যা ঘটতে পারে ভ্যাট বিরোধীদের সাথে!
এর আগেও নাকি একবার কোন ইস্যুতে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন করেছিল। প্রায় ২ বছর আগে বাঙলাদেশের এক পত্রিকার সম্পাদকের সাথে ফোনে কথা বলার সময় তিনি বলছিলেন, কিভাবে সেই আন্দোলনকে দমন করা হয়েছিল। গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ছাত্রদের লিষ্ট করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশন জট না থাকাতে ওখানকার ছাত্রছাত্রীরা যারা নেতৃত্বে ছিল তারা বলতে গেলে কিশোর পেড়িয়ে সবে তরুণ হয়েছে। তাদেরকে র্যাব অফিসে নিয়ে গিয়ে ক্রসফায়ারে নিহতদের ছবি দেখিয়ে বলা হোত, সরকারের সঙ্গে আঁতাত না করলে কাকে কিভাবে মারা হবে। এবং নির্মম কায়দায় তাদেরকে ক্রস ফায়ারের বীভৎস ঘটনা শুনানো হোত। গোয়েন্দা বাহিনী আরেকটা ন্যাক্করজনক কাজ করেছিল। অনেকেরই অভিভাবক ছিলেন ব্যবসায়ী কিম্বা শিল্পপতি কিম্বা সরকারী উচ্চ চাকুরীজীবী। গোয়েন্দা সংস্থা নেতৃত্বে থাকা ছাত্রঅভিভাবকদের অর্থনৈতিক দুর্নিতি এবং অন্যান্য অনিয়মের রিপোর্ট জোগাড় করে বাপ ছেলেকে মুখোমুখী করে তা পড়ে শোনায়। এরপরে অভিভাবকদের বলা হয়, আপনাদের ছেলেরা কি আন্দোলন করবে নাকি সরকারের কথা শুনে আপনাদের বাঁচাবে।
ঈদের বন্ধ খুব তাড়াতাড়ি হচ্ছে। এমনিতেই আন্দোলনে একটা দীর্ঘ বিরতি পড়বে। এই বন্ধকে পুঁজি করে সরকার নানা রকম প্রচেষ্টা চালাতে পারে। উপরের ঘটনার মতো বেছে বেছে নেতাদের গ্রেফতার করে একই ট্রিটমেন্ট দিতে পারে। কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে আর্থিক অনিয়মের কথা শুনা যায়। না থাকলেও বানাতে কতোক্ষণ। এভাবে তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সরকারের সাথে থাকতে বাধ্য করবে।
আবার ভিন্নটাও হতে পারে। শেখ হাসিনা তো চমক দেখাতে পছন্দ করেন। ছাত্রদের ভাল করে আটার মতো গুলিয়ে আবার সুন্দর করে রুটি বানিয়ে ভেজে দেবেন। অর্থাৎ আন্দোলন নিয়ে কিছুদিন হই হট্টগোল চলবে। কিছু ছাত্রের নামে মামলা হবে। এরপর রাজনৈতিক ভাঁওতাবাজীর কায়দায় একদিন তাদের দাবী মেনে নিয়ে সবার মধ্যমণি হবেন। ওদিকে মামলা খাওয়া ছাত্ররা আদালতের বারান্দায় দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে ক্লান্ত হয়ে পড়বে। বাকীরা দেখবে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিলে ফলাফল কি হয়। ভবিষ্যতে তারা ওদিকে পা বাড়াবে না। সরকার এভাবে এক ঢিলে কয়েক পাখি মারতে পারেন।
লেখক
মাহবুব মিঠু
ই মেইল- [email protected]
এই লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজের। এখানে প্রতিক্ষণ ডট কমের কোন নিজস্ব বক্তব্য নেই