জহির ভূইয়া
৭ বছর পর হলেও ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ডাবল বিজয় আনন্দ পেল। মিরপুরের উইকেটে ৭ বছর আগে এই ভারতকে ওডিআই সিরিজে হারিয়ে ছিল বাংলাদেশ। দীর্ঘ ৭টি বছর পেরিয়ে যাবর পর আবারো সেই মিরপুরেই বাংলাদেশ সিরিজ জিতে নিল ভারতকে হারিয়ে ৫ রানে। ২২ গজি উইকেটে ২-০ ব্যবধানে ভারতকে হারিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ এখন চট্টগ্রাম তৃতীয় ওডিআই ম্যাচের দিকে তাকিয়ে। ৫ বারের সিরিজ মোকাবেলায় বাংলাদেশ এবার নিয়ে দ্বিতীয় বার ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে। এবার বাংলা ওয়াশের মিশন।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয়ের নিশ্চিত বাতাস ঘুরে যায় ১৩৬ রানে ৯ উইকেট পতনের ফলে। সেখান থেকে মিরাজ দলকে একা একা টেনে তুলে দাঁড় করালেন, জেতালেন ১ উইকেটে। আর আজ সিরিজ জয়ের ম্যাচে আবারো সেই মিরাজ। তবে সঙ্গী ছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। জোড়া ফিফটিতে ১৪৩ রানের জুটিতে ভর দিয়ে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ২৭১/৭। তাতে মিরাজের ওডিআই ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন, তাও আবার অপরাজিত!
টস জিতে কেন লিটন কুমার দাস আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলেন সেটা বোঝা যায় মিরাজ-মাহমুদুল্রাহর ব্যাটিং দেখে। অপরদিকে ২৭২ রানের টার্গট মিরপুরের এই উইকেটে পড়ে ব্যাট করে জমা করা কতটা কঠিন কাজ সেটা ভারতীয়রা বুঝে যায় কোহেলীর বোল্ড আউট দেখে।
পেসার এবাদত হোসেন ওপেনার কোহলীর উইকেট উড়িয়ে দিলেন দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে, স্কোর বোর্ডে রান কেবল ৭! আরেক ওপেনার শেখর দেওয়ানকে ক্যাচ দিতে বাধ্য করলেন মুস্তাফিুজর রহমান। দুই পেসারের পর সাকিব ফেরত পাঠালেন মিডল অর্ডারে নামা সান্দারকে। ভারতের সংগ্রহ মাত্র ৩৯/৩।
টাইগারদের বোলিং এতোটাই কঠিন ছিল যে বিশ্বখ্যাত ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপ ৫৬ রানের বেশি যেতে পারেনি ১৫ ওভারে। ইনিংসের ২০ ওভার শেষ হওয়া আগেই ৪র্থ উইকেট ফেলে দিলেন সেঞ্চুরি করা মিরাজ। ১৮.৩ ওভারে রাহুলকে মিরাজ ফেরত পাঠানোর ভারত ৫ম উইকেট জুটিতে সেরিয়াস আর পাটেল মিলে ২২ ওভারে দলীয় শত রান পূর্ণ করে। ২৫ ওভার শেষ ভারতের স্কোর যখন ১১৭/৪, তখন সেরিয়ামের ৬৯ বলে ফিফটি হয়ে গেছে।
কিন্তু ৫ম উইকেটে সেরিয়াস আর পাটেল মিলে দলের স্কোর নিয়ে গেল ১৭২-এ। ৮২ রান শেষ অবদি ক্যাচ দিলেন সেরিয়াস। আর ৬ষ্ঠ উইকেট প্যাটেল গেলেন ১৮৯ রানে ৩৮.৩২ ওভার শেষ। ৪০ ওভার শেষে স্কোর তখন ১৯৩/৬, তখন ভারতের সামনে ৬০ বলে ৭৯ রানের টার্গেট।৭ম জুটি ভাঙ্গতে না পারলে ম্যাচটা হাত ছাড়া হতে যাচ্ছে, সেটা পরিস্কার হয়ে যায়। ভরসা ছিল কারণ তখনও পেসার এবাদতের ৪ আর মুস্তাফিজের ৩ ওভার হাতে ছিল। সাকিব থামালেন ভারতের ৭ম জুটিকে। শারদুল ঠাকুরকে (৭ রান) সাকিব ভেল্কি দেখালেন, আর মুশফিক স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দিলেন।
৪৩ ওভারে ২০৮/৭, ৪২ বলে ৬৪ রান করা সহজ কাজ নয় মিরপুরের উইকেটে পরে ব্যাট করে। মজার বিষয় ছিল, আঘাত প্রাপ্ত অধিনায়ক রোহিত শর্মা ৮ম ব্যাটসম্যান হিসেবে নামতে বাধ্য হলেন। চাহার এক প্রান্ত ধরে রেখেছিলেন। তাকে ফেরানো ছিল জরুরী। ৪৫ ওভারে স্কোর ২১৩/৭। এবার এবাদত চাহারকে ৪৫.১ ওভারে ক্যাচ দিতে বাধ্য করলে হার-টা নিশ্চিত হয়ে যায় রোহিতদের। শেষ দিকে ৩০ বলে ৫৯ রান করতে রোহিত উত্তেজনা ছড়িয়ে দিলেন ছক্কা মারা শুরু করণেন। পর পর দুই বার রিয়াদের ওভারে রোহিতের ক্যাচ মিস! নিজের ওভারের শেষ বলে রেগে যাওয়া রিয়াদ ব্যাটসম্যান সিরাজকে বোল্ড করেই মাথা ঠান্ডা কররেন। ৪৯ ওভার শেষে রান ২৫২/৯, ৬ বলে ২০ রান। ভয়টা হচ্ছে রহিত ক্রিজে।
আবার ভরসার জায়গা পেসার মুস্তাফিজ। কিন্তু রোহিত পর পর দুই চার মেরে বসলেন। শেষ ৩ বলে ১২ রান দরাকর। ৪র্থ বলটা পারলেন না রোহিত, ৫ম বল চার আর ৬ষ্ঠ বলে ভারতের দরকার ৬ রান! কিন্তু কাটার মাষ্টারের কাটারের সামনে মাথা নত হয়ে গেল রোহিতদের। ২৬৬/৯, ৫০ ওভার ভারত।