ষড়যন্ত্র নির্মূলে ব্যর্থ বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
ক্ষমতায় থাকাকালীন অবস্থায় বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে দাবি করলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ‘বারবার ষড়যন্ত্র নির্মূল করতে ব্যর্থ হয়েছি, আর এখনও হচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল ক্ষমতায় থাকার দুই বছর আগে থেকেই আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আমরা সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে পারিনি। যার খেসারত দিচ্ছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, দলের নেতাকর্মীসহ দেশের সকল সাধারণ মানুষ।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৮ম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারসন ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
বিগত ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয় তারেক রহমানকে। তারপর থেকে বিএনপি তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস পালন করে আসছে।
গয়েশ্বর রায় অভিযোগ করেন, সরকার তখনই নির্বাচন দিবে যখন ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি নির্বাচন করে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে। সে জন্য বিএনপির ৩০ জনকে নিয়ে নির্বাচন করে তাদের বিরোধী দল বানিয়ে এরশাদকে বের করে দিবে। দলের নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘মান্নান ভুঁইয়া (দলের প্রয়াত মহাসচিব) পূর্বে এই ধরণের ষড়যন্ত্র করেছিলেন, টিকতে পারেননি। কেউ এই কাজ আর কেউ করবেন না।’
সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী ক্ষমতায় আসতে পারবেনা। আর সে কারনেই নির্বাচন দিতে চায়না বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আদায় করে নিতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কেউ কেউ সমালোচনা করেন দলের মধ্যে গণতন্ত্র নেই। এর জন্য আমরাই দায়ী। নিজে অপকর্ম করে নেতৃত্বের দিকে আঙ্গল তুলি। নিজেদের পছন্দ মতো কমিটির জন্যই আমাদের স্বার্থে য়ামরা বিএনপি চেয়ারপারসনকে ব্লাকমেইল করি।’তারেক রহমান যাতে দ্রুত দেশে ফিরে আসতে পারে সে জন্য নেতাকর্মীদের একসাথে হয়ে কাজ করতে বলেন বিএনপির এই নেতা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক প্রো-ভিসি আ ফ ম ইউসুফ হায়দার বলেন, ‘বর্তমানে দেশে কোনো সুস্থ ধারার রাজনীতি নেই। আমাদের দেশের রাজনীতির অবস্থা বিকলাঙ্গ শিশুর মতো। এ অবস্থায় চলতে পারে না। তাই যার যার অবস্থান থেকে অবদান রেখে দেশকে সুস্থ ধারায় নিয়ে আসতে হবে।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা কথায় কথায় শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের জন্য জিয়াউর রহমানকে দায়ী করে। এর চেয়ে বড় মিথ্যাচার দ্বিতীয়টি নেই।’তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতেই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।’
আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ বলেন, ‘বিএনপি রাস্তায় বন্দুক বা বোমা ফাটিয়ে ক্ষমতা যেতে পারবে না। কারণ বিএনপি কোনো বিপ্লবী দল নয়। বিএনপিকে নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় যেতে হবে।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ভাইস চেয়ারমান সেলিমা রহমান, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম-মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান, যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মুনির হোসেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান প্রমূখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করিম শাহীন।
এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে এয়ার ভাইস মাশাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, ফজলুল হক মিলন, আবদুস সালাম আজাদ, আফরোজা আব্বাস,শাম্মী আক্তার, হেলেন জেরিন খানসহ বিএনপি ও তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফ