স্মৃতি বিজড়িত বিদ্রোহী কবির বাড়ি

প্রকাশঃ আগস্ট ২৭, ২০১৫ সময়ঃ ৪:৪৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:০৩ পূর্বাহ্ণ

বিদ্রোহীঢাকা থেকে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল ১১০ কিলোমিটারের পথ। ত্রিশালে রয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বাড়ি এবং রয়েছে স্মৃতি বিজড়িত দরিরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়। যা বর্তমানে ‘নজরুল একাডেমি’ নামে খ্যাত। নজরুল এ স্কুলে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশোনা করেছেন। নজরুল যে দুটি শ্রেণীকক্ষে পড়তে বসতেন, তার একটির সামনে মর্মর পাথরে খোদাই করে রাখা হয়েছে কবির নিজ হাতে লেখা ‘আমি এক পাড়াগেঁয়ে স্কুল পালান ছেলে, তার ওপর পেটেডুবুরি নামিয়ে দিলেও ‘ক’ অক্ষর খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্কুলের হেড মাস্টারের চেহারা মনে করতেই আমার আজও জলতেষ্টা পেয়ে যায়’।

অল্প কিছু পথ এগিয়ে গেলে সামনে নজরুল ডাকবাংলো। এর সঙ্গেই নজরুল মঞ্চ, যেখানে কবি নজরুলের জন্মজয়ন্তি ১৯৬৪ সাল থেকে প্রতিবছর পালিত হয়ে আসছে। মঞ্চের পশ্চিম দিকে পাথরে খোদাই করা আছে কবি নজরুলের সংক্ষিপ্ত জীবনী। তা পড়ে নজরুলপ্রেমীরা নজরুল সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য পাবেন।

বিদ্রোহীআবার অল্প কিছু পথ এগুলে চোখে পড়বে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নামাপাড়ার বটতলা। স্কুল পালিয়ে নামাপাড়া এ বটগাছের নিচে কবি নজরুল আপন মনে বাঁশিতে সুর তুলতেন। এ বৃক্ষের পাশেই দেশের প্রথম ও একমাত্র সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয়। ত্রিশাল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।

ঘুরতে ঘুরতে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে চলে যাবেন, বিচুতিয়া বেপারী বাড়ি, অল্প সময়ের পথ। এ বাড়িতে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে কিছু দুর্লভ ছবি। যুদ্ধ ফেরত নজরুলের ছবি, তিন বন্ধু অধ্যাপক হেমন্ত সরদার, হাবীবুল্লাহ বাহার ও নজরুলের ছবি। চুরুলিয়ার যে গৃহে নজরুল জন্মগ্রহণ করেন সে ছবি, কৃষ্ণনগরে-নজরুল পরিবার, নজরুলের কোলে শিশুপুত্র বুলবুল, কবিপত্নী-প্রমীলার ছবি, বংশীবাদনরত নজরুল, ধ্যানমগ্ন কবি, হাবিলদার বেশে নজরুল ২১ বছর বয়সে, সঙ্গীত স্রষ্টা নজরুল, কিশোর ও মধ্য বয়সে নজরুলের ছবি এখানে রয়েছে। এছাড়া গ্রামোফোন, বৈদ্যুতিক এলপি রেকর্ডারসহ আরও অনেক কিছু দেখে এখান থেকে রওনা হয়ে যাবেন কাজীর শিমলা দারোগা বাড়ি ২০ মিনিটের পথ।

বিদ্রোহীকাজীর শিমলা দারোগা বাড়ি যেখানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের  প্রথম পদার্পণ ঘটেছিল। কিশোর নজরুলের সুকুমার চেহারা, নম্র স্বভাব ও প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে কাজী রফিজউল্লাহ দারোগা ১৯১৪ সালে আসানসোলের রুটির দোকান থেকে কিশোর কবি নজরুলকে কাজীর শিমলায় নিজ গ্রামে নিয়ে আসেন। প্রথমে এই দারোগা বাড়িতেই অবস্থান করেন কবি। এখানে রয়েছে দ্বিতলবিশিষ্ট নজরুল পাঠাগার ভবন। এই পাঠাগারে কবিতা ও গানের বই রয়েছে। এ বাড়িতে আছে কবির ব্যবহৃত খাট। কবির প্রিয় পুকুর ঘাঁটটি, যেটি শান দিয়ে বাঁধানো। দেখতে খুবই সুন্দর।

দেখতে দেখতে মনে পড়ে যাবে কবির প্রতিরোধ চেতনায় লেখা- ‘বল বীর উন্নত মমশির, যে দিন উৎপীড়িতের ক্রন্দন রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, আমি সেই দিন হব শান্ত, বল বীর উন্নত মমশির’ কবিতার লাইনগুলো। ত্রিশাল ভ্রমণের স্মৃতি আপনার মনের গহিনে থাকবে চিরকাল।

 

প্রতিক্ষন/এডমি/এফজে

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G