বের হই, স্বর্গের সন্ধানে!
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:
আরব সাগরের একেবারে কোলঘেঁষে বিমান যখন ত্রিভানদ্রম বিমানবন্দরে নামতে শুরু করে, মনে হবে বিমানটি বুঝি সাগরেই নামছে। এরপর উপকূল ঘেঁষেই শহরে ঢোকার পথ। হাতে সময় থাকলে এই পথেই দেখা নেওয়া যাবে সাংখুমুগহাস সৈকত। এখানে রয়েছে ৩৫ মিটার উঁচু মৎস্যকন্যার বিশাল ভাস্কর্য। আছে তারামাছের মতো দেখতে মজাদার রেস্তোরাঁও ইনডোর ক্লাব।
সোনালি সাগর উপকূল, সবুজাভ নীল সাগরের স্বচ্ছ জলরাশি, ঝকঝকে-তকতকে পাহাড়ি রেলস্টেশন, নারকেল বীথির সারি, সাগর থেকে আসা পানির জলধারা বা ব্যাকওয়াটার, জিভে জল আসা খাবারের সম্ভার—এই সবকিছু মিলিয়ে ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি নগরকে অনেকেই ‘পৃথিবীর স্বর্গ’ বলে থাকেন। প্রকৃতি এখানে তার সৌন্দর্য অকাতরে এমনভাবে ঢেলে দিয়েছে যে একে বলা হয়—‘গডস ওন কান্ট্রি’।
পর্যটকদের কাছে কেরালা মানেই সমুদ্র আর দীর্ঘ উপকূল। চমৎকার বালুকাময় পরিচ্ছন্ন সৈকত, নারকেলবীথির সারি এবং বড় বড় শিলাখণ্ড কেরালার সৈকতগুলোকে করে তুলেছে অপূর্ব। কোভালাম, এখানকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় সমুদ্রসৈকত। এখান থেকে বাতিঘর দেখা যায় বলে একে ‘লাইটহাউস বিচও’ বলা হয়।
থাইল্যান্ডের ফুকেটের মতো করে সৈকতের ধার ঘেঁষেই তৈরি করা হয়েছে হোটেল-মোটেল। রকমারি জিনিসের দোকান আর রেস্তোরাঁ ছড়াছড়ি। রেস্তোরাঁর অ্যাকোরিয়ামে রয়েছে তাজা সামুদ্রিক মাছ, কাঁকড়া, ঝিনুক, অক্টোপাস—যে যেভাবে খেতে চান, সেভাবেই খেতে পারেন। দূর থেকে ভেসে আসছে পর্তুগিজ গান ও নাচের শব্দ। একদিকে সাগরের উত্তাল জলে গা ভেজানো—অন্যদিকে আলো-ঝলমলে নাইট লাইফ।
কেরালার বিখ্যাত খাদি, তাঁতের শাড়ি থেকে শুরু করে ঐতিহ্যবাহী সোনার গয়না, আদিবাসী নকশায় তৈরি অলংকার, কারুপণ্য সবই কিনতে ইচ্ছে করবে। এখানকার ধাতুর তৈরি আয়নার নাকি খুব কদর পর্যটকদের কাছে।
শুধু যে সমুদ্র তীর, ছোট ছোট জলাশয় কেরালাকে ঐশ্বর্যশালী করে তুলেছে তা নয়, কেরালার আছে পাহাড়ি শহর। সেসব পাহাড়ি এলাকায় আছে গোলমরিচের বাগান, চা-কফি বাগান, গবাদি পশুর খামার, রাবার বাগান এবং অপূর্ব সব বাংলো। অনায়াসেই থেকে আসা যায় দু-একদিন। ছোট্ট পাহাড়ি স্টেশন থেকে পেয়ে যাবেন নিয়মিত ট্রেন। আর গাড়িভাড়া করে তো যেতেই পারেন।
ছোট ছোট পাহাড়ে আছে অগণিত ঝরনা। আর যারা রোমাঞ্চপ্রিয়, পাহাড়ি পথে ট্রেকিং করতে চান তাঁদের জন্যও আছে ছোট ছোট কিছু পাহাড়ি জঙ্গল। হাতে সময় থাকলে দেখে আসতে পারেন বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য।কেরালা যেতে চাইলে কলকাতা থেকে চেন্নাই হয়ে যাওয়াটা সহজ। ট্রেনে গেলে সময় লেগে যাবে দুই দিনের মতো।শীত, গ্রীষ্ম সব ঋতুতেই কেরালায় থাকে চমৎকার আবহাওয়া। তাই বেড়াতে যেতে চাইলে এখনি বের হয়ে যান স্বর্গের উদ্দেশ্য।
প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল