হাইকোর্টের আরও একটি রুলের নোটিশ খালেদার কার্যালয়ে
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডট কম
হরতাল-অবরোধ বন্ধ, হরতাল-অবরোধে এসএসসি পরীক্ষা ও স্কুল কলেজ কেন খোলা রাখা হবে না- সে বিষয়ে জানানোর জন্য হাইকোর্টের দেওয়া একটি রুলের নোটিশ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে পৌঁছেছে।
শনিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হাইকোর্ট শাখার এমএলএসএস মো. হেলাল উদ্দিন একটি রিট (নং-১৩৯৯) আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের রুলের নোটিশটি গুলশান কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখার একজন কর্মকর্তা নোটিশটি গ্রহণ করেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, রুলের নোটিশ গ্রহণ করা হয়েছে। নোটিশটি দেখে আইনজীবীর মাধ্যমে তার জবাব দেওয়া হবে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কেরাণীগঞ্জের ইস্পাহানি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ব্যবসায়ী মো. সাইফুর রহমান বারকু বাদী হয়ে রিট আবেদনটি করেন। শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন।
এর আগে শুক্রবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সোয়া ৫টায় সুপ্রিম কোর্টের রিট সেকশনের এমএলএস মো. হুমায়ুন ইসলাম খান একই দিন একই বিষয়ে একই বেঞ্চের জারি করা পৃথক একটি রুলের নোটিশ পৌঁছে দেন খালেদার কার্যালয়ে, যেটি গ্রহন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।
ওই রুলে আদালত হরতাল-অবরোধের নামে হুমকি, সহিংসতা এবং ৫ জানুয়ারির অবরোধ ডাকা এবং তা অব্যাহত রাখাকে কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চান। কেরাণীগঞ্জেরই আরেক ব্যবসায়ী শাহীনুর রহমান শাহীন হাইকোর্টে রিটটি আবেদন করেন।
২০ দলীয় জোটের চলমান অবরোধ-হরতালে নাশকতার চিত্র তুলে ধরে হরতাল-অবরোধে সন্ত্রাস, নাশকতা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রিট আবেদন দু’টি করা হয়। ওইদিন পৃথক ওই দুই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চটি হরতাল-অবরোধের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সহিংসতা, নাশকতা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারকে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নির্বিঘ্ন করতে এবং পরীক্ষায় বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
জারি করা রুলে আদালত হরতাল-অবরোধের নামে মানুষ হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ধ্বংস এবং সহিংসতাকে কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চান। পাশাপাশি হরতাল-অবরোধের নামে হুমকি, সহিংসতা এবং ৫ জানুয়ারির অবরোধ ডাকা এবং তা অব্যাহত রাখাকে কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা-ও জানতে চান।
এছাড়া, ৫ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত হরতাল-অবরোধে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে ২০ দলীয় জোটনেতা খালেদা জিয়াসহ হরতাল আহবানকারীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা-ও জানতে চান আদালত।
অন্যদিকে রুলে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে হরতাল বা অবরোধ দেওয়াকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে হরতাল বা অবরোধ বন্ধে কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশ দেওয়া হবে না- জানতে চান আদালত।
রিটে বিবাদী করা হয়, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র্যাবের মহাপরিচালক, বিজিবির মহাপরিচালক, ডিএমপি কমিশনার, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিকল্পধারার সভাপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীসহ ১৬২ জনকে।
চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের এসব রুলের জবাব দিতে বলেছেন আদালত।
প্রতিক্ষণ/এডি/নয়ন