সুন্দরবনের দস্যুদলের আত্নসমর্পণ
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
সুন্দরবনের দস্যুদল মাস্টারবাহিনীর প্রধান ও তার ৮ সহযোগী আনুষ্ঠানিকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্নসমর্পণ করেছেন। অস্ত্র জমা দেওয়ার দুদিন পর আজ বিকালে বাগেরহাটের মংলা বন্দরের বিএফডিসি জেটিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে অস্ত্র ও গোলবারুদ তুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে আত্মসমর্পণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
আত্নসমর্পণকারীদের মধ্যে রয়েছেন বাহিনীর প্রধান মোস্তফা শেখ ওরফে মজিদ ওরফে কাদের মাস্টার (৫০), সেকেন্ড ইন কমান্ড সোহাগ আকন (৩৭), ফজলু শেখ (৩৫), সোলায়মান শেখ (২৮), মো. শাহিন শেখ (২৮), সুমন সরকার (৩৪) ও মো. সুলতান খান (৫৮)। অপর দুজনের নাম জানা যায়নি। এদের বাড়ি বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও খুলনার বিভিন্ন এলাকায়।
এর আগে বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত ২৯ মে পূর্বনির্ধারিত ওই অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয় বলে প্রশাসন জানিয়েছিল। তবে ওইদিন ভোরে সুন্দরবনের গহীনে হারবাড়িয়ার চরাপুটিয়া এলাকায় র্যাবের কাছে ‘মাস্টার বাহিনীর প্রধান’ মোস্তফা শেখ ও তার ছয় সহযোগী আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দেন। এরপর তাদের র্যাব-৮ হেফাজতে রাখা হয়।
র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফরিদুল আলম বলেন, “মঙ্গলবার বেলা ৩টায় হেকিপ্টারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল মংলা পৌঁছেন। সোয়া ৩টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দেন মাস্টার বাহিনীর প্রধানসহ তার আট সহযোগী।”
তাদের জমা দেওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ১৮টি একনলা বন্দুক, আটটি দোনলা বন্দুক, ছয়টি পয়েন্ট টুটু বোর রাইফেল, একটি থ্রি নট থ্রি রাইফেল, তিনটি ওয়ান শুটার গান, পাঁচটি রাইফেল, দুইটি সিঙ্গেল রাইফেল, পাঁচটি শটগান, দুইটি এয়ার গান ও দুইটি শাটার গান।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দস্যুবৃত্তি যে ভুল তা মাস্টার বাহিনী বুঝতে পেরেছে। তাই তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আত্নসমর্পণ করেছে।
সুন্দরবনে অন্য যে বাহিনীগুলো এখনও দস্যুতা করছে তারাও তাদের আত্মশুদ্ধি করে মাস্টার বাহিনীর মতো আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এক্ষেত্রে সরকার তাদের সব ধরনের আইনি সহায়তা দেবে বলে জানান মন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালরা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের কাজ করতে পারে সেজন্য কোস্টগার্ডের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। এজন্য তাদের বহরে চারটি আধুনিক জাহাজ আনা হয়েছে। জনবল বাড়ানো হবে। পাশাপাশি নৌ-পুলিশ টহলেরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (গোয়েন্দা) কর্নেলর আনোয়ার হোসেন, র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ফরিদুল আলম, র্যাব-৬ এর অধিনায়ক রফিকুল ইসলাম, পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মনিরুজ্জামান, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর আলম, এসপি মো. নিজামুল হক মোল্লা প্রমুখ।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া