হিমালয় কন্যার নৈসর্গিক রুপ দর্শন
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:
হিমালয়ের কোল ঘেষে অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি দেশ নেপাল। যেখানে উন্নত নাগরিক সভ্যতার মধ্যেও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের এক বিরাট অনুভূতি মিলবে।
এখানে ঘুরে অন্যরকম এক প্রশান্তি পাওয়া যায়। চারদিকে সবুজ পাহাড়, মন্দির, স্বচ্ছ হ্রদ, সারি সারি সবুজ ভ্যালি, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র, পাহাড় কিংবা তাদের রাজপ্রাসাদগুলো। সব কিছুতেই মুগ্ধতা, যেন পৃথিবীর বুকে এক টুকরো ।
নেপালে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো মার্চ-এপ্রিল অথবা অক্টোবর-নভেম্বর। এ সময় অল্প গরম থাকে এবং ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। বর্ষাকাল বা গরমকালে নেপালে পর্যটকদের জন্য ঘুরে বেড়ানোটা কঠিন হয়ে যায়। ভ্রমণের জন্য নেপাল একরকম শান্তির দেশ। পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের পছন্দের স্থানগুলোতে ঘোরাফেরা করতে পারেন।
কিভাবে যাবেন
নেপালে আপনি সরাসরি বিমানে যেতে পারেন। এজন্য আপনাকে ট্যুরিস্ট ভিসা সংগ্রহ করতে হবে, অর্থাৎ কাঠমান্ডু এয়ারপোর্টে একটি ফরম পূরণ করলেই ওরা আপনার পাসপোর্টে সিল মেরে দেবে। সার্কভুক্ত দেশসমূহের নাগরিকদের জন্য বছরে প্রথমবার কোনো ভিসা ফি লাগবে না। আবার সড়কপথে শিলিগুঁড়ি থেকে কাঁকরভিটা হয়ে নেপালে যাওয়া যায়। কিন্তু সড়কপথে যেতে হলে নেপাল এবং ভারতের ভিসা নিতে হবে। তবে এ পথেও নেপালের কোনো ভিসা ফি নেই।
যা করবেন :
এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি ট্যাক্সি করে যাবেন নির্ধারিত স্থানে, মানে হোটেলে, ভাড়া নির্ধারিত। আর কোনো তাড়া না থাকলে ম্যাপ দেখে হেঁটে হেঁটে যাবেন, কিন্তু অনেক দূর। আশপাশে ঘুরতে বের হবেন ট্যাক্সিতে করে অথবা হেঁটে ঘুরতে পারেন। বাইসাইকেলও ভাড়ায় পাওয়া যায়।
এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে টেক্সিওয়ালাদের হাঁক-ডাকে কান না দিয়ে প্রথমে এয়ারপোর্টে আপনি আপনার বুকিং করা হোটেলে উঠবেন। তাও যদি ঠিক না করা থাকে তাহলে, কাঠমান্ডুর থামেল এলাকায় টুরিস্টদের জন্য অনেক হোটেল রয়েছে। থামেলের রাস্তার যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই হোটেল পাবেন। হোটেলের খরচ বাংলাদেশের চেয়ে সস্তা। কাঠমান্ডুতে বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে দেখে নেবেন হোটেলে জেনারেটর সুবিধা আছে কিনা।
কেনাকাটা
থামেলে অসংখ্য আউটডোর পণ্যের দোকান পাবেন, খুব সাবধান, ৯৯ ভাগ দোকানেও যেসব ব্রান্ডেডপণ্য দেখবেন সবই নকল। আসল পণ্য কিনতে হলে তাদের ব্র্যান্ড শোরুমে যাবেন, নর্থফেস, ডয়টার, ব্ল্যাক ডাইমন্ড ইত্যাদির বড় শোরুম আছে। শোরুমগুলোতে জ্যাকেট, প্যান্ট, গোরটেক্সে জ্যাকেট বা জুতা ইত্যাদি যাবতীয় পণ্যের সমাহার। নর্থফেসের শোরুমে ট্রেকিং বুট পাবেন, সব দোকানে সবই (সো কলড) কাশ্মীরি শাল পাওয়া যাবে, কাজেই বুঝে-শুনে কেনাকাটা করবেন।
প্রসেসিং পদ্ধতি
সার্কভুক্ত দেশ হওয়ায় আমাদের দেশ থেকে নেপাল যেতে তেমন ভোগান্তি পোহাতে হয় না। নেপালের ভিসা সহজেই পাওয়া যায়। এশিয়ার যে কোনো দেশের তুলনায় নেপালের ভিসা প্রসেসিং সহজ। আমাদের দেশের নেপাল অ্যাম্বেসিতে যাবেন কাঠমান্ডু এয়ারপোর্টের একটা ফরম পূরণ করলেই ওরা আপনার পাসপোর্টে সিল মেরে দেবে। আবার ওখানে গেলে নেপালে ‘অন এরাইভাল’ ভিসা নেওয়া যায় নেপালের এয়ারপোর্ট থেকে। তাই আগে থেকে ভিসা না নিলেও হয়। কাগজপত্র ঠিক থাকলে ঝামেলা হবে না। ট্রানজিট ভিসা পাবেন ১৫ দিনের জন্য। নেপালি ভিসা পাবেন ৩০ দিনের জন্য।
যেখানে খাবেন
নেপালে খাবার খরচ আমাদের দেশের তুলনায় সস্তা। কাঠুমান্ডুর রাস্তায় বেরুলেই অসংখ্য খাবারের দোকান ও রেস্টুরেন্ট দেখতে পাবেন। এ ছাড়া দেশি-বিদেশি অনেক হোটেল-রেস্টুরেন্ট রয়েছে সেখানে।
যা যা দেখবেন
হিমালয় পর্বতের দেশ নেপালে ভ্রমণের জন্য রয়েছে অসংখ্য সুন্দর ট্যুরিস্ট প্লেস। আপনি একবার এসে ঘুরে গেলে দেখতে পাবেন সেই নান্দনিক সৌন্দর্যের স্থান। এয়ারপোর্টে কাঠমান্ডুর ট্যুরিস্ট ম্যাপ বিনামূল্যে পাবেন। অবশ্যই সঙ্গে একটি ম্যাপ রাখবেন। ফিউয়া লেক অসম্ভব সুন্দর, এখানে ছোট ছোট নৌকা নিয়ে ঘোরা যায়। আপনার ভ্রমণের সঙ্গী হিসেবে পাবেন বহুদেশ থেকে আগত বিদেশী।
প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল