রিবন্ডিং চুলের যত্মআত্তি
রিবন্ডিং আপনার চুলকে দান করে এক অনন্য সৌন্দর্য। তবে আপনি যদি নিয়মিত রিবন্ডিং চুলের যত্ন না নিতে পারেন অকালেই হারিয়ে ফেলবেন আপনার এই সুন্দর চুল। তাই রিবন্ডিং করার পর অবশ্যই চুলের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হবার চেষ্টা করবেন।
চুল রিবন্ডিং এর প্রতি আমাদের সবার আলাদা একটি আকর্ষণ থাকে। বর্তমানে রিবন্ডিং করা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। সোজা, সিল্কি চুল পেতে সবাই ভালবাসে। আর তাই হাজার হাজার টাকা ব্যয় করে আমরা করছি চুল রিবন্ডিং। কিন্তু আমরা অনেকেই চুল রিবন্ডিং এর সাইড এফেক্ট সম্পর্কে জানি না। আসুন জেনে নিই চুল রিবন্ডিং এর সাইড এফেক্ট।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসমূহঃ –
চুলের গোঁড়া নরম হয়ে পড়ে। রিবন্ডিং এর প্রথম এক মাস পর্যন্ত আপনি চুল বাঁধতে পারবেন না। এমনকি চুল কানের পেছনেও রাখতে পারবেন না। যদি চুল বাঁধেন এতে চুলের ক্ষতি হতে পারে।
– চুলে দেয়া হিট আপনার মাথার ত্বকের যথেষ্ট ক্ষতি করতে পারে। অনেক সময় ত্বক পুড়েও যেতে পারে।
– যদি কেমিকেলের পরিমাণ বেশি হয়ে যায় এবং তা দীর্ঘক্ষণ থাকে চুলে তবে চুলের ক্ষতি হয়ে থাকে। এতে চুল পড়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক। চুল দুর্বল হয়ে পড়ে।
– আপনি যদি ভালো পার্লার থেকে চুল রিবন্ডিং না করান তাতেও আপনার ঝুঁকি থাকতে পারে। কারণ ভালো মানের পার্লার না হলে তাদের প্রোডাক্ট সম্পর্কে যথেষ্ট সন্দেহ থাকে।
– চুল রিবন্ডিং এর পর নিয়মিত যত্ন না নেয়া হলে চুল ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আস্তে আস্তে সব চুল পড়ে যেতে থাকে।
ট্রিটমেন্টঃ
রিবন্ডিং এর সাইড এফেক্ট শুনে ভয় পাবার কারণ নেই। নিয়মিত যত্ন নিলে আপনার রিবন্ডিং চুল করে তুলতে পারেন আরও সুন্দর ও সুস্থ। আগের চেয়ে অনেক বেশি যত্ন নিতে হয় রিবন্ডিং চুলের।
পার্লারে পরামর্শ নিলে ভালো। আপনার হেয়ার স্টাইলিস্ট যতদিন না আপনাকে চুল বাঁধার অনুমতি দেয় ততদিন চুল না বাঁধাই ভালো।
বাসায় অথবা পার্লারে গিয়ে মাঝে মাঝে ট্রিটমেন্ট করিয়ে নিতে পারেন মাসে একবার। তাহলেই দেখবেন আপনার চুল থাকবে সুস্থ ও সুন্দর।
আপনাদের সুবিধার্থে কিছু টিপস দেয়া হলোঃ
– গরম পানি দিয়ে কখনো চুল ধুবেন না। এমনকি কুসুম গরম পানিও ব্যবহার করবেন না চুল ধোয়ার জন্য। সব সময় ঠাণ্ডা পানি দিয়ে আপনার চুল ধুতে হবে রিবন্ডিং এর পর এবং নিয়মিত শ্যাম্পু করবেন। এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন যেটা স্ট্রেইট চুলের জন্যই প্রযোজ্য।
– রিবন্ডিং চুলের জন্য কন্ডিশনার খুব দরকারী। এটি আপনার চুল আরো মসৃণ ও সিল্কি করে তুলবে। যেহেতু রিবন্ডিং করার পর চুল অনেক সেন্সিটিভ হয়ে পড়ে তাই শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার অবশ্যই ভালো মানের ব্যবহার করবেন। মার্কেটে অথবা সুপার শপে অনেক ভালো মান ও ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার পাওয়া যায়।
– মোটা দাঁতের চিরুণী ব্যবহার করুন। অবশ্যই ব্রাশ ব্যবহার করবেন না রিবন্ডিং চুলে। এতে আপনার চুল ছিড়ে যেতে পারে।
– আমরা অনেকেই চুল শুকানোর জন্য হেয়ার ড্রাইয়ার ব্যবহার করি। এটা একদমই করা যাবেনা। প্রাকৃতিক ভাবে চুল শুকাতে দিন। হেয়ার ড্রাইয়ারের তাপ আপনার চুলের ক্ষতি করতে পারে।
– খাবারের দিকেও যথেষ্ট লক্ষ্য রাখুন। ব্যালেন্সড ডায়েট আপনার চুল্ করে তুলবে স্বাস্থ্যজ্জ্বল। ফল ও সবজি বেশি করে খাবেন। প্রোটিন যুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে খাবেন কারণ প্রোটিন চুলের জন্য খুব উপকারী। জাঙ্ক ফুড না খাবার চেষ্টা করবেন
। – সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, চুল রিবণ্ডিং এর পর আপনার চুলে কোন স্টাইলের পরিবর্তন আনবেন না। অনেকে চুল রিবন্ডিং করার পর চুল কালার করে। সেটা একদমই করবেন না। এটা আপনার চুল একদম দুর্বল করে দিবে।
প্যাকঃ
০১. ভিনেগার এবং মধু এক কাপ গরম পানির মধ্যে সম পরিমাণে মিশিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। এরপর চুলে লাগান এই পেস্টটি। কিছুক্ষন রেখে ধুয়ে ফেলুন। শ্যাম্পু করে ফেলবেন ধোয়ার পরে।
০২. মুলতানি মাটি, ৫ টেবিল চামচ ময়দা, ১ টি ডিমের সাদা অংশ একসাথে পেস্ট করে চুলে লাগিয়ে রাখুন ৪০ মিনিট। তারপর শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। পেস্টটির সাথে অল্প পানি মিশাতে পারেন। এই পেস্ট যেদিন লাগাবেন তার আগের রাতে অয়েল ম্যাসাজ করে রাখবেন। প্যাক লাগানোর পূর্বে আপনার চুল মোটা দাঁতের চিরুণী দিয়ে ২/৩ বার ভালো মত আঁচড়ে নিন। যখন প্যাক লাগাবেন তখনও বারবার চুল আঁচড়াতে থাকুন।