স্মৃতিতে অম্লান ৭১’

প্রকাশঃ মার্চ ২৬, ২০১৫ সময়ঃ ১০:১১ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ

শারমিন আকতার :

 

71‘আকাশ থেকে চিলের ঝাঁক শকুন পাহাড় থেকে
সবুজ এদেশ রেখেছিল লাল চাদরে ঢেকে।
হায়নাদের রাজ্য ছিল পাক্কা নয়টি মাস
পাখির মুখে গান ছিলো না
সে এক ইতিহাস।

আজ  ২৬শে মার্চ, আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতার আজ ৪৪ বছর। তবু আজও আমাদের স্মৃতিতে অম্লান হয়ে আছে ৭১’।

আমরা ভুলে যায়নি আমাদের সেই ভাইবোনদের; যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি লাল-সবুজ পতাকা। এই পতাকাই আমাদের মুক্তির পাল; আমাদের স্বাধীনতার প্রেরণা।

যখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ২৫শে মার্চ নিরীহ মানুষের উপর রাতের অন্ধকারে মেশিনগান আর মর্টারগান চালিয়ে নিজেদের ক্ষমতার দৌরাত্য দেখানোতে ব্যস্ত ছিল তখন এই পূর্ববঙ্গের মানুষ ছিল গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।

তারা হয়ত স্বপ্নেও ভাবেনি এই কাপুরুষোচিত আচরণের কথা। তাইতো, ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ আমাদের আনন্দ-বেদনার রং দিয়ে আঁকা লাল-সবুজের ঝান্ডা  উড়িয়ে দীপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করা হয়েছিল যে, আজ থেকে আমরা মুক্ত-স্বাধীন।
তারপরতো শুরু হল পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সেই ভয়াল বিভৎস নির্যাতনপর্ব। এরইমধ্যে এই হায়েনাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এল একপাল শকুনের দল।

দু:খজনক হলেও সত্যি, এই শকুনগুলো কোন বহিরাগত নয়; তারা আমাদের এই দেশেরই মানুষ, আমাদেরই স্বজ73ন। এই গুটিকয়েক মানুষরূপী ভয়ঙ্কর কীটগুলো শকুনের মতো দেখত, শেয়ালের মতো ভাবতো আর অজগরের মতো গিলে খাওয়ার ফন্দি আঁটতো।

তারা ভেবেছিল, পাকিস্তানি মিলিটারী বাহিনীর হাতে নাস্তানাবুদ হয়ে বাংলাদেশের মানুষ চিরদিনের মতো দাসে পরিণত হবে। তাই, সময় থাকতে কেটে পড়া বুদ্ধিমানের কাজ মনে হয়েছিল তাদের।

কিন্তু এত শক্তিধর হানাদার বাহিনী আর তাদের দোসরদের বাংলার মানুষ একটি কথাই বুঝিয়ে দিতে পেরেছে বেশ পাকাপোক্তভাবেই ,

জ্বলে-পুড়ে-মরে ছাড়খার তবু মাথা নোয়াবার নয়।     

বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে তারা যমের বেশে আসত আর মৃত্যুপুরীর নিস্তদ্ধতা এনে  মৃতকূপের তিমির ছায়ায় ফেলে যেত। এ এক বিচিত্র আনন্দযজ্ঞে মেতেছিল তারা। ভেবেছিল, এটাই শেষ ছোবল। আর মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারবেনা বঙ্গবাসী। কিন্তু তারা জানতোনা, বাংলার মানুষ শেয়ালের মতো চেঁচায়না; বাঘের মতো গর্জায়।

‘আমরা তোমার শান্তিপ্রিয় শান্ত ছেলে
তবু শত্রু এলে অস্ত্র হাতে ধরতে জানি
তোমার ভয় নেই মা আমরা প্রতিবাদ করতে জানি।’

সত্যিই বাংলার মানুষ এদের অবাক করে দিয়েছিল। যে হাতে লাঙল চালাতো, সে হাতে আজ রাইফেল আর গ্রেনেড।
‘তুমি আমার আকাশ থেকে সরাও তোমার ছায়া
তুমি বাংলা ছাড়ো।
তুমি আমার বাতাস থেকে মোছো তোমার ধুলো
তুমি বাংলা ছাড়ো। ’

72পৃথিবীর মানুষ জানতে পারল,  কতটা আগুনে পুড়লে খাঁটি সোনা হয়। তাদের অভিনন্দনবাণী দিগবিদিক ছড়িয়ে গেল দমকা হাওয়ার ছদ্মবেশে-
‘সাবাস বাংলাদেশ , এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়
জ্বলে-পুড়ে-মরে ছারখার
তবু মাথা নোয়াবার নয়।’

কবি নির্মলেন্দু গুণের কবিতা’র সাথে একাত্ম হয়ে বলছি, ‘সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের ।’

স্বাধীনতার চেতনায় আজ আমরা উজ্জীবিত। আসুন আমরা সবাই আবার শপথ নিই। রক্তে রঞ্জিত লাল-সবুজের এই পতাকাকে আমরা আর কখনো পরাজিত হতে দেব না।   
‘জনতার সংগ্রাম চলবেই।
আমাদের সংগ্রাম চলবেই।’

প্রতিক্ষণ/এডি/শারমিন

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G