মাগুরার আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা শাখা ব্যবস্থাপকের বদলি
মাগুরা আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের উদ্যোগে শাখা ব্যবস্থাপকের বিদায় অনুষ্ঠান এবং নুতন শাখা ব্যবস্থাপকের বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নতুন শাখা ব্যবস্থাপক মোঃআবুল হাসানের সভাপতিত্বে এবং আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংকের সেকেন্ড অফিসার মোঃ নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর মোঃ সাকিব হাসান তুহিন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাক ব্যাংক মাগুরা শাখার ব্যবস্থাপক মোঃ আব্দুর রহিম।উক্ত অনুষ্ঠানে আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংকের সম্মানীত গ্রাহকসহ ব্যাংকের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
একজন ব্যতিক্রমধর্মী ব্যাংকার, ভাল চিন্তা চেতনার একজন মানুষ মোঃ শরিফুল ইসলাম আল- আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক, মাগুরা শাখা থেকে বেনাপোল শাখায় বদলি হয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘জেলা পর্যায়ে যারা ব্যাংকিং দায়িত্ব পালন করেন, তারা বিদায় নিবেন। এটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু মোঃ শরিফুল ইসলাম প্রমোশন বা তিন বছর পূরণ হবার কারণে হলে কোন কথা ছিল না। ব্যাংকিং পেশায় থাকা একজন ভাল মানুষের জন্য মাগুরা জেলার প্রায় সকল শ্রেণীর মানুষ ব্যথিত’।
মাগুরায় তিনি আল-আরাফাহ ব্যাংকে ২ বছর ৮ মাস মতো কাজ করেছেন। ম্যানেজমেন্ট এর ডিসিশনে তিনি বদলী হয়ে বেনাপোল যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি রেখে যাচ্ছেন তার গুণমুগ্ধ অসংখ্য গ্রাহক, কিছু অনুসরণীয় কীর্তি।
উল্লেখ্য, মাগুরা জেলায় বিভিন্ন ব্যাংকে যতো জন ম্যানেজার দায়িত্ব পালন করেছেন, মোঃ শরিফুল ইসলাম তাদের মধ্যে অন্যতম সফল। মাগুরায় তার কারনে ব্যাংকিং সার্ভিসে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে । কোন অনিয়ম দেখলেই তীব্র প্রতিবাদ করেছেন তিনি। যেমন-রেজিষ্ট্রি ফিস অতিরিক্ত নেয়া।
বিদায়ী অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা বলেন, অত্যন্ত আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী শরিফুল ইসলাম ছিলেন যেমন বিনয়ী তেমন আন্তরিক। কাস্টমারের সমস্যা সমাধানে তার ধৈর্য ছিলো অপরিসীম।প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাসহ অন্যান্য সরকারি অফিস, ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, হাসপাতাল, স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা কর্মকর্তাদের সাথে তার অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিলো।
সাহসী, দক্ষ এবং নির্ভীক মানুষটিকে মাগুরার মানুষ দীর্ঘদিন মনে রাখবে বলে জানান স্থানীয়রা্
ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, আল-আরাফাহ মাগুরা শাখাকে ভাল পর্যায়ে উন্নীত করতে কতো কষ্টই না করেছেন। তাকে দেখেছি জন্মদিনের উপহার সামগ্রী নিয়ে গ্রাহকের বাসায়, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে ফুল নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে, নববর্ষের উপহার সামগ্রী নিয়ে বড় বড় গ্রাহকের বাসায় হাজির হতে, বিভিন্ন সংগঠনের অনুষ্ঠানে থাকতে।
প্রশাসন, বিভিন্ন সংস্থা, সবার সাথে সুসম্পর্ক তিনি বিশেষ মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন যা হয়তো কারো কারো জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। তিনি প্রশাসনের প্রতিটি কর্মকর্তার প্রিয়ভাজন মানুষ ছিলেন।
একজন ব্যাংক কর্মকর্তা কিভাবে একটি জেলার বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক সমাজের , উন্নয়নে কিভাবে ভূমিকা রাখতে পারেন, সেটি সামাজিক গবেষণার একটি বিষয় হতে পারে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে মোঃ শরিফুল ইসলামের জীবন যাপন ও ব্যাংকিং দায়িত্ব পালনের রীতি-নীতি অনুসরণীয় হতে পারে। তার সাথে কথা বলে গ্রাহক স্বস্তি বোধ করতেন।
তার সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হলো, তিনি গ্রাহকেের কাছে নিজেকে আস্থার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।হাজারো হৃদয় সাথে করে তিনি মাগুরা থেকে চলে গেলেও- এটি চলে যাওয়া নয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, তিনি তার সহকর্মীদের জন্য রেখে যাচ্ছেন দেশপ্রেম, সাহস, দক্ষতা আর সততার অনুকরণীয় এক দৃষ্টান্ত।
প্রতিক্ষণের সাংবাদিক ইউনুস আলী বলেন, তাঁর জন্য অনেক শুভকামনা। তাঁর মতো একজন ভালো আর নিরহংকার মানুষকে সম্মাননা দিতে পেরে মাগুরার কাস্টমারেরা সম্মানিত বোধ করছে। মাগুরার মানুুষ উনার ভাল সার্ভিস মিস করবে।
প্রতি /এডি/ রন