প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
বাঙালির জীবনে অনেক আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে পহেলা বৈশাখ। কীভাবে পহেলা বৈশাখের উৎসব উদযাপন করা হবে সে নিয়ে বাঙালি নারীর থাকে ভিন্ন ধরণের পরিকল্পনা। কোন শাড়িটা পড়া হবে, তার সাথে কোন চুড়িটা ম্যাচিং হবে এ নিয়ে তাদের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। কিন্তু এই উৎসবমুখর দিনে আনন্দের পাশাপাশি বিভিন্ন অপ্রীতিকর অবস্থারও সৃষ্টি হতে পারে। এই ধরণের অপ্রীতিকর অবস্থা প্রতিরোধ করার জন্য কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজনীয়।
বৈশাখের আবহাওয়া আন্দাজ করা যায় না। কোনো দিন প্রচন্ড গরম পড়তে পারে, আবার কোনো দিন থাকতে পারে কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডব। আবার একই দিনেই রোদ আর ঝড় দুটোরই মুখোমুখি হতে পারি আমরা। পহেলা বৈশাখের দিনে তাই পোশাক ও সাজ নির্বাচনে খুব সতর্ক থাকা উচিত, এবং আরও কিছু বিষয়ে পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।
১। বৈশাখী সাজে বাঙালি নারীর কাছে শাড়িই সবচেয়ে প্রিয়। কিন্তু পহেলা বৈশাখের দিন খুব বেশি ভারি শাড়ি পড়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। কারণ পহেলা বৈশাখের দিনটিতে রাস্তায় থাকে প্রচুর মানুষের ভীড়, থাকে তীব্র যানজট। বৈশাখের এই গরমের মৌসুমটাতে কাতান, বেনারসির মতো শাড়িগুলো পড়লে আপনি অস্বস্তি বোধ করবেন। এমনকি অসুস্থও হয়ে পড়তে পারেন।
২। আপনি নিজে যদি শাড়ি পড়তে পারেন তো খুবই ভালো কথা। আর যদি না পারেন তবে এমন কারো কাছে গিয়ে শাড়ি পড়ে নিন, যিনি ভালো শাড়ি পড়াতে পারেন। এমনভাবে পড়তে হবে যাতে তা কোনভাবেই খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা না থাকে। তাহলে আপনি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে থেকে বাঁচতে পারবেন।
৩। শাড়ির সাথে হিল পড়ারই নিয়ম। কিন্তু খুব বেশি হাই হিল এড়িয়ে চলুন। কারণ পহেলা বৈশাখে বেড়াতে বের হলে আপনাকে প্রচুর হাঁটতে হবে। অতিরিক্ত উচ্চতার হিল আপনাকে ক্লান্ত করে দেবে দ্রুত। এছাড়া হঠাৎ হোঁছট লেগে কোথাও পড়ে যাওয়ার মতো বিরূপ পরিস্থিতিরও সৃষ্টি হতে পারে।
৪। ভারি সাজসজ্জার মতো ভারি মেকআপও এড়িয়ে চলুন। অনেকে যেকোনো উৎসব-অনুষ্ঠানেই ভারী মেকআপে নিজেকে সাজিয়ে থাকেন। কিন্তু বৈশাখের ভীড় আর গরমের মধ্যে লাইট মেকআপেই আপনি স্বস্তি খুঁজে পাবেন। এছাড়া শাড়ির সঙ্গে গয়না নির্বাচনেও সতর্ক হওয়া উচিত। যদি হালকা কাজ করা শাড়ি হয় তাহলে কিছুটা ভারি গয়না পড়লেও সমস্যা নেই। কিন্তু শাড়ি গর্জিয়াস হলে অবশ্যই আপনার হালকা গয়না পড়া উচিত। তবে আবারো বলছি, এই গরমে ও বৈশাখের ভীড়ে শেষ পর্যন্ত হালকা সাজই আপনাকে স্বস্তি দেবে এবং আপনাকে এতে সুন্দরও দেখাবে।
৫। বাসা থেকে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিম বা এন্টি ট্যান লোশন লাগাতে ভুলবেন না।
৬। বাইরের খাবার খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। সব খাবার স্বাস্থ্যকর নাও হতে পারে। আনন্দের তোড়ে বড় বিপত্তি ঘটতে পারে পরের দিনগুলোতে।
৭। পহেলা বৈশাখের উৎসব উদযাপন করতে অনেক মানুষ রাস্তায় নামে। এদিন যেকোনো ধরণের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেটি হতে পারে কোথাও চোট পাওয়া থেকে শুরু করে যৌন সন্ত্রাস পর্যন্ত, যা আমরা গত বছর পহেলা বৈশাখের দিন দেখেছি। তাই সব সময় সকল পরিস্থিতির জন্য সতর্ক থাকতে হবে। ব্যাগে ফার্স্ট এইড বক্স রাখা ভালো এবং অবশ্যই যে এলাকায় বেড়াতে যাবেন সে এলাকার থানার ফোন নাম্বার সাথে রাখবেন। ভয় না পেয়ে সাহসের সাথে সমস্যা মোকাবেলা করুন। দেখবেন ভয় পাইয়ে দেওয়া ব্যক্তিই ভয়ে পালিয়ে যাবে।
৮। বাসা থেকে বের হওয়ার আগে অবশ্যই ছাতা এবং পানির বোতল সাথে নিয়ে বের হবেন। এ দুটো জিনিসের কথা ভুলে গেলে কোনোভাবেই চলবে না।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া