হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখতে ৬ টি অভ্যাস
কার্ডিওভাস্কুলার সমস্যা জনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। হৃদপিণ্ডের অসুস্থতা জনিত সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগতে থাকেন অনেকেই। হৃদপিণ্ডের সমস্যা আজকাল বয়সজনিত কোনো সমস্যা নয়, অনেক কম বয়সি মানুষও হৃদপিণ্ডের সমস্যায় ভুগে থাকেন এবং মৃত্যুমুখে পতিত হন।
সুস্থ হৃদপিণ্ড আমাদের সুস্থ জীবনের অন্যতম চাবিকাঠি। আমাদের জীবনযাপন এবং খাদ্যাভ্যাস সবকিছুর প্রভাব আমাদের হৃদপিণ্ডের উপরে পড়ে। সুতরাং আমাদের হৃদপিণ্ডের সুস্থতা অনেকাংশে আমাদের জীবনযাপনের সাথে সম্পৃক্ত। আজকে চলুন জেনে নিই এমন কিছু সু-অভ্যাসের কথা যা চিরকাল আমাদের হৃদপিণ্ডের সুস্থতা নিশ্চিত করবে।
১. শারীরিক পরিশ্রমের জন্য প্রতিদিন কিছুটা সময় বের করুন
ব্যস্ততার কারণে ব্যায়াম এবং শারীরিক পরিশ্রমটাকে আমরা বেশ অবহেলাই করে থাকি। কিন্তু এটি আমাদের হৃদপিণ্ডের অনেক বেশি ক্ষতি করে। দিনে মাত্র ৩০ মিনিটের শারীরিক পরিশ্রম নিশ্চিত করবে হৃদপিণ্ডের সুস্থতা। যদি সকালে উঠে ১০-১৫ মিনিট হেঁটে নিতে পারেন, ঘরের কিছু কাজ নিজে করতে পারেন, কাজের ফাঁকে একটু উঠে দাড়িয়ে, বসে ব্যায়াম করে নিয়ে, অফিস থেকে ফেরার পথে হাঁটেন তাহলেই কিন্তু আপনার শারীরিক পরিশ্রমের বিষয়টি সঠিকভাবেই হয়ে যায়। এতে করে হৃদপিণ্ড থাকে সুস্থ।
২. যতটা সম্ভব নিজেকে চাপ মুক্ত রাখুন
ইদানিংকার দুর্মূল্যের জীবনে মানসিক চাপ মুক্ত থাকা বেশ দুঃসাধ্য ব্যাপারই বটে। কিন্তু নিজের সুস্থতা চাইলে এবং হৃদপিণ্ডে সুস্থ রাখতে চাইলে এই অসম্ভবকেও সম্ভব করে তুলতে হবে। কারণ মানসিক চাপের অনেক খারাপ প্রভাব পড়ে আমাদের হৃদপিণ্ডের ওপর। তাই মানসিক চাপটাকে একটু নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, পছন্দের কাজ করা, পছন্দের গান শোনা ধরণের কাজ করতে হবে।
৩. শরীরের ওজন রাখুন নিয়ন্ত্রনে
ওজন বাড়া এবং দেহে মেদ জমা কার্ডিওভ্যস্কুলার রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। অতিরিক্ত ওজন হৃদপিণ্ডের উপর অনেক বাড়তি চাপ ফেলে, এতে ধীরে ধীরে হৃদপিণ্ড নিজের কর্মক্ষমতা হারাতে থাকে। তাই নিজের ওজনটার দিকে একটু বিশেষ নজর দিন এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের যথাসাধ্য চেষ্টা করুন।
৪. ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করুন
কার্ডিওভ্যস্কুলার স্পেশালিষ্টদের মতে, ‘ধূমপান কার্ডিওভ্যস্কুলার রোগের ঝুঁকি প্রায় ৪ গুণ বাড়িয়ে তোলে’। গবেষণায় দেখা যায় ধূমপানের ফলে হৃদপিণ্ড জনিত সমস্যা বেড়ে যায় প্রায় ৩০%। তাই ধূমপান না করার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং ধূমপান ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করুন।
৫. খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন
আমাদের খাদ্যাভ্যাসের কারণেও হৃদপিণ্ড ধীরে ধীরে কর্মক্ষমতা হারাতে থাকে। তাই নজর দিতে হবে খাদ্দতালিকার দিকেও। ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার যতোটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। কলেস্টোরলযুক্ত খাবার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিন। লবণ এবং অতিরিক্ত সোডিয়াম যুক্ত খাবার পরিমিত খান, মাছ এবং মাছের তেল রাখুন খাদ্যতালিকায়।
৬. নিয়মিত চেকআপ করান
বয়স ভিত্তিতে বছরে ২/১ বার ডাক্তারের কাছে যান নিয়মিত চেকআপের জন্য। বিশেষ করে বংশে কারো কার্ডিওভ্যস্কুলার রোগ জনিত সমস্যা থাকলে একটু বিশেষ নজর দিন। এতে করে হয়তো কোনো রোগ মারাত্মক আঁকার ধারণ করার আগেই চিকিৎসা করে সারিয়ে তোলা সম্ভব হবে।
প্রতিক্ষণ/এডি/মাসুদ