শিশুরা ছুটছে যে পাঠাগারে !
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বই পড়ার প্রতি শিশু-কিশোরদের আগহ কম। আর বইটি যদি হয় পাঠ্য বইয়ের কোনো বই তাহলে তো কথাই নেই। এমন বাস্তবতার পুরো উল্টো চিত্র দেখা যাবে রাজধানীর বেরাইদের ভূঁইয়াপাড়ার শিশু-কিশোরদের বেলায়।
প্রতিদিনই পড়ন্ত বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত শিশু-কিশোরদের কলকাকলিতে মুখোরিত থাকে এলাকাটির গণপাঠাগার। নিয়মিত পাঠ্য বইয়ের বাইরে নিজের পছন্দের বই পড়ার জন্য উদগ্রীব ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের কাছে এই পাঠাগারটির প্রতি রযেছে বাড়তি আগ্রহ।
এখানে আগত কয়েকজন ক্ষুদে পাঠক জানায়,
‘‘ আমি প্রতিদিন স্কুল ছুটির পর এখানে আসি বই পড়ার জন্য।’’
‘‘ বেশি রাত হয়ে গেলে এখান থেকে আমার পছন্দের বইটি আমি বাড়িতে নিয়ে যাই।’’
শিক্ষার্থীদের বই পড়ার প্রতি এমন আগ্রহের পেছনে মুখ্য ভূমিকাটি পালন করছে এলাকার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ। গণপাঠাগারের সাথে যুক্ত বেরাইদ মুসলমি হাই স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক সৈয়দ লুৎফর রহমান জানান,
‘‘ এই পাঠাগারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে সাহিত্য ক্লাব, বিতর্ক ক্লাব এবং ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব। প্রতি রাতে এখানে ইংরেজি শেখার আসর বসে। পাঠকদের মধ্যে যারা ইংরেজি বলা ও লেখায় অপক্ষোকৃত দুর্বল, কয়েকটি দলে ভাগ করে তাদের ইংরেজি শেখানো হয়। ’’
ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই পড়ার চর্চা গড়ে তুলতে ২০০১ সালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় এই গণপাঠাগার। বর্তমানে পাঠাগারটিতে রয়েছে ২ হাজার ২৭১টি বই। প্রতিদিন এখানে পাঠকের উপস্থিতি প্রায় ১০০ জনের কাছাকাছি। পাঠাগারটির সভাপতি এমদাদ হােসনে ভূঁইয়া বলেন,
‘‘ আক্ষরিক অর্থে পাঠাগারটির আয় নেই । তবে খরচ কম নয়। গ্রন্থাগারিকের বেতন চার হাজার টাকা। পত্রিকা বিল আসে এক হাজার টাকা। প্রতি বছরই কেনা হয় নতুন নতুন বই। বছরে সাকুল্যে খরচ প্রায় দুই লাখ টাকা। সাত সদস্যের পরিচালনা কমিটি এই অর্থ দিয়ে থাকে। এর বাইরে কারও কাছ থেকে কােনাে ধরনের আনুকূল্য নেয়ার সুযােগ নেই। পাঠাগারটিকে এমপিওভুক্ত করার দাবিও জানানো হয়েছে।’’
এদিকে, পাঠাগারটির পরিধি বাড়িয়ে এটিকে আরোও আকর্ষণীয় করে তোলা হোক শিশু-কিশোরদের কাছে; এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন ক্ষুদে পাঠকদের অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
প্রতিক্ষণ/এডি/এস.আর.এস