সংলাপের প্রস্তাবে মানুষ পোড়ানোর অপরাধ চাপা পড়ছে

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৫ সময়ঃ ৩:৫০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:১৮ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক,প্রতিক্ষণ ডট কম

download (3)যারা সংলাপের কথা বলছেন তাদের উদ্দেশ্য ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা। এ সংলাপ আহ্বানে মানুষ পুড়িয়ে মারার মতো জঘন্য অপরাধকে আড়াল করা হচ্ছে।

বুধবার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘নাগরিক সমাজের একটি অংশ দুষ্কৃতকারী বোমা হামলাকারীদের সঙ্গে আলোচনার কথা বলছেন। যারা এ আলোচনার কথা বলছেন তারা অনেকেই ১/১১এর কুশীলব। তাদের উদ্দেশ্য ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তাদের এ আহ্বানের মাধ্যমে নৃশংসভাবে পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ হত্যাকারী এবং তাদের নেত্রী খালেদা জিয়া ও অন্য নেতাদের জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধকে আড়াল করা হচ্ছে। পৃথিবীর কোথাও কোনো দুষ্কৃতকারীর সঙ্গে কেউ আলোচনায় বসে না। তাদের দমনই করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট প্রকৃতপক্ষে এখন পরিপূর্ণ নিষিদ্ধ সংগঠনের মতো জঙ্গি জোটে রূপান্তরিত হয়েছে। তালেবান নেতা মোল্লা ওমরের অনুসারীরা যেমন গোপন জায়গা থেকে ভিডিও পাঠিয়ে থাকে বিএনপিও এখন তাই করছে। এ সংগঠনের নেতারা গোপন জায়গা থেক বিবৃতি পাঠাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘জঙ্গি ও নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো যেভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নিরীহ ও নিরস্ত্র মানুষের  ওপর হামলা করে তারাও তাই করছে।’

এর প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি যদি তাদের জঙ্গি কার্যক্রম পরিহার করে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে ফিরে না আসে তাহলে সময় মতো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় ধরে অবরোধ-হরতালের নামে মানুষের ওপর নৃশংস আক্রমণ পরিচালনা করেছেন অভিযোগ করে ড. হাছান বলেন,  তার নেতৃত্বে হরতাল-অবরোধের আহ্বানে জনগণ বিন্দুমাত্র সাড়া দেয়নি। কিন্তু পেট্রোল বোমা মেরে, বোমা হামলা করে এপর্যন্ত ৮০ জনের বেশি মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।

আহত করা হয়েছে কয়েকশ মানুষকে। শতশত যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। খালেদার  ডাকে সাড়া না দেয়াতেই তিনি এবং তার জোটের নেতারা যেন হিংস্র হায়েনার চেয়েও জঘন্যরূপে মানুষের সামনে আবির্ভূত হয়েছে। তিনি এখন জনাতঙ্কের নেত্রী কিংবা পেট্রোল বোমা নেত্রীতে পরিণত হয়েছেন।’

খালেদা জিয়ার কাছে প্রশ্ন  রেখে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘কেন এই মানুষ পুড়িয়ে মারা? কেন এই ধবংসের তাণ্ডবলীলা? ১৩ বছরের শিশু জাকিরকে কেন পুড়িয়ে মারা হলো? চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবম শ্রেণীর স্কুলছাত্র রাজন আলী রকি-কি দোষ ছিল তার, কেন তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো। কি অপরাধ ছিল এদের?’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রতিটি নৃশংস ও বর্বরোচিত ঘটনার পর বিএনপির পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে তাদের দায়-দায়িত্ব অস্বীকারের অপচেষ্টা করা হয়।

কিন্তু কয়েকদিন আগে সাদেক হোসেন খোকা নিউইয়র্কে বসে বলেছেন, তাদের দাবি মেনে নিলেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সমস্ত বিশৃঙ্খলা বন্ধ হবে। এই কথার মধ্য দিয়েই প্রকৃতপক্ষে বিএনপি এসব ঘটনার দায়-দায়িত্ব স্বীকার করে নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ  ইতিমধ্যেই বেগম জিয়ার লেলিয়ে দেয়া দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু করেছে। বোমা ও পেট্রোল বোমা হামলাকারীদের গণধোলাই দিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তর করছে। দেশের শান্তিকামী মানুষের প্রতি আহ্বান জানাই, দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আপনাদের এই প্রতিরোধ আরো জোরদার করুন। সরকার এবং আওয়ামী লীগ আপনাদের পাশে আছে এবং থাকবে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক বদিউজ্জামান ভুইয়া ডাবলু, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলি, উপ প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কার্যনিবাহী কমিটির সদস্য এনামুল হক শামীম, সুজিত নন্দি রায়, সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু প্রমুখ।

প্রতিক্ষণ/এডি/রাজিব

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G