২০১৭ সালেই কি পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে?
পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে- এমন ভবিষ্যৎবাণী এ পর্যন্ত কম করা হয়নি। কিন্তু সব জল্পনা-কল্পনাকে মিত্থা প্রমাণিত করে ৬০০ কোটি মানুষ নিয়ে বহাল তবিয়তে বেঁচে আছে সৌরজগতের অন্যতম গ্রহটি। তবে এবার একদল উগ্রবাদী খ্রিস্টান দাবী করছে ২০১৭ সালের মধ্যেই পৃথিবী ধ্বংস হবে এবং এ ব্যাপারে তাদের কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই। নিজেদের ভবিষৎবাণীকে সত্য প্রমাণিত করে একের পর এক যুক্তি দাঁড়া করাচ্ছেন তারা।
সারা বিশ্বেই পরপর বেশ কিছু ভুমিকম্প আঘাত হেনেছে। নিউজিল্যান্ডের উপকূলে শত শত তিমির মৃতদেহ ভেসে উঠেছে। এই সব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন হিসেবে দেখে নি দলটি। বরং একটা যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে। সব সমীকরণ মিলিয়ে তারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, পৃথিবী ধ্বংস হতে আর বেশি দেরি নেই। আর সেই মহপ্রলয় ঘটবে ২০১৭ সালেই।
‘পৃথিবী ধ্বংসের চিহ্নাবলী’ শীর্ষক ওয়েবসাইটে তারা নিজেদের এই ভবিষৎবাণীর স্বপক্ষে নানবিধ প্রমাণ উপস্থাপন করে থাকে। তারা বলছে বাইবেলেই ২০১৭ সালে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে এমন কিছু ইঙ্গিত লুকায়িত ছিল।
তাদের ওয়েবসাইটে আরো বলা হয়েছে, এই চিহ্ন বা আলামতগুলি আগে কখনোই এত ঘনঘন আর এত বিস্তৃত এলাকা জুড়ে পরিলক্ষিত হয় নি। এবার যে আলামতগুলি সবাই টের পাচ্ছে সেগুলির ভয়াবহতাও ব্যাপক এবং বিধ্বংসী।
তাদের দাবী, মানবজাতির সর্বশেষ প্রজন্ম আমরাই। আমরা যে ক্যালেন্ডারের চূড়ান্ত বছরে উপনীত হয়েছি, সে ব্যাপারে তাদের বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।
একটি পরিসংখ্যান তারা উপস্থাপন করেছে, যেখানে বলা হচ্ছে, ২০১৭ সালের প্রথম দুই মাস শেষ হবার আগেই সারা পৃথিবীতে প্রায় ৪,০০০ বার ভুমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। সংখ্যাটি রীতিমত বিস্ময়কর।
খ্রিস্টীয় ধর্মগুরু ম্যাথু এবং লুকের বই থেকে কিছু অংশের প্রতি সবাইকে নজর দিতে বলছে উগ্রবাদী দলটি। যেখানে বলা হয়েছে, পৃথিবী ধ্বংসের আগে ক্রমাগত প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দিতে থাকবে।
‘পৃথিবী ধ্বংসের চিহ্নাবলী’ ওয়েবসাইটে আরো একটি সতর্কবাণী রয়েছে। এটিতে বলা হচ্ছে, বিধাতা আমাদেরকে যথেষ্ট সুযোগ দিয়েছে। আমাদের আলো, বাতাস, পানি আর প্রাচুর্য দিয়েছেন। তবুও আমরা শয়তানের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে খারাপ কাজ করতেই বেশি ভালবাসি। তাই মুহুর্মুহু প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাধ্যমে তিনি এই পৃথিবী ধ্বংস করে দিবেন।
তবে বিশ্বের বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ, আবহাওয়াবিদ, বিজ্ঞানীরা ‘পৃথিবী ধ্বংসের চিহ্নাবলী’ ওয়েবসাইটটিকে গুরুত্বের সাথে নিচ্ছেন না। এমনকি রোমান ক্যাথলিক চার্চসহ খ্রিস্ট ধর্মের অন্যান্য সব বড় বড় চার্চ এই ভবিষৎবাণীর সাথে দ্বিমত পোষণ করেছে। কেউ কেউ বলছেন, আলোচনায় আসার জন্য দলটি মানুষের মাঝে এমন বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
ক্যাথলিক ওয়ার্ল্ড রিপোর্টার পত্রিকার সম্পাদক কার্ল অলসন বলেন, এগুলো নিতান্তই গুজব। খ্রিস্ট ধর্মের প্রকৃত চেতনার বিরোধী।
প্রতিক্ষণ/এডি/নাজমুল