মাথাব্যথা দূর করার কার্যকরী উপায়
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
স্ট্রেসে ভোগার কারণে সাধারণত মাথাব্যথা দেখা দেয়। অনেকের মাথাব্যথা হলে দেখা যায় সহজে ভালো হয় না। অনেকে আবার ঔষধ খেতে চান না। আজ তাহলে জেনে নিই মাথাব্যথা নিয়ন্ত্রণের সহজ ও নিরাপদ কিছু উপায়ঃ
১। কাঠবাদাম খাওয়াঃ সবচেয়ে সহজ ও সুবিধাজনক প্রতিকার হচ্ছে কাঠবাদাম। কাঠবাদাম বা আমন্ড এ সেলিসিন থাকে যা ব্যথা উপশমে কাজ করে। যখনই মাথাব্যথা শুরু হবে একমুঠো আমন্ড খান। কাঠ বাদাম স্বাস্থ্যকর এবং অন্য ঔষধের চেয়ে নিরাপদ।
২। গরম পানিতে পা ভিজানোঃ এটা কিছুটা অদ্ভুত মনে হবে, তবে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, কিছু সময়ের জন্য গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখলে মাথাব্যথা দূর হয়। এতে পায়ের পাতার রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং মাথার রক্ত নালিকাগুলোর চাপ কমে। পানির মধ্যে সামান্য সরিষার গুঁড়া মিশিয়ে নিতে পারেন।
৩। উষ্ণ চাপঃ একটি হট ওয়াটার ব্যাগে গরম পানি ভরে আপনার কপালে ও ঘাড়ে লাগান। এর ফলে ঐ স্থানের পেশীগুলো রিলেক্স হবে এবং মাথাব্যথা কমবে।
৪। আদাঃ মাথাব্যথা কমাতে আদা চা খেতে পারেন অথবা এক টুকরা আদা চিবিয়ে খেতে পারেন। এটি সহজ একটি প্রতিকার এবং ভালোই কাজ করে।
৫। কফিঃ এক কাপ কড়া কফি মাথাব্যথা কমাতে অনেক কার্যকরী। এটা রক্তনালীর ফুলে যাওয়া কমায়। তবে যারা ইতোমধ্যেই কফিতে আসক্ত তাদের জন্য এটি কার্যকর হবে না।
৬। এসেনশিয়াল অয়েল ম্যাসাজঃ মেন্থল বা ল্যাভেন্ডার তেল মাথাব্যথা কমাতে ভালো কাজ করে। এই তেল কপালে মালিশ করলে কয়েক মিনিটের মধ্যে ব্যথা দূর হবে। মেন্থল টি ব্যাগ ভিজিয়ে কপালে ও চোখের উপর রাখুন। এতে কিছুক্ষণ পর মাথাব্যথা দূর হয়ে যাবে।
৭। ঠান্ডা পানির সেঁকঃ আইস ব্যাগে ঠাণ্ডা পানিতে পূর্ণ করে কপালে ও ঘাড়ে লাগালে মাসেলের চাপ কমে মাথাব্যথা কমে যায়। এক্ষেত্রে একটি তোয়ালে ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে কপালে ও ঘাড়ে লাগাতে পারেন।
৮। ম্যাসাজ করুনঃ হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তর্জনী দিয়ে কপালে বৃত্তাকার ভাবে ম্যাসাজ করুন। কয়েক মিনিট একাধারে করার পর বিরতি দিন তারপর আবার করুন যতক্ষণ ব্যথা থাকে।
আকুপ্রেসার এক্সপার্টরা একে ফ্ল্যাশি এরিয়া ট্রিগার পয়েন্ট LIG4 বলেন। মস্তিস্কের যেখানে মাথাব্যথা উৎপন্ন হয় তার সাথে এই স্থানটির সংযুক্তি আছে। তাই কপালে এভাবে ম্যাসাজ করলে মাথা ব্যথা দূর হয়।
৯। চাপ প্রয়োগঃ একটি কাপড় দিয়ে মাথা শক্ত করে বাঁধুন। এতে মাথার তালুর রক্ত চলাচল কমবে। কারণ, রক্তনালীর প্রসারণের কারণে মাথাব্যথার উৎপত্তি। কাপড়টি ভিনেগারে ভিজিয়ে নিতে পারেন এটি চিরাচরিত মাথাব্যথার প্রতিকার হিসেবে বহুকাল যাবৎ ব্যবহার হয়ে আসছে।
কিছু টিপস:
- একবারে পেট ভরে না খেয়ে কিছুক্ষণ পর পর খান। সম্ভব হলে ২ ঘন্টা পর পর খান। এতে রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং মাথা ব্যথা প্রতিরোধ করবে।
- মাথা ব্যথা ও টেনশন কমানোর জন্য ঘুমানো সবচেয়ে ভালো প্রতিকার।
- দিনের বেলায় ৩০-৪০ মিনিট ঘুমিয়ে নিলেও মাথা ব্যথা দূর করতে চমৎকার কাজ করবে।
- অনেক সময় পানিশূন্যতার জন্যও মাথা ব্যথা হতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
- একাধারে অনেকক্ষণ বসে কাজ করলে মাংস পেশী শক্ত হয়ে যায়। ফলে রক্তনালীর উপর চাপ পরে। তাই এক অবস্থায় অনেকক্ষণ বসে না থেকে কিছুক্ষণ পর পর উঠে হাঁটাহাঁটি করুন।
- সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন ৩০ মিনিটের জন্য হাঁটা, সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটার মত সাধারণ ব্যায়ামগুলো করুন।
- কিছু খাবার মাথাব্যথার কারণ হতে পারে যেমন-দুগ্ধ জাতীয় খাদ্য, চকলেট, পিনাট বাটার, অ্যাভোকডো, কলা, সাইট্রাস ফল, পেঁয়াজ, নাইট্রেট মিশানো মাংস- হট ডগ, মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট সমৃদ্ধ খাদ্য ইত্যাদি খাবার খেলে আপনার কোন সমস্যা হয় কিনা খেয়াল করুন।
প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি