১০৬ বছর বয়সে বাগদান

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭ সময়ঃ ৫:২৩ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:৫৮ অপরাহ্ণ

106 year
ভাল্দেমিরা রদ্রিগেজ ডি অলিভারিয়া। ১০৬ বছর বয়সী বৃদ্ধা। থাকেন ব্রাজিলের একটি বৃদ্ধাশ্রমে। সম্প্রতি ৬৬ বছর বয়সী অ্যাপারেচিডো ডিয়াজ জ্যাকবের সাথে তাঁর বাগদান সম্পন্ন হল। তাঁরা একে অপরকে আদর করে ডাকে ভালদা ও জ্যাকো।

দুজনের সম্মিলিত বয়স ১৭২ বছর। এ যুগলের অবশ্য বিয়ে করারই ইচ্ছে ছিল। কিন্তু বাধ সাধে ডাক্তাররা। স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে সাফ জানিয়ে দেয় এই বয়সে বিয়ে করা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাছাড়া বিয়ের পর বৃদ্ধাশ্রম ছেড়ে আলাদা বাসা নিয়ে থাকার যে পরিকল্পনা তাঁরা সাজিয়েছিল সেটাতো কোনমতেই সম্ভব না- বেরসিক ডাক্তারদের অভিমত। অগত্যা বাগদান পর্যন্তই সন্তুষ্ট থাকতে হল বয়োজ্যেষ্ঠ এই প্রেমিক-প্রেমিকাকে। তবে বাকি জীবন বৃদ্ধাশ্রমেই একসাথে কাটাবে তাঁরা।

দক্ষিণ পূর্ব ব্রাজিলের পিরাসুনুঙ্গা শহরের একটি বৃদ্ধাশ্রমে তাঁদের প্রথম দেখা হয়। প্রথম দেখাতেই একে অপরের প্রেমে পড়ে যান। তিন বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর তাঁদের এই বাগদান। আর প্রমাণ করে দেন, সত্যিকারের প্রেমের কোন বয়স নেই।

‘প্রজেক্ট অফ ড্রিমস’ নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে তাঁদের বাগদানের অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়। চারতলা কেক, কিউপিডের মূর্তি, ফুলের অলংকার আর গোলাপের পাপড়ি দিয়ে সাজানো হয় বৃদ্ধাশ্রম।

ভালদা একটি সাদা পোশাক পরিধান করে। চুলে ছিল সাদা রঙের ঝালর। গলায় পরিধান করে মুক্তার মালা। রেনান ও ইসাবেলা নামের দুই ১২ বছর বয়সী কিশোর কিশোরী ভালদাকে সঙ্গ দেয়।

ব্যান্ডদল তখন বিয়ের বাদ্য বাজাচ্ছিল। কালো রঙের একটা স্যুট পড়ে অনুষ্ঠানে আসে জ্যাকো। ১৫০ জন অতিথির সামনে এই বাগদান সম্পন্ন হয়। ছোট্ট একটু আলোচনা ও প্রার্থনার পর তাঁরা বাকি জীবন একে অপরের সাথে কাটাবার অঙ্গীকার করে। তারপর হয় আংটি বদল।

ব্রাজিলে বাগদানের আংটি পরিধান করা হয় ডান হাতের তৃতীয় আঙ্গুলে। বিয়ের সময় এই আংটিটা বাম হাতের অনামিকায় স্থানান্তরিত হয়।

‘প্রজেক্ট অফ ড্রিমস’ সংগঠনের উদ্যোগে বৃদ্ধাশ্রমের অধিবাসীদের ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞেস করা হয়, জীবনে কারো কোন সাধ অপূর্ণ রয়ে গেছে কিনা। থাকলে তা কিভাবে তাঁরা পুরন করতে চান। তখন ভালদা এবং জ্যাকো দুজনেই বিয়ে করার কথা স্বেচ্ছাসেবীদের জানান। কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শে বিয়ের বদলে বাগদানের আয়োজন করা হয়।

জ্যাকো ১৯ বছর আগে এই বৃদ্ধাশ্রমে বসবাস করার জন্য আসেন। তখন তিনি ছিলেন বেকার আর গৃহহীন।  ভালদার সাথে বাগদানের পর জ্যাকোর যেন সোনালি সময় কাটছে। একসাথে খাওয়া দাওয়া করে, গল্প আর খুনসুটিতে মেতে উঠে চমৎকারভাবে বাগদান উদযাপন করছেন এই জুটি।

প্রতিক্ষণ/এডি/নাজমুল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G