শুষ্ক চুল নিয়ে চিন্তিত?

প্রকাশঃ মার্চ ৬, ২০১৬ সময়ঃ ২:৩১ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ২:৩২ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

dry hair

চুলের যত্নে আজকাল সবাই কেমিক্যালসমৃদ্ধ প্রসাধনী যেমনঃ শ্যাম্পু, জেল বা হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করছেন। আর ব্যস্ততার কারণে তেল ব্যবহার করার কথা যেন নিতান্তই ভুলে গেছেন। যেহেতু জীবিকার তাগিদে সারাদিন বাহিরে থাকতে হয়, তাই স্বাভাবিকভাবেই চুলে ধুলাবালি আর সূর্যের তাপ লাগে। এতে করে প্রতিদিনই চুল ময়লা হয়ে যায় আর এ কারণে দেখা যাচ্ছে যে, ২ দিন পরপরই অনেকে শ্যাম্পু ব্যবহার করছেন। আর সেই সাথে তো ঐসব কেমিক্যালসমৃদ্ধ প্রসাধনী আছেই। তাহলে চুলের যত্ন হচ্ছে কখন? এইভাবে জেনে বা না জেনে দৈহিক সৌন্দর্যের মূল্যবান অংশ চুলের প্রতিনিয়ত ক্ষতি না করে এর যত্নে একটু সচেতন হন। চলুন আজ জেনে নিই চুলের শুষ্কতা কীভাবে দূর করা যায়-

মেহেদি পাতা ব্যবহারঃ তাজা মেহেদি পাতা বেটে এর মধ্যে দুই-তিন টেবিল চামচ চায়ের লিকার দিয়ে চুলে সারারাত দিয়ে রাখুন। পরের দিন একটি ডিম, তিন চা চামচ টকদই, দুই টেবিল চামচ লেবুর রস এবং এক টেবিল চামচ নারকেল তেল খুব ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে চুলে লাগিয়ে রাখুন দুই ঘণ্টা। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার ব্যবহারে চুলের রুক্ষতা দূর হবে একেবারে।

ডিম, মধু ও ক্যাস্টর অয়েলঃ চুলে প্রোটিনের ঘাটতি হলে চুল অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে পড়ে। তাই ব্যবহার করুন এই প্যাকটি। একটি ডিমের কুসুম, এক টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল, এক টেবিল চামচ মধু খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মাথার ত্বকে ভালো করে লাগান। ৩০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে তিনবার ব্যবহারে চুলে পুষ্টি পৌঁছাবে এবং চুলের রুক্ষতা দূর হবে।

কলা, মেয়োনিজ ও অলিভ অয়েলঃ দুটি পাকা কলা বাটিতে নিয়ে চামচের সাহায্যে পিষে নিন ভালো করে। এরপর এতে দুই টেবিল চামচ মেয়োনিজ এবং এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি চুলে এক ঘণ্টা লাগিয়ে রাখুন এবং ধুয়ে ফেলুন। কলা চুল নরম ও উজ্জ্বল করে তুলবে।

মধু ও অলিভ অয়েলঃ শুষ্ক চুলের জন্য মধু অনেক গুরুত্বপুর্ণ উপকরণ। তিন টেবিল চামচ মধু ও পাঁচ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে মাথায় ভালোভাবে লাগান এবং ১৫-৩০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। চাইলে এতে একটা ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করতে পারেন। এতে চুল আরো কোমল হবে।

ডিম ও টক দইয়ের প্যাক ব্যবহারঃ ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে আর টক দইয়ে রয়েছে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। এ দুটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে মাথার ত্বকে ও চুলে লাগালে চুলের শুষ্কতা দূর হবে এবং চুল পড়া রোধ হবে। ভালো ফল পেতে সপ্তাহে অন্তত একদিন এই প্যাক চুলে ব্যবহার করুন।

তেলের ব্যবহারঃ স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য তেলের পরিচর্যার কোনো বিকল্প নেই। হালকা গরম নারকেল তেল দিয়ে নিয়মিত ৫ মিনিট চুল ম্যাসাজ করুন। এটি শ্যাম্পু করার পরও চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখবে এবং চুল নরম ও মসৃণ করবে।

এসেনশিয়াল অয়েলঃ যেকোনো এসেনশিয়াল অয়েল চুলের যত্নে বেশ কার্যকর। আপনি চাইলে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে সামান্য এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। এটি অনেক দ্রুত চুলের শুষ্কতা দূর করে ও চুল পড়া রোধ করে।

কেমিক্যালসমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহার না করাঃ চুলের স্টাইলের জন্য জেল বা হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। এ ধরনের প্রসাধনী চুলকে অনেক বেশি রুক্ষ করে ফেলে। আর চুল স্ট্রেটনার বা হেয়ার ড্রাইয়ারও যতটা পারুন কম ব্যবহার করুন। কারণ, এতে চুল রুক্ষ হয়ে ভেঙে যায়।

ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ শ্যাম্পু ব্যবহারঃ চুলে সব সময় মাইল্ড ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। কারণ কেমিক্যালসমৃদ্ধ শ্যাম্পু চুলকে অনেক বেশি রুক্ষ করে ফেলে। আর চুল ধোয়ার ক্ষেত্রে সাধারণ পানি ব্যবহার করুন। গরম পানি ব্যবহারে মাথার ত্বকের স্বাভাবিক তেল নিঃসরণ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়।

বেশি করে কন্ডিশনার ব্যবহার করুনঃ শ্যাম্পু ব্যবহারের পর ময়লা দূর হওয়ার পাশাপাশি চুলের স্বাভাবিক তেলও দূর হয়। এর ফলে চুল শুকানোর পর রুক্ষ হয়ে যায়। তাই সব সময় শ্যাম্পু করার পর বেশি করে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এটি চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে।

মাথার ত্বকে স্ক্রাবিং করাঃ অনেক সময় খুশকির কারণে মাথার ত্বকের তেল নিঃসরণ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে চুল অনেক বেশি রুক্ষ ও প্রাণহীন হয়ে পরে। অলিভ অয়েলের সঙ্গে সামান্য চিনি মিশিয়ে মাথার ত্বকে হালকাভাবে ম্যাসাজ করুন। এতে খুশকি দূর হবে এবং চুলের রুক্ষতাও অনেকটা কমে যাবে।

প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G