যুবলীগের সম্মেলন: সাধারণ সম্পাদক পদে এগিয়ে আছে শাহীন
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সপ্তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২৩ নভেম্বর। এ সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত হবে আওয়ামী যুবলীগের নতুন কমিটি। সম্মেলনে কে হবেন সাধারণ সম্পাদক? এ নিয়ে চলছে নানান আলোচনা।
সাধারণ সম্পাদক পদে যারা আলোচনায় আছেন তারা হল: বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনজুর আলম শাহীন, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, সুব্রত পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক বদিউল আলম বদি, ফারুক হাসান তুহিন, অর্থ সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হালদার।
দুর্নীতিমুক্ত, সাংগঠনিক দক্ষতা, সাবর্জনীন গ্রহণযোগ্যতা কার বেশি এসব বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণমূলক জরিপের ফলাফলে সাধারণ সম্পাদক পদে মনজুর আলম শাহীন এগিয়ে আছেন। তৃণমূল পর্যায়ে রয়েছে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা। রয়েছে সাংগঠনিক দক্ষতা। বঙ্গবন্ধুর আর্দশ থেকে দুরে সরে যাননি। মনজুর আলম শাহীন রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক তথ্যাদি পাঠকদের নিকট উপস্থাপন করা হলো।
মনজুর আলম শাহীন: বর্তমান যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে তিনিই সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। ফেনী সদরের মাস্টার পড়ায় এক আওয়ামী লীগ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মনজুর আলম শাহীন।তার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ফেনী পাইলট হাই স্কুলে অধ্যায়নকালীন যুক্ত হন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে। পালন করেন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব। এসএসসি পাশ করে ভর্তি হন ফেনী কলেজে। কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দেন শাহীন। ১৯৮৬ সালে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতার হন এবং দীর্ঘদিন কারা ভোগ করেন।
ব্যানিজ্য বিভাগের মেধাবী ছাত্র মনজুর আলম শাহীন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান (অর্নাস)এ ভর্তি হন। শুরু থেকে ইসলামী ছাত্র শিবিরে রোষানলে পড়েন। নানা ভাবে নির্যাতিত হন। তবু বঙ্গবন্ধুর আর্দশ থেকে চ্যূত হননি। ১৯৮৬ সালে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতার হন এবং দীর্ঘদিন কারা ভোগ করেন।
১৯৯০ সালে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে হারাতে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য গঠিত হয়েছিল তার অন্যতম রূপকার ছিলেন শাহীন।ছাত্রঐক্য চাকসু এবং এফ.রহমান হল ছাড়া সব হলে জয় লাভ করে।পতন হয় ছাত্রশিবের দূর্গের।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত করেন। তারই ধারাবাহিকতায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের (মাইনু-ইকবাল) কমিটির সহসভাপতি হন। দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এবং কেন্দ্রীয় যুবলীগের (নানক-আজম) কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে। মনজুর আলম শাহীন বর্তমানে যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক। যুবলীগের অন্যদের মতো কেসিনো ব্যবসা, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, সচিবালয়ে তদবির এর সঙ্গে নিজেকে দূরে রেখেছেন। গন্ডালিকায় গা ভাসাতে না পেরে, নীতি আর্দশের সঙ্গে আপোষ না করতে অনেকটা অভিমান করে বেশ কিছু সময় বিদেশে অবস্থান করেন।পরিস্থিতি পাল্টে গেলে শাহীন আবারো রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। সাড়াও পাচ্ছেন।
তার বড় ভাই শাহ আলম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। তার স্ত্রী শামীমা আক্তার ফেন্সি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
যুবলীগকে নেতিবাচক ধারা থেকে বের করে ইতিবাচক ব্র্যান্ডে যুক্ত করতে চান আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুবলীগকে ঢেলে সাজাতে এবার বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সে কারণে শুদ্ধি অভিযানের পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত তরুণ বিশ্বস্ত, প্রতিশ্রুতিশীল ও মেধাবী নতুন নেতৃত্বের খোঁজ করছেন তিনি।
দলের সবার দৃষ্টি এখন যুবলীগের সম্মেলনের দিকে। যারা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নেই এমন সাধারণ মানুষের কৌতূহলেরও শেষ নেই। কেমন তারুণ্য নির্ভর হবে যুবলীগ? সংগঠনটির নেতৃত্বে কারা আসছেন? সেটি দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী ২৩ নভেম্বর বিকাল পর্যন্ত।