মাগুরায় পাসপোর্ট অফিসে ডেলিভারি বিলম্ব
বাংলাদেশ সরকারের দুটি বৃহৎ রাজস্ব খাত বিআরটিএ এবং পাসপোর্ট অফিস, এই দুটি খাতই যেন এখন রাষ্ট্রীয়ভাবে সবচেয়ে বড় অবহেলা শিকার। টাকা দিয়েও মানুষ তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না। বর্তমান সময়ে মানুষের প্রয়োজনে বিদেশে যাওয়ার চাহিদা যেমন বেড়েছে, ঠিক তেমনি বেড়েছে পাসপোর্ট এর চাহিদা।
মাগুরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ঘুরে দেখা গেল, নতুন পাসপোর্ট পেতে মানুষের অসহনীয় বিলম্বের শিকার হতে হচ্ছে। জরুরী পাসপোর্ট তিন দিনের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও গত দেড় মাস ধরে পাচ্ছে না কেউ, আবার সাধারণ পাসপোর্ট একমাসের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও চার মাসেও অনেকেই নতুন পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন না।
মাগুরা শহরের জেলা পাড়ার শিউলী বেগম, ৪ মাস আগে পাসপোর্ট ইস্যু করতে দিয়েছিলেন, ডেলিভারি তারিখ ছিল নভেম্বরের ২০ তারিখ। কিন্তু আজও তিনি পাসপোর্ট হাতে পাননি। প্রতি সপ্তাহে একদিন করে আসেন এই পাসপোর্ট অফিসে, মনে করেন হয়তো এই সপ্তাহের পাসপোর্ট হাতে পাবেন; কিন্তু তাকে প্রতিবারই ফিরে যেতে হয় আবার সামনের সপ্তাহে আসতে হবে বলে।
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার মশিউর রহমান ওমরা হজ্জে যাবেন, জরুরী পাসপোর্ট করতে দিয়েছিলেন ৬৯০০ টাকা খরচ করে, টাকাটি সরকারি রাজস্ব খাতে জমা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু পাসপোর্টটি দেড় মাস পার হয়ে গেলেও মশিউরের হাতে এখনও জমা হয়নি। মশিউর রহমান আক্ষেপ করে বলেন, ‘জরুরী প্রয়োজনে মানুষ জরুরী ভিত্তিতে অধিক টাকা দিয়ে পাসপোর্ট করতে দেয়। সেক্ষেত্রে যদি বিলম্ব হয় তাহলে এই অধিক অর্থ দেওয়ার অর্থ কি?
পাসপোর্ট অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মাগুরা থেকে ইস্যুকৃত ৩০০০ পাসপোর্ট এখনো মুদ্রণের জন্য ঢাকার কেন্দ্রীয় অফিসে আটকা পড়ে আছে। কারিগরি ত্রুটির কারণে কর্তৃপক্ষ সময়মতো এগুলো ডেলিভারি দিতে পারছে না। প্রতি সপ্তাহে এখন মাত্র একশ থেকে দেড়শ কপি পাসপোর্ট প্রিন্ট করে মাগুরায় পাঠানো হয়।
পাসপোর্টে সার্বিক বিষয় সম্বন্ধে জেলার পাসপোর্ট সহকারি-পরিচালক আইরিন পারভীন এর সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান “শুধু মাগুরা নয় সারাদেশেই একই অবস্থা। জরুরী পাসপোর্ট এর অতিরিক্ত টাকা এটা সরাসরি সরকারের রাজস্ব খাতে জমা হয়ে যায়, তাই অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেয়ার কোনো বিধান নেই”।
যদিও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ এই পরিস্থিতিতে জরুরী পাসপোর্ট এর জন্য অধিক টাকা নেওয়া একটি রাষ্ট্রীয় প্রতারণা।
প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ