সবুজের বুকে কিছুক্ষণ!
প্রতিক্ষণ ডেস্ক:
ছায়া ডাকা পাখির কোলাহল মুখর পরিবেশ।যেন যান্ত্রিক সভ্যতার বাহিরে অন্য এক জগত। যেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে অবলোকন করা যায় আপন মনে। নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না যে বাংলাদেশেও এমন সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে।
বলছিলাম হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার রঘুনন্দন পাহাড়ে অবস্থিত সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের কথা।
উদ্যানটির নাম সাতছড়ি হওয়ার পিছনে রয়েছে মজার কাহিনী, এই উদ্যানে সাতটি পাহাড়ি ছড়া থাকার কারনেই এর নাম হয়ে গেছে সাতছড়ি। তবে এই উদ্যানটির পূর্ব নাম ছিলো রঘুনন্দন হিল রিজার্ভ ফরেস্ট।
এর দূরত্ব ঢাকা থেকে ১৩০ কিলোমিটার কিলোমিটার। উদ্যানটির পশ্চিম দিকে সাতছড়ি চা বাগান এবং পূর্ব দিকে চাকলাপুঞ্জি চা বাগানসহ এর আশে পাশে মোট নয়টি চা বাগান রয়েছে। এর মধ্যে অবস্থিত টিপরা পাড়ায় বসবাস করে একটি পাহাড়ী উপজাতির ২৪টি পরিবার ।
এখানে রয়েছে প্রায় ২০০’রও বেশি প্রজাতির গাছপালা। শাল, সেগুন, আগর, গর্জন, চাপালিশ, পাম, মেহগনি, কৃষ্ণচূড়া, ডুমুর, জাম, জামরুল, সিধাজারুল, আওয়াল, মালেকাস, ইউক্যালিপটাস, আকাশমনি, বাঁশ, বেত-গাছ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। গাছ পালার পাশাপাশি আরও রয়েছে ১৯৭ প্রজাতির জীব-জন্ত।
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বনে যে সকল প্রাণী দেখা যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো লজ্জাবতী বানর, উল্লুক, চশমাপরা হনুমান, কুলু বানর, মেছোবাঘ, মায়া হরি ইত্যাদি।সরিসৃপের মধ্যে রয়েছে সাপ ।
কাও ধনেশ, বনমোরগ, লালমাথা ট্রগন, কাঠ ঠোকরা, ময়না, ভিমরাজ, শ্যামা, শালিক, হলদে পাখি, টিয়া এ উদ্যানের পাখির মধ্যে উল্লেখ যোগ্য। এছাড়া গাছে গাছে আশ্রয় নিয়েছে অগণিত পোকামাকড় এবং ঝিঁঝিঁ পোকা।
উদ্যানের আশেপাশের যে সব চা বাগান রয়েছে তার দৃশ্যের কথা না বললেই নয়।উচু নীচু টিলায় ছায়া বৃক্ষের নীচে সবুজ গালিচার ন্যায় বিছিয়ে রেখেছে চা গাছ গুলো। চা বাগান শ্রমিকদের নরম হাতে দুটি পাতা একটি কুড়ি উত্তোলনের দৃশ্য যে কতটা মনমুগ্ধকর তা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবেন না।তাই যদি সময় মিলে তা হলে যে কেউ বেড়িয়ে আসতে পারেন সবুজ গাছ গাছালিতে ঘেঁড়া সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান থেকে।
প্রতিক্ষণ/এডি/জুয়েল