সঠিক সময়ে রিভিউ করবেন কামারুজ্জামান
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের সঙ্গে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দেখা করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। তারা সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা না বললেও কামারুজ্জামানের আইনজীবী শিশির মো. মুনির ব্রিফ করেন।
কামারুজ্জামানের আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়ে শিশির মো. মুনির জানান, তারা সঠিক সময়ে রিভিউ করবেন। রিভিউ করার আগে জানানো হবে।
কামারুজ্জামানের পরিবারের বরাত দিয়ে এই আইনজীবী সাক্ষাতের বিষয়ে বলেন, তিনি মোটেই বিচলিত নন। তিনি তার পরিবারের সদস্যদের কাছে “উচ্চ আদালতে রিভিউ করে খালাস পাবেন বলে ফের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন”।
শনিবার বেলা এগারটা ৩৫ মিনিটে কারাগারের ভেতর থেকে বের হয়ে আসেন কামারুজ্জামানের স্ত্রী নূরুন্নাহারসহ মোট ৮ জন। এর আগে সকাল দশটা ৪০ মিনিটের দিকে কারাগারের ভেতরে ঢোকেন তারা। অন্যদের মধ্যে ছিলেন কামারুজ্জামানের মেয়ে আফিয়া নূর, পুত্রবধূ শামীম আরা, শ্যালক আবুল কালাম আজাদ, ভাগ্নে সানোয়ার হোসেন এবং ৩ ভাগ্নি রোকসানা জেবিন, শাহানা জেবিন ও আফরোজা জাহান।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পূর্ণাঙ্গ রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর থেকে রিভিউ আবেদনের জন্য নির্ধারিত ১৫ দিন গণনা শুরু হবে বলে দাবি করেছিলেন কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা।
তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আসামি তার আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় ও মৃত্যু পরোয়ানা জানার পর থেকে এ দিন গণনা শুরু হয়েছে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কারা কর্তৃপক্ষ কামারুজ্জামানকে তার মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনান। এর দু’ঘণ্টা আগে লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানাটির সঙ্গে আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপিও পৌঁছে কারাগারে। সে সময় কামারুজ্জামান জানান, তিনি আইনজীবীর সঙ্গে আলাপ করে রিভিউ আবেদনের বিষয়ে জানাবেন।
কামারুজ্জামানের ইচ্ছা অনুসারে ২১ ফেব্রুয়ারি তার ৫ জন আইনজীবী কারাগারে তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি আইনজীবীদের রিভিউ করতে বলেন।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির বেঞ্চ গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কামারুজ্জামানের আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ এ রায় দেন। বেঞ্চের অন্য তিন সদস্য হচ্ছেন বিচারপতি আব্দুল ওহাব মিয়া, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
১৯ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ ট্রাইব্যুনাল-২ এর ৩ বিচারপতি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করেন। অন্য দুই বিচারপতি হচ্ছেন বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি শাহীনুর ইসলাম।
পরে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মুস্তাফিজুর রহমান মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে আইজিপি (প্রিজন) এর বরাবরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠিয়ে দেন।
গত বছরের ৩ নভেম্বর কামারুজ্জামানকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর দেওয়া ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে চূড়ান্ত রায় সংক্ষিপ্ত আকারে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।
প্রতিক্ষণ/এডি/রবি