স্বাবলম্বী নারী-বুলিনা বেগম
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:
মাত্র দুইশ টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করে নিজের দক্ষতা ও মেধা দিয়ে সুচারু কাজের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি শতাধিক নারীকে আত্ম নির্ভরশীল ও স্বাবলম্বী করে তুলেছেন বেনাপোলের এক প্রতিবন্ধী নারী- বুলিনা বেগম।
প্রতিদিন তার কাছে প্রশিক্ষণ নিতে আসছে এলাকার কিশোরী শিক্ষার্থী ও গৃহবধুরা। তার নিপুন হাতের কাজে মুগ্ধ হচ্ছেন সবাই। বাড়ছে তার তৈরি পণ্যের চাহিদা।
২০১৫ সালের ১১মার্চ জাতীয় পর্যায়ে দেশ সেরা পদকে ভূষিত করেন তাকে। আত্ম নির্ভরশীল নারীদিবসের সেমিনারে কর্মদক্ষতা পর্যাবেক্ষণ ও আত্ম নির্ভরশীল শ্রেষ্ঠ নারী হিসেবে বুলিনাকে স্বীকৃতি দেয় বাংলাদেশ সরকার।
অভাবের সংসারে মাত্র দুইশ টাকা পুঁজি নিয়ে চুমকি পুঁথি দিয়ে সেলাই ও কারুকার্যের কাজ শুরু তার। সবুজের অরণ্যে ঘেরা খড়কুটো দিয়ে ঘেরা বেড়ার মধ্যে ছোট একটি বাড়িতে বাস করেন বুলিনা বেগম। বেনাপোলের হাবিবুর রহমান হাবিবের মেয়ে তিনি।
শারীরিক প্রতিবন্ধী বুলিনার ১১ বছর আগে পাশের গয়ড়া গ্রামে বিয়ে হয়। কোল জুড়ে আসে একটি পুত্র সন্তান। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ছেলেটিও হয় শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। মা এবং ছেলে উভয়েরই হাত-পা বাঁকা এবং দুর্বল। স্বামী নাসির উদ্দিন ছেলেসহ বুলিনাকে ফেলে চলে গেছে।
তারপর থেকে তার জীবন সংগ্রাম শুরু হয়। নিজেকে আত্ম নির্ভরশীল করতে তার বুদ্ধি, কর্মদক্ষতা ও মেধা দিয়ে সুদক্ষ হাতে চুমকি, রাবার আর পুঁথি দিয়ে কারুকার্য খচিত বিভিন্ন ডিজাইনের কাজ করে চলেছেন। ব্লাউজ, শাড়ী, থ্রিপিস, ভ্যানিটি ব্যাগসহ হরেক রকম পরিধেয় ও ব্যবহার্য্য পণ্যে ডিজাইন করেন তিনি।
বাড়িতেই করেন সেলাই মেশিনের কাজ। তার হাতের সুন্দর কাজ দেখে এলাকার কয়েক শত নারী, কিশোরী ও শিক্ষার্থীরা কাজ তার কাছে শিখছেন। তার কাছে কাজ শিখে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেক নারী।
বুলিনার মা মরিয়ম খাতুন বলেন জানান, অভাবের সংসারে বুলিনা এক অসুস্থ্য মেয়ে হয়েও তার কাজ দিয়ে দেশ সেরা হয়েছে। এর মতো আর কোনো শান্তি আর কি হতে পারে। ওর এই পুরস্কার পাওয়ার মতো বড় আর কিছু হতে পারে না। তবে সরকারের আর্থিক অনুদান পেলে বুলিনা আরো বড় বড় কাজ করতে পারবে বলে আশা করেন তিনি।
প্রতিক্ষণ/এডি/আকিদ