রেইনট্রি’র বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে
রাজধানীর বনানীর রেইন ট্রি হোটেলের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি আইনে তিনটি মামলা দায়ের করা হচ্ছে। মামলা তিনটি হচ্ছে- মানি লন্ডারিং, কালোবাজারি এবং শুল্ক ফাঁকি।
শুল্ক গোয়েন্দার মোহাম্মদ শফিউর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে অপারেশন্স কাজ শুরু করেছে দ্য রেইন ট্রি হোটেল। কিন্তু হোটেলটি ভ্যাট দেয়া শুরু করে মার্চ থেকে। ফেব্রুয়ারি মাসের আট লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে রেইন ট্রি।
শুল্ক গোয়েন্দার এ কর্মকর্তা জানান, বিদেশি মদ, ড্রিংস, লিকার ও বিয়ার এই হোটেলে পাওয়া গেছে। জব্দকৃত পণ্যগুলো আমদানিযোগ্য। কিন্তু তারা সরাসরি আমদানি করেনি। সঠিকভাবে ভ্যাট দিয়ে তারা আমদানি করেনি। অন্য কারও কাছ থেকে অথবা অন্য মাধ্যমে তারা ভ্যাট ছাড়া ক্রয় করেছে। আমদানির ক্ষেত্রে এলসি করতে হয়। কিন্তু তাদের এলসির কোনো ডকুমেন্ট আমরা পাইনি। আপাতত এসব স্মাগলিংয়ের পণ্য বলে প্রতীয়মান। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।
আমরা কিছু ডকুমেন্ট জব্দ করেছি। তাতে দেখা গেছে, এখানে তারা প্রচুর পরিমাণ বিয়ার বিক্রি করে। কিন্তু তাদের কোনো বার নেই। বারের ডিক্লেয়ার নেই। কোনো পণ্য বিক্রি করলে রাজস্ব কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করবে। পণ্যের মূল্য তালিকা তৈরি করবে। নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করতে পারবে। ফেব্রুয়ারি মাসে শুধু আট লাখ টাকা ভ্যাট তারা ফাঁকি দিয়েছে। হিসাব করলে আরও বেশি হবে। প্রাথমিকভাবে এসব ডকুমেন্ট সঠিক বলে মনে হচ্ছে না। এসব ডকুমেন্ট আমরা পরীক্ষা করে দেখব।
এখানে এভিয়েন ব্র্যান্ডের সফট ড্রিংস ৫০০ মিলি ৩০০ টাকায় বিক্রি করছে তারা। এগুলো ফ্রান্স থেকে আসে। এসব আমদানি ছাড়া দেশে আসার সুযোগ নেই। কিন্তু তারা আমদানির কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি। কারা এসব তাদের সাপ্লাই করছে, যারা সাপ্লাই করছে তারা সঠিক নিয়মে আমদানি করছে কি না তা আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করে দেখব।
শুল্ক গোয়েন্দার যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ শফিউর রহমান বলেন, দেশে ব্যবসা করতে হলে ভ্যাটের আওতায় থাকতে হবে। যেহেতু তারা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে সে জন্য তাদের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির মামলা হবে। যেসব পণ্য এখানে পাওয়া গেছে সেসব আমদানিযোগ্য। কিন্তু তারা চোরাচালানের মাধ্যমে এখানে এলসি ছাড়া নিয়ে এসেছে। বিকল্পপথে ক্রয় করায় তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হবে।
হোটেল কর্তৃপক্ষ একাধিকবার দাবি করেছেন, হোটেলে কোনো মদ বিক্রি হয় না, বার নেই, বারের লাইসেন্স নেই এমন প্রশ্নের উত্তরে মোহাম্মদ শফিউর রহমান বলেন, আমরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করব। তারা কী ধরনের ডকুমেন্ট পেয়েছে তা শুনব। এরপর বার না থাকা সত্ত্বেও মদ বিক্রির বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।