হুইল চেয়ার থেকে বিয়ের দিন উঠে দাঁড়ালেন প্যারালাইজড কনে!

প্রকাশঃ অক্টোবর ২৬, ২০১৬ সময়ঃ ১১:১০ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:২১ অপরাহ্ণ

image0নাম জ্যাকি গোনশার। বয়স ২৫। জর্জিয়ার এই মেয়ের জীবনের আটটা বছর কেটে গিয়েছে হুইলচেয়ারে বসে থেকে। ১৭ বছর বয়সে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন যে।

কিন্তু সুইমার জ্যাকি কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারতেন না নিজের অক্ষমতা। নিজের মধ্যে জমতে থাকা হতাশাকেই তিলে তিলে বদলাতে থাকেন সাহসে, শক্তিতে।

ভিতরের সেই জেদই সবাই দেখল তাঁর বিয়ের দিন। হুইলচেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন, আট বছরে প্রথম বার হাঁটলেন জ্যাকি। আবেগঘন সেই মুহূর্ত যেন অবিশ্বাস্য তাঁর পরিবারের কাছে। বিয়ের অ্যালবাম দেখতে দেখতেই পড়ে নিন জ্যাকির জীবনের গল্প।

মাত্র ১৭ বছর বয়সে সাঁতার কাটতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। গলার নীচ থেকে প্যারালাইজড হয়ে যায় জ্যাকির গোটা শরীর। চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছিলেন আর কোনও দিনই হাঁটতে পারবেন না জ্যাকি।

প্রথম দিকের দিনগুলো জ্যাকির কাছে অসহ্য হয়ে উঠেছিল। অ্যাথলিট হিসেবেই বড় হয়ে
ওঠা জ্যাকি মেনে নিতে পারছিলেন না এক্সারসাইজ করার সব ক্ষমতা হারিয়েছেন তিনি।

‘‘প্রথম দিন যে দিন জিমে গেলাম, একটা স্টেশনারি বাইকে বসেছিলাম আমি। পা দিয়ে চালানোর ক্ষমতা ছিল না।
বাইকটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল।’’ এক নাগাড়ে স্মৃতিচারণা করে যাচ্ছিলেন জ্যাকি। ‘‘খুব ভেঙে পড়েছিলাম।im4 জিমের মেশিনে মাথা রেখে শুধু অঝরে কেঁদেছিলাম।’’ বিয়ের আসরেই সেইসব দিনের কথা মনে করছিলেন জ্যাকি। আবার জিমে যাওয়ার শক্তি, সাহস সঞ্চয় করতে অনেক দিন লেগেছিল জ্যাকির।

‘‘বিয়ের দিন সবাইকে সুন্দর লাগে, এই দিনের অনুভূতিটাই খুব সুন্দর। সবাই বলেছিল হুইলচেয়ারে বসেই আমি অপূর্ব সুন্দর দেখাবো।image
কিন্তু আমি নিজেকে সে ভাবে ভাবতে পারিনি।’’ কথাগুলো বলতে বলতে বিহ্বল হয়ে পড়ছিলেন জ্যাকি। অনুষ্ঠানে যখন হুইলচেয়ারে করে আসেন জ্যাকি তথন কেউই অবাক হননি তাঁকে দেখে। এমনটাই তো হওয়ার কথা ছিল।

৮ বছর পর বিয়ের আসরে হঠাত্ই মা আর দাদুর হাত ধরে হুইলচেয়ার থেকে উঠে হাঁটতে শুরু করেন জ্যাকি। বর অ্যান্ডি গোনশার আগে থেকেই এই সারপ্রাইজের কথা জানলেও তখন চেপে রাখতে পারেননি চোখের পানি।

জ্যাimag5কিকে হাঁটতে দেখে সকলের চোখেই তখন পানি । বিয়ের মাত্র এক বছর আগেও ৩০ মিনিটের বেশি দাঁড়িয়ে থাকতে পারতেন না জ্যাকি। ৪৫ মিনিট চলে বিয়ের অনুষ্ঠান। পুরো সময়টাই দাঁড়িয়ে ছিলেন জ্যাকি।
এরপর ৫ ঘণ্টার রিসেপশনের বেশির ভাগ সময়টাও দাঁড়িয়েই কাটান তিনি। শুধু হাঁটা নয়, বিয়ের আসরে নাচলেনও জ্যাকি। নাচের সময় স্বামীর ওপর ভরসা রেখেছিলেন জ্যাকি। বলেন, গোটা জীবনটাই তো ওকে অবলম্বন করেই কাটাতে চলেছি। বিয়ের আসরে মেয়ের নাচের মুহূর্ত বিশেষ ভাবে স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছিলেন মা।
ডেকে আননে পেশাদার এক শিল্পীকে। জলরঙে তিনিই ফুটিয়ে তোলেন জ্যাকির ওয়েডিং ডান্স। এই বিশেষ দিনের জন্য জ্যাকি বেছে নিয়েছিলেন ব্লাশ গাউন আর মারমেড গ্রিন চুল।

‘‘বিয়ের আসরে খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। বিশ্বাসই হয় না যে আমি নিজেরা পায়ে হাঁটছি।’’ কথাগুলো বলার সময়ও চোখের কোন চিকচিক করছিল জ্যাকির। এ ভাবেই হুইলচেয়ারকে পিছনে ফেলে পায়ে হেঁটেই জীবনে এগিয়ে যেতে চান জ্যাকি।

 

 

প্রতিক্ষণ/এডি/তাজিন

 

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G