সময়টা এখন সমুদ্র বিলাসের

প্রকাশঃ জানুয়ারি ৩, ২০১৭ সময়ঃ ৩:৩০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:৩০ অপরাহ্ণ

8132459216_0234274669_b

কক্সবাজার নাকি সিলেট যাব তা নিয়ে দোটানার মধ্যে পড়ে গেলাম । শেষ পর্যন্ত মনে হয় কক্সবাজার জয়ী হবে। কারণ আমার কাছে সমুদ্রসৈকত অনেক ভালো লাগে। সারি সারি ঝাউবন, বালির নরম বিছানা, সামনে বিশাল সমুদ্র। কক্সবাজার গেলে সকালে-বিকালে সমুদ্রতীরে বেড়াতে মন আমার উদাসীন হয়ে থাকে। নীল জলরাশি  আর শোঁ শোঁ গর্জনের মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকতের মাঝে আমি হারিয়ে যাই। এ মুহূর্তে ইচ্ছে করছে সমুদ্রসৈকতে পাড়ি জমাই।

কুতুবদিয়া, সোনাদিয়া, মাতার বাড়ি, শাহপরী, সেন্টমার্টিন; কক্সবাজারকে করেছে আরো আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন। এ জেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে মাতামুহুরী, বাঁকখালী, রেজু, কুহেলিয় ও নাফ নদী। পর্যটন, বনজসম্পদ, মৎস্য, শুটকিমাছ, শামুক, ঝিনুক ও সিলিকাসমৃদ্ধ বালুর জন্য কক্সবাজারের অবস্থান তাই আমার কাছে সবার উপরে।

22392114110_298e36eb83_b

সমুদ্রের যাওয়ার আগে সতর্কতা ও অন্যান্য তথ্য : সমুদ্রে নামার আগে অবশ্যই জোয়ার-ভাটার সময় জেনে নিন। ইয়াছির লাইফ গার্ডের বেশ কয়েকটি সাইনবোর্ড ও পতাকা রয়েছে বিচের বিভিন্ন স্থানে। যেখান থেকে আপনি এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পেতে পারেন। জোয়ারের সময় অবশ্যই সমুদ্রস্নান বিপজ্জনক। ভাটার টানে মুহূর্তেই হারিয়ে যেতে পারেন যে কেউ।

তাই নামার সময় বিচ এলাকার আশেপাশে দেখবেন লাল পতাকা উড়ছে কিনা। যেদিকে উড়তে দেখবেন; সমুদ্রের সে অংশে আর না নামাটাই নিরাপদ। আর যদি সবুজ পতাকা উড়ানো থাকে তাহলে
তাহলে নামতে পারেন। তবে অবশ্যই খুব বেশি দূরে চলে যাবেন না। এতে নিজের নিয়ন্ত্রণ হারানোর সম্ভাবনাতো থেকেই যায়। প্রয়োজনে পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ইয়াছির লাইফ গার্ডের
সহায়তা নিন। ওদের দেখানো অংশটিতে নামুন। শোনা যায়, সমুদ্রের কাছে যতই যাবেন সমুদ্রের পানি আপনাকে তত কাছে ডাকবে। তাই সাবধান থাকবেন। বিচে যাওয়ার পরে যদি স্পিড বোর্ডে না উঠেন তাহলে পরে আফসোস করবেন। বিচে বেশ কয়েকটি স্পিডবোড চলে; চাইলে আপনিও এগুলোতে উঠতে পারবেন।

beauty-of-coxbazar

এ বোডগুলো মেইন বিচ থেকে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত চলাচল করে। তবে ভাড়ার বিষয়ে একটু সাবধান থাকবেন। এরা সুযোগ বুঝে এক হাজার টাকার পরিবর্তে আপনার কাছ থেকে ১৫শ অথবা ২হাজার টাকাও হাতিয়ে নিতে পারে। এছাড়া লাফই জ্যাকেট পাওয়া যাবে ২৫০ টাকার মধ্যে।

বিচে কিছু বিচ বাইক নামে তিন চাকার বেশ কয়েকটি বাইক কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে চলাচল করে। প্রায় ১ কিলোমিটার দূরত্বে এসব বাইক রাউন্ড প্রতি পঞ্চাশ টাকা করে পর্যটনদের দিতে হয়।

118467592ক্সবাজারের আবাসিক ব্যবস্থা: বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও দর্শনীয় বিচ কক্সবাজারে রয়েছে আন্তর্জাতিকমানের বেশ কয়েকটি হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট। এছাড়া সরকারি ও ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় গড়ে উঠেছে ছোট বড় বিভিন্ন মানের অনেক হোটেল ও বোর্ডিং হাউস। সর্বনিম্ন ২০০টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকায় কক্সবাজারে রাতে থাকতে পারবেন।

হোটেল ভাড়া: অন্যান্য হোটেল রেস্টহাউসের ভাড়া প্রায়ই নির্ধারিত। তবে কক্সবাজার ভ্রমণের আগে ফোনে যোগাযোগ করে বুকিংমানি পাঠিয়ে আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ভালো।
সরাসরি গিয়েও কথা বলে রুম ভাড়া নেওয়া যায়।
খাওয়াদাওয়া ও রেস্টুরেন্ট: প্রায় প্রতিটি আবাসিক হোটেল বা হোটেলের কাছাকাছি রেস্টুরেন্ট বা খাবার হোটেল রয়েছে। কক্সবাজার ভ্রমণে গিয়ে পর্যটকদের বেশি আকর্ষণ থাকে সাগরের বিভিন্ন মাছের মেন্যুর প্রতি। বিশেষ করে চিংড়ি, রূপচাঁদা মাছসহ মজাদার শুটকি মাছের ভর্তার প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ বেশি থাকে।এছাড়াও আপনি আপনার মতো করে পছন্দের খাবার সংগ্রহ করে রিসোর্টে খেতে পারবেন।

বিচ ফটোগ্রাফি: আজকাল সেলফি আর গ্রুপ ফটো তোলাটা কার না ভালো লাগে। বাসায় যদি ভুলবসত কেউ ক্যামেরা রেখে যান তবে এ বিষয়ে চিন্তিত হওয়ার কোনো
প্রয়োজন নেই। কক্সবাজারে পর্যটন মৌসুমে প্রায় ১শ’জনেরও বেশি বিচ ফটোগ্রাফার পর্যটকদের ছবি তুলে থাকেন। প্রায় ঘন্টা খানেকের মধ্যেই এসব ছবি প্রিন্ট করে
নেগেটিভসহ পর্যটকদের হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা রয়েছে। লাল পোশাক পরা এসব বিচ ফটোগ্রাফারদের প্রত্যেকের রয়েছে একটি করে আইডি কার্ড।

এবার আমিতো পাড়ি জমাচ্ছি আপনি পাড়ি জমাবেন তো?

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G