যে কোনো সময় গ্রেফতার খালেদা !
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:
যে কোন সময় গ্রেফতার হতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এমনটাই গুঞ্জন চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে চায়ের স্টলেও।
ইতোমধ্যে তাকে গ্রেফতার সংক্রান্ত আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা গুলশান থানায় পৌঁছেছে।
রাজধানীর বকশীবাজার এলাকায় আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অবস্থিত ঢাকার বিশেষ আদালত জজ-৩ এর বিচারক আবু আহমেদ জমাদ্দার বুধবার সকালে খালেদা জিয়ার আইনজীবীর সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি রাখার জন্য সময়ের আবেদন নাকচ করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
এরপর দ্রুত আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কপি গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট ও রমনা থানায় পাঠানো হয়।
বেলা ৩ টায় গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত তারা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত গ্রেফতারি পরোয়ানা হাতে পাওয়া যায়নি। পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে বুধবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার বকশিবাজার এলাকায় আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার।
এদিন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের ধার্য তারিখ ছিল। কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে খালেদা জিয়া আদালতে না যাননি। তার পক্ষে সময়ের আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের শুনানি শেষে বিচারক সময়ের আবেদন নাকচ করে খালেদা জিয়াসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি জারি করেন। অপর দুই আসামি হলেন মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।
এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর সর্বশেষ আদালতে হাজির হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ওইদিন তার আদালতে যাওয়াকে ঘিরে রাস্তায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর পর মামলার বেশ কয়েকটি তারিখ নির্ধারণ হলেও খালেদা জিয়া নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে অাদালতে যাননি। প্রতিটি তারিখেই তার পক্ষে সময়ের আবেদন করা হয়।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় গত ১৯ মার্চ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ অভিযোগ গঠন করেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুদক।
২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
ওই দুই মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু আহমেদ জমাদার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়া বর্তমানে গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। বেশ কিছুদিন যাবত তার সাথে কাউকে সাক্ষাত করতে দিচ্ছে না পুলিশ। খাবার বন্ধসহ গেটে একটি রেজিষ্টার খাতা চালু করে খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাতের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। একই সাথে দু সপ্তাহ যাবত ইন্টারনেট, ডিশ লাইন বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে গুলশান কার্যালয়।
প্রতিক্ষণ /এডি/ আরিফ