মান্নার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীকে উসকে দেয়ার অভিযোগ

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫ সময়ঃ ৯:০০ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডট কম 

mann-380x249সশস্ত্র বাহিনীকে বিদ্রোহে উসকানি দেয়ার অভিযোগ এনে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ডিসি (উত্তর) শেখ নাজমুল আলম জানান, দণ্ডবিধি আইনের ১৩১ ধারায় মান্নাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রাতেই তাকে ডিবিতে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।

গুলশান থানার এসআই সোহেল রানা বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন। এতে অজ্ঞাত আরো একজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৩২।

উল্লেখ্য, দণ্ডবিধি আইনের ১৩১ ধারায় বর্ণিত অধরাধের প্রকৃতি হলো- রাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর (সেনা/নৌ/বিমান) সদস্যদের তাদের এখতিয়ার বহির্ভুত কর্মকাণ্ডে (বিদ্রোহ/অভ্যুত্থান/নিয়মিত কর্মকাণ্ডের বাইরে) অংশগ্রহে প্ররোচিত করা।

এ আইনের মামলা জামিন অযোগ্য এবং এর সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।

মান্নার সঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা ও অজ্ঞাত এক ব্যক্তির টেলিফোন আলাপের অডিও ক্লিপ রোববার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। সেখানে দেশের চলমান অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির উত্তরণে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে সহযোগিতা করতে চান বলেও উল্লেখ্য করা হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে। এ সংবাদ প্রকাশের পর মান্না আটক হবেন এমন একটা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।

নিজের ফেসবুক পাতায় মান্না ফোনালাপের বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে এতে উসকানিমূলক কিছু ছিল না বলে দাবি করেন তিনি। ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘সামগ্রিক ঘটনায় আমি বিস্মিত, দুঃখিত, মর্মাহত। এ পর্যন্ত আমার রাজনীতি জীবনে কখনও সহিংসতা, ষড়যন্ত্রকে প্রশ্রয় দেই নি। আমার অতীত ইতিহাস সাক্ষ্য দেবে। যে দুটো সাক্ষাৎকার ছেপেছে পাঠকদের অনুরোধ করবো যেন ভালো করে সেটা শোনা এবং পড়ে দেখার। কোথাও কোনো ষড়যন্ত্রের গন্ধ নেই, উস্কানি নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার এই বক্তব্যকে বিকৃতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যেন আমি লাশ চাই। একইভাবে সেনাবাহিনীর কোনো কোনো কর্মকর্তা আমার সাথে কথা বলতে আগ্রহী হলে বলব কি না সে কথা জানতে চাইলে, আমি বলেছি রাজি আছি। আমি রাজনীতি করি সবার সঙ্গে কথা বলতে হয়। এটা থেকে এক এগারো বা সামরিক কু’য়ের ষড়যন্ত্রের আবিষ্কার হয় কিভাবে? যেখানে এরকম কোনো বৈঠকই হয়নি।’

এ অবস্থায় গতকাল সোমবারই মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতারা।

আবার সোমবারই শান্তি ও সংলাপের দাবিতে ঢাকায় গণমিছিলের কর্মসূচি ছিল নাগরিক ঐক্যের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে কর্মসূচি বাতিল করা হয়। এ পরিস্থিতিতে মাহমুদুর রহমান মান্না আজ মঙ্গলবারই এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন।

এ পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার রাত ৩টার দিকে বনানীতে ভাতিজির বাসা থেকে মান্নাকে আটক করা হয়। তবে মান্নার আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ব্যাপারে কিছুই জানে বলে তারা জানায়। সে কারণে পরিবারের পক্ষ থেকে বনানী থানায় একটি জিডিও করা হয়। যেখানে মান্নাকে নিখোঁজ দেখানো হয়।

আটকে ২১ ঘণ্টা পর মান্নাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলো। এ বিষয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে (মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টা) মান্নাকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’

প্রতিক্ষণ/এডি/রাসেল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G