শহিদ হত্যার বিচার ১৪ বছরেও অধরা
মোবারক হোসেন, লক্ষীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ শহিদ (৩৫) হত্যার ১৪তম মৃত্যুবাষির্কী রোববার পালিত হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ায় পরিবারটি হতাশ হয়ে পড়েছে।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানায়, ২০০৩ সালের ৪ জুন বিকেলে এক ব্যক্তি শহিদের মোবাইল ফোনে কল করে। এরপর তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে লক্ষ্মীপুর শহরের বাসা থেকে বের হন। রাতে ফেরেননি। পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য স্থানে খোঁজ করে তার সন্ধান পায়নি। পরদিন সকালে সদর থানায় জিডি করা হয়। একই দিন স্থানীয় লোকজন শহরের উত্তর তেমুহনীর পেট্রল পাম্পের কাছে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পরিত্যক্ত পড়ে থাকতে দেখে। পরে পুলিশ মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। তখন স্থানীয়দের সন্দেহ জাগে, পাম্পের পাশে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আ ন ম ফজলুল করিমের মালিকানাধীন ইউনিক হোটেলে (আবাসিক) শহিদ থাকতে পারেন। স্থানীয়রা সেখানে তল্লাশি চালাতে চাইলে হোটেলের ব্যবস্থাপকসহ অন্যরা বাধা দেয়। রাত ১১টার দিকে পুলিশ হোটেলটির তৃতীয় তলার ১২৪ নম্বর কক্ষ থেকে হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে। মৃত্যুর পর মুখে এসিড ঢেলে দেওয়ায় দাঁত ও জিহ্বা গলে মুখমণ্ডল ফুলে কালো হয়ে যায়। তখন পাশের কক্ষের বোর্ডার সৈয়দ আল আমিন মেজবাহ, ব্যবস্থাপক হাবিব উল্যা জহির ও মালিক আ ন ম ফজলুল করিমকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হত্যার ঘটনায় ৬ জুন নিহতের বাবা মুক্তিযোদ্ধা সুজায়েত উল্যা বাদী হয়ে থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। একই বছরে অক্টোবরে বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি নোয়াখালী সিআইডিকে তদন্তের জন্য দেওয়া হয়। ২০০৫ সালের ৬ আগস্ট অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির লক্ষ্মীপুর ক্যাম্পের পুলিশ পরিদর্শক শান্তিরঞ্জন চক্রবর্তী। এতে বাদী আদালতে নারাজি দেন। পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম সিআইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০০৯ সালের ২২ মার্চ নোয়াখালী সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. নুরুল ইসলাম সরকার ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে সেলিম, হাবির উল্যা জহির, রাজু, আবদুল হাই, খোরশেদ আলম, মাহবুবুল আলম বাবু, মিরন, বাবুল ও জহির উদ্দিন সাজুকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলার আসামি মিরন বর্তমানে বিদেশে এবং অন্যরা জামিনে রয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই নেতা জানান, শহিদ রাজনীতির পাশাপাশি ঠিকাদারি করতেন। স্থানীয় রাজনীতিতে তিনি বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। তাদের ধারণা, আওয়ামী লীগের এক নেতার পরিকল্পনায় বিএনপির একটি পক্ষ শহিদ হত্যা বাস্তবায়ন করেছে। খুনিদের গ্রেপ্তার দাবিতে সচেতন নাগরিক ফোরামের ব্যানারে শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিসহ বিএনপি-জামায়াত অন্দোলন করেছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাই