্টি নামছে না, ঈশান কোণে কালো মেঘ জমে ধেয়ে আসছে না কালবৈশাখী, জীবনদায়ী ফসলের মাঠ যখন ফেটে চৌচির, ক্লান্ত কাক যখন গাছের ছায়ায় ঝিম মেরে বসে একটু শীতল স্পর্শ খুঁজছে, চাতক যখন পানির জন্য হাহাকার করছে, কুকুর জিহ্বা বের করে যখন কোনো বাগানের ছায়ায় খুঁজছে শান্তির পরশ, তীব্র দাবদাহে কৃষক যখন তার স্বপ্নের ফসল ফেলে বট কিংবা অশ্বত্থ গাছের নিচে বিশ্রাম নিচ্ছে।
তখন হঠাৎ মেঘের ঘনঘটা। কালো মেঘে ছেয়ে গেছে আকাশ। ঠান্ডা বাতাসে গা শিহরে উঠতে লাগলো। প্রকৃতি যেন স্তব্ধ হয়ে গেছে। দূর থেকে ভেসে আসছে বাতাসের শো শো শব্দ।এ বুঝি নামলো মুষলধারে বৃষ্টি। শান্ত শীতল গ্রামখানি তখন আরো বেশি মনোমুগ্ধকর হয়ে উঠে।
অপরদিকে শহুরে দৃশ্যটা গ্রাম থেকে অনেকটাই ভিন্ন। প্রচন্ড দাবদাহ। দিনের বেলা সূর্যের তাপ আর রাতে ভ্যাপসা গরমে হাঁসপাস করতে থাকে মানুষ। বিশেষ করে রাজধানীতে ইট-কংক্রিটের কারণে দিনের মতো রাতেও তাপমাত্রা থাকে প্রায় অপরিবর্তিত। আর প্রচন্ড গরমের পর বৃষ্টিই স্বস্তি এনে দেয় নগরজীবনে। ইট, বালু, সিমেন্টে বদ্ধ নগরীর বাসিন্দারা হাপ ছেড়ে জানালা খুলে কিছুটা শান্তির পরশ পায় ।
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর। আবার কখনো কখনো এই বৃষ্টি অঝোর ধারায় ঝরে সারাদিন।
বৈশাখের তীব্র গরম শেষে আকাশে মেঘের গুড়গুড় শব্দ জানিয়ে দেয় বর্ষার আগমনী বার্তা। বৈশাখের তাপদাহে মানুষজন, পশুপাখি, গাছপালা যখন হাপিয়ে ওঠে ঠিক তখন বৃষ্টিই সবাইকে সতেজ করে তোলে।
‘’আজিকে বাহির শুধু ক্রন্দণ ছলছল জলধারে
বেণু বনে বায়ু নাড়ে এলোকেশ, মন যেন চায় কারে’’