রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে ভারতীয় গরু

প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫ সময়ঃ ১:৫৪ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:৪৬ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

goruরাজশাহী অঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে বিপুল পরিমাণে ভারতীয় গরু আসছে। চারদিনে আট হাজারের গরু ভারতীয় সীমান্ত পেরিয়ে এসেছে।

রাজশাহী অঞ্চলের গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের হাকিমপুর, বাখের আলী, বগচর, শিবগঞ্জ এবং ভোলাহাট সীমান্ত দিয়ে দুই মাস ধরে গরু আসা শুরু হয়েছে। গত ১ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুলতানগঞ্জ শুল্ক করিডোরে ১৫ হাজার ১৭২টি গরুর রাজস্ব ছাড়পত্র নিয়েছেন গরু ব্যবসায়ীরা। এ পরিমাণ গরু থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ৭৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। তবে সরকারি কাগজপত্রে ১৫ হাজার ১৭২টি গরু দেশে প্রবেশের হিসেবে দেখানো হলেও, বাস্তবে এসেছে এর চেয়ে অনেক বেশি।

সীমান্ত এলাকার গরু ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানায়, গত ২২ দিনে দেশে গরু প্রবেশ করেছে আনুমানিক ৪০ হাজার। এক্ষেত্রে অন্তত ২৫ হাজার গরুর রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে সরকার রাজস্ব হারিয়েছে কমপক্ষে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গোদাগাড়ী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের সীমান্ত এলাকা দিয়ে যেসব গরু দেশে প্রবেশ করবে, সেগুলোর রাজস্ব ছাড়পত্র করতে হবে সুলতানগঞ্জ শুল্ক করিডোর থেকে। সীমান্ত দিয়ে গরু প্রবেশের পর সুলতানগঞ্জ করিডোরের বিটে গরু রাখার নিয়ম। এরপর গরুপ্রতি সরকার রাজস্ব পাবে ৫শ টাকা। করিডোরের শুল্ক কার্যালয় থেকে টাকা জমা দিয়ে রাজস্বের ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে হয়।

কিন্তু মঙ্গলবার সুলতানগঞ্জ শুল্ক করিডোরে গিয়ে দেখা গেছে, বিটগুলোতে কোনো গরু নেই। করিডোর ফাঁকা। অথচ ৬৩৩টি গরুর ছাড়পত্র সংগহ করেছেন ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, শুল্ক কর্মকর্তার সহযোগিতায় গরু ব্যবসায়ীরা সুলতানগঞ্জ করিডোরে গরু আনছেন না।

অভিযোগ উঠেছে, সুলতানগঞ্জ করিডোরের শুল্ক কর্মকর্তা (উপপরিদর্শক) শামসুল আলম স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে সীমান্ত  এলাকায় রাজস্ব ছাড়পত্রের কাগজ পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এর ফলে গরু ব্যবসায়ীরা রাজস্ব ফাঁকির সুযোগ নিচ্ছেন। যে পরিমাণ গরু দেশে প্রবেশ করছে, তার বিপরীতে অল্পসংখ্যক গরুর ছাড়পত্র সংগ্রহ করছেন ব্যবসায়ীরা। এর ফলে লঙ্ঘিত হচ্ছে সরকারি রাজস্ব নিয়ম। সরকার বঞ্চিত হচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব থেকে।

এদিকে ব্যবসায়ীদের সুলতানগঞ্জ করিডোরে গরু না আনার সুবিধা দিয়ে শুল্ক কর্মকর্তার নামে  গরুপ্রতি স্থানীয় দালালরা আদায় করছেন ৩০ টাকা। গত ২২ দিনে ১৫ হাজার ১৭২টি গরুর বিপরীতে অতিরিক্ত আদায় করা হয়েছে ৪ লাখ ৫৫ হাজার ১৬০ টাকা। এ টাকা শুল্ক কর্মকর্তা এবং দালালরা ভাগ করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন শুল্ক কর্মকর্তা শামসুল আলম। তিনি বলেন, জনবল সংকট রয়েছে। এ কারণে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী এ করিডোরে একজন সুপারিয়েনডেন্ট, তিনজন ইন্সপেক্টর, একজন সাব ইন্সপেক্টর এবং পাঁচজন কনস্টেবল থাকার কথা। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য বিজিবি ও পুলিশ সদস্যদের থাকার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এখানে একজন সাব ইন্সপেক্টর রয়েছেন। এর ফলে কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

প্রতিক্ষণ/এডি/এনজে

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G