হাইকোর্টে ব্যাপক রদবদল: ৩২টি বেঞ্চ পুনর্গঠন
আদালত প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ৩২টি বেঞ্চ গঠন ও পুনর্গঠন করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা আজ বৃহস্পতিবার এসব বেঞ্চ গঠন ও পুনর্গঠন করেন।
এরমধ্যে ২৬টি দ্বৈত, ৫টি একক এবং একটি তিন সদস্যের বেঞ্চ রয়েছে। আগামী ২৬ জানুয়ারি থেকে এসব বেঞ্চে বিচারিক এখতিয়ার অনুসারে কার্যক্রম শুরু হবে।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার এসএম কুদ্দুস জামান বলেন, ‘জনগুরুত্বপূর্ণ মামলা শুনানি ও নিষ্পত্তির বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ পুনর্গঠন করেছেন। রোববার থেকে এসব বেঞ্চ বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।’
তিনি জানান, বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চকে দেওয়ানি মোশন, প্রথম আপিল এবং দেওয়ানি রুল; বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চকে সব ধরনের রিট; বিচারপতি সৈয়দ এবি মাহমুদুল হক ও বিচারপতি কাশেফা হোসেনের বেঞ্চকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ফৌজদারি আপিল, রিভিশন বিষয়াদি; বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি একেএম সাহিদুল হকের বেঞ্চকে শ্রম আদালত, ভ্যাট, কাস্টমস সংক্রান্ত রিট; বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও মো. আতাউর রহমান খানের বেঞ্চকে ফৌজদারি আপিল ২০০৮ পর্যন্ত রিভিশন; বিচারপতি ফরিদ আহম্মদ ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চকে দেওয়ানি মোশন, প্রথম আপিল, ছয় লাখ টাকার ঊর্ধ্বমানের বিবিধ আপিল; বিচারপতি শামীম হাসনাইন ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চকে সকল প্রকার রিট শুনানি এবং নিষ্পত্তির বিচারিক এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে।
রেজিস্ট্রার কুদ্দুস জামান জানান, বিচারপতি মো. আবু তারেকের একক বেঞ্চকে ফৌজদারি মোশন, আপিল; বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি হাবিবুল গণি সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চকে সকল প্রকার রিট; বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের একক বেঞ্চকে আদিম অধিক্ষেত্র (বিবাহ বিচ্ছেদ, ট্রেডমার্ক প্রমুখ); বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি আবদুর রবের বেঞ্চকে ফৌজদারি আপিল ও রিভিশন; বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি রুহুল কুদ্দুসের বেঞ্চকে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ভ্যাটসহ বিভিন্ন বিষয়াদি; বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মাহমুদুল হকের বেঞ্চকে সেটেলমেন্ট আদালত, শ্রম আদালত, অর্থঋণ আইন হতে উদ্ভূত রিট বিষয়াদি; বিচারপতি শহীদুল ইসলাম ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের বেঞ্চকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ফৌজদারি আপিল; বিচারপতি মো. আবদুল হাই ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চকে পুরাতন ফৌজদারি আপিল ২০১২ সাল পর্যন্ত বিষয়াদি, রুল, আবেদনপত্র; বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দ্র চন্দ্র ঠাকুরের বেঞ্চকে ফৌজদারি মোশন, মঞ্জুরীকৃত আপিল, জামিনের আবেদনপত্র বিষয়াদি শুনানি এবং নিষ্পত্তির বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সকল প্রকার রিট; বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বেঞ্চকে সকল প্রকার রিট; বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের বেঞ্চকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কনফারমেশনের রেফারেন্সসহ তৎসংক্রান্ত বিষয়াদি; বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের বেঞ্চকে ফৌজদারি মোশন বিষয়াদি শুনানি এবং নিষ্পত্তির জন্য বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
রেজিস্ট্রার কুদ্দুস জামান জানান, বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি সহিদুল করিম সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চকে শ্রম আদালত, ভ্যাট, কাস্টমস সংক্রান্ত রিট মোশন; বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চকে সকল প্রকার রিট বিষয়াদি; বিচারপতি একেএম আবদুল হাকিম ও বিচারপতি এএনএম বসির উল্লাহ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চকে ছয় লাখ টাকা ঊর্ধ্বমানের প্রথম আপিল, দেওয়ানি রিভিশন, দেওয়ানি রুল, লয়াজিমা বিষয়াদি; বিচারপতি মো. বোরহান উদ্দিনের একক বেঞ্চকে অনূর্ধ্ব ছয় লাখ টাকা মানের সহকারী জজ আদালতের আদেশ, ডিক্রি; বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের বেঞ্চকে ফৌজদারি মোশন, জেল আপিল; বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি হাসানের বেঞ্চকে দুদক আইনের অধীন মামলার রায়সহ তৎসংক্রান্ত রিট, ফৌজদারি মোশন; বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের বেঞ্চকে ভ্যাট, কাস্টমস, সিকিরিটিজ এক্সচেঞ্জ বিষয়াদি; বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফরিদ আহমেদের বেঞ্চকে ভ্যাট, কাস্টমস, এমপিও, শিক্ষকদের চাকরি, শ্রম আইন, শ্রম আদালত সংক্রান্ত রিট; বিচারপতি মো. শওকত হোসেন ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের বেঞ্চকে ফৌজদারি কার্যবিধি ৪৩৯, ৫৬১ ধারামতে মোশন বিষয়াদি এবং বিচারপতি মো. শওকত হোসেন, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী এবং বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের বেঞ্চকে ডেথ রেফারেন্স বিষয়াদি শুনানি এবং নিষ্পত্তির বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের একক বেঞ্চকে সহকারী জজ ব্যতীত অন্য বিচারকের ডিক্রি আদেশের বিরুদ্ধে অনূর্ধ্ব ছয় লাখ টাকা ও সহকারী জজ নিরপেক্ষ দেওয়ানি রিভিশন মামলা; বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের একক বেঞ্চকে আদিম অধিক্ষত্র (সাকশেসন আইন, বিবাহ বিচ্ছেদ, অ্যাডমিরালেটি কোর্ট প্রমুখ) বিষয়াদি শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে বলে জানান রেজিস্ট্রার কুদ্দুস জামান।
প্রসঙ্গত, নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতির কার্যসময়ে এই প্রথম হাইকোর্টের বেঞ্চ গঠন ও পুনর্গঠন করা হয়েছে। এই ৩২ বেঞ্চের বাইরেও হাইকোর্টে কমপক্ষে আরও ২০টি বেঞ্চ রয়েছে, যা আগের বিচারিক এখতিয়ার অনুসারে পরিচালিত হবে।
প্রতিক্ষণ/এডি/বাবর