সবুজের মাঝে কিছুসময়
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:
ইট, কাঠ, পাথর আর কংক্রিট এর শহর পেরিয়ে হাঁপিয়ে ওঠা মানুষ মাঝে মাঝেই চান একটুখানি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে। হারিয়ে যেতে চান কোন এক নৈসর্গিক সবুজ-শ্যামলিমার মাঝে।
এমনি এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিছানাকান্দি। বেশ কয়েক বছর ধরে এখানে বেড়েছে পর্যটকের আনাগোনা। বর্তমানে এটি বেশ পরিচিত ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে।
সিলেট শহরের বিমানবন্দর রোড ধরে বিছানাকান্দির পথ। দু’পাশের সবুজ চা বাগান পেছনে ফেলে আপনাকে যেতে হবে গন্তব্যে। এই পথ ধরে গেলে মনে হবে, পুরো পৃথিবীটাই যেন সবুজের রাজ্য।
সিলেট শহর হতে ৬০ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নে বিছানাকান্দি গ্রাম। সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক ধরে সালুটিকর বাজারের ডান দিকে গাড়ী নিয়ে গোয়াইনঘাট লিঙ্ক রোডে হয়ে দেড় ঘণ্টা গেলেই আপনি পৌঁছে যাবেন বিছানাকান্দি। এক্ষেত্রে শহরের আম্বরখানা থেকে সিএনজি নিলে সহজে এবং কম খরচে বিছানাকান্দি যাওয়া যায়।
হাদারপাড় বাজার পর্যন্ত জনপ্রতি ভাড়া ৮০ টাকা। সেখানে পৌঁছতে লাগবে প্রায় দেড় ঘণ্টা। বাজারের পাশেই খেয়াঘাট। ঘাট থেকে নৌকা রিজার্ভ করে যাওয়া যায় বিছানাকান্দি।
নৌকায় যেতে যেতে দেখতে পাবেন দু’পাশে সবুজ গ্রামের প্রতিচ্ছবি। সাথে দূরে মেঘালয়ের পাহাড় গুলো দেখে অতি নীরস লোকটিও যদি একটু রসিকতা করে, তবে অবাক হওয়ার কিছু নেই। সেটিই যেন স্বাভাবিক।
নৌকা যতই আগাবে সামনের দিকে আপনি ততই অবাক হতে বাধ্য। নদীর ধার ঘেঁষে মাঝে মাঝে উঁচু করে স্তূপ আকারে জমিয়ে রাখা হয়েছে সাদা, কালো ও বাদামি অনেক পাথর। মনে হবে সবুজ পাহাড়ের কোলে আরেক সাদা পাহাড়।
নৌকায় প্রায় পনের মিনিট ভ্রমণের পরই দেখা মিলবে বিছানাকান্দির। সীমান্তের ওপার থেকে বয়ে আসা স্বচ্ছ জলধারা বড় বড় পাথরের ফাঁকে আপনাকে নিয়ে যাবে মায়ার স্রোতে। পাথরের বুকে শীতলের আলিঙ্গনে কিছুক্ষণের জন্য হলেও ভুলে যেতে পারবেন শহরের মায়া।
স্রোতের মধ্যে ডুবন্ত পাথরের উপর দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে পারবেন অন্য এক রাজ্য। যেখানে এপারের প্রকৃতি ওপাড়ের পাহাড়ের সাথে যেন মিতালী করছে গভীর মমতায়।
আকাশে ভাসমান মেঘের নেই সীমানা। সেই মেঘেদের পাহাড়ের কোলে ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন এখানে। সেই সাথে হিম শীতল পানিতে নিজের শরীরের সাথে ভিজবে আপনার মনও।
ইচ্ছে করলে যে কোনও দিন পরিবার কিংবা বন্ধুদের নিয়ে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন সিলেটের বিছানাকান্দি থেকে।
প্রতিক্ষণ/এডি/জহির