শামীম ওসমানকেও ছাড় নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জের সাত খুনে সেখানকার প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান যদি জড়িত থাকেন তাকেও কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।
শনিবার রাজধানীর বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণাগার মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
আলোচিত ওই হত্যাকাণ্ডের শিকারদের স্বজনরা মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে মূল হোতাকে বের করার দাবি জানাচ্ছেন।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, “সাত খুনের ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে সরকার জিরো টলারেন্স।”
সাত খুনের ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার আগে সাংসদ শামীম ওসমানকে ফোন করে সাহায্য চেয়েছিলেন নূর হোসেন। ওই কথোপকথন ফাঁস হলে গণমাধ্যমে তা প্রকাশ করা হয়।
সেখানে নূর হোসেনকে বলতে শোনা যায়, “ভাই আপনি আমার বাপ লাগেন ভাই। ভাই জীবনটা আপনেরে আমি দিয়া দিমু ভাই। আপনারে আমি অনেক ভালোবাসি ভাই।”
কয়েকদিন পর সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছিলেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শামীম। সেখানে ওই কথোপকথনের সত্যতাও তিনি স্বীকার করেন।
শামীম ওসমানকে বিচারের আওতায় আনা হবে কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “কেন? সে (শামীম ওসমান) যদি দোষী না হয় তাহলে তাকে আনব কেন? সে যদি দোষী হয় তাহলে আনা হবে।”
শামীম ওসমানের সঙ্গে নূর হোসেনের ওই কথোপকথোনের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই গুলোর বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, সে যদি দোষী হয়, যদি কোনো অন্যায় থাকে, তার বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রমাণ আমাদের সামনে আসে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মন্ত্রী বলেন, “আমরা এখনও পর্যন্ত কোনো তথ্য পাইনি, পেলে দেখবো।”
ফ্রান্সের সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “সারা পৃথিবীতে অস্থিরতা চলছে। বাংলাদেশেও এর ছিটে-ফোঁটা আসছে। তবে আমরা সব কিছু নিয়ন্ত্রণে রাখছি।”
গত বছর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনের লাশ উদ্ধারের পর অভিযোগের আঙুল ওঠে নূর হোসেনের দিকে।
নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম সে সময় অভিযোগ করেন, র্যাবকে ৬ কোটি টাকা দিয়ে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর হোসেন ওই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। পরে র্যাবের অভ্যন্তরীণ তদন্তেও তার সত্যতা পাওয়া যায়।
হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করলেও এক পর্যায়ে নিরুদ্দেশ হন সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগের এই নেতা।
সর্বশেষ বাংলাদেশ উলফা নেতা অনুপ চেটিয়াকে ফেরত দেওয়ার এক দিনের মধ্যে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে যশোরের বেনাপোল স্থল বন্দরে তাকে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
এরপর র্যাব হেফাজতে তাকে শুক্রবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে নিয়ে আসা হয় ঢাকার উত্তরায়, র্যাব সদরদপ্তরে।
সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর নূর হোসেনকে সাত খুনের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদের কাছে হস্তান্তর করে র্যাব। দুপুরে তাকে কারাগারে পাঠায় নারায়ণগঞ্জের আদালত।
প্রতিক্ষণ/এডি/এআরকে