গতকাল রাত থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। কী এই উচ্ছ্বাসে কারণ? কারণ হলো আজ ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে শতবর্ষী প্রতিষ্ঠানের বড় অভাব, সেখানে এতগুলো বছর সগৌরবে টিকে থাকা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব আলাদা করে বোঝাবার দরকার হয় না।
বলা হয়ে থাকে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় না থাকলে স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্বই সম্ভব হত না। কথাটা একদমই বাহুল্য নয়। ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৬৬ এর ৬ দফা দাবি, ’৬৯ এর গণঅভ্যথথান এবং ’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ – সব কিছুতেই ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রণী ভূমিকা। স্বাধীনতা পরবর্তী স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন কিংবা গণজাগরন মঞ্চের আন্দোলন প্রভৃতি ক্ষেত্রেও ঢাবি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ আলাদা মাত্রা যোগ করেছে।
শুধু রাজনৈতিক আন্দোলনের ক্ষেত্রেই নয়, যে কোন প্রকার সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
আর এ কথা তো বলাই বাহুল্য যে, দেশের শ্রেষ্ঠ মেধাবীরা শিক্ষা নিতে আসে দেশের সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠে। সম্ভ্রান্ত বংশের তরুণ-যুবকদের সঙ্গে কৃষক-শ্রমিকের পুত্র-কন্যাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বুকে টেনে নেয় পরম মমতায়।
দেশের কর্মক্ষত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাফল্য অসাধারণ। আর প্রাচ্যের এই অক্সফোর্ড থেকে প্রতি বছরই বের হয়ে আসে সাহিত্যিক, শিল্পী, বিজ্ঞানীদের মতো গুণীজনের।
অনিয়ম, দুর্নীতি, রাজনৈতিক প্রভাব প্রভৃতি কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কাঙ্ক্ষিত ছন্দে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারছে এ কথা সত্যি। কিন্তু আমাদের দেশের সমাজ বাস্তবতায় দেশ ও জাতিকে এই বিশ্ববিদ্যালয় যা দিয়ে যাচ্ছে তা সত্যিই বিস্ময়কর। নিঃসন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের আইকন, গর্বের প্রতীক।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া