২৮ বছর পর মা’য়ের দেখা
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
সত্যি ঘটনা অনেক সময় হার মানায় বলিউড সিনেমাকেও। নিজের জীবনে তেমনই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলেন হায়দারাবাদের নাজিয়া বেগম। দীর্ঘ ২৮ বছর পর নিজের দুই মেয়েকে ফিরে পেলেন ৬০ বছরের এই মহিলা। ১৯৮১-তে বিয়ে করে সৌদি আরব পাড়ি দিয়েছিলেন হায়দরাবাদের সন্তোষনগরের বাসিন্দা নাজিয়া। সেখানে সংসার পাতেন ফুজাইরা প্রদেশে। কিন্তু স্বামী রশিদের আগের স্ত্রী ছিল।
সৌদি নাগরিক রশিদ কখনোই নাজিয়াকে ভালো চোখে দেখেননি। বিয়ের পর থেকেই চলে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার। এভাবেই চার বছর কাটে সেখানে। জন্ম হয় আয়েশা ও ফাতিমা নামে দুই মেয়ের। ১৯৮৮ সালে নাজিয়াকে তালাক দিয়ে দেশে ফেরার টিকিট ধরিয়ে দেয় তার আরব আমিরাতের স্বামী। আয়েশা এবং ফাতিমা থেকে গিয়েছিল সেখানে।
এদিকে দুবাইতে বড় হওয়া আয়েশা ও ফাতিমা কোনোভাবেই মাকে ভুলতে পারেনি। মায়ের খোঁজে চলতি বছরের জানুয়ারিতে হায়দারাবাদে আসে দুই মেয়ে। জেলা পুলিশ সুপারের (ডিএসপি) সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা। মাকে খুঁজে দিতে পুলিশের কাছে আবেদন জানায় তারা।
হায়দারাবাদের ডিএসপি বলেন, ‘পুরনো একটি ছবি দেখিয়ে তারা আমার সাহায্য চায়। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো বলে তাদের প্রতিশ্রুতি দেই। আমরা পুরনো শহরে ছবির কপি প্রচার করে দেই। অসংখ্য লোকজনের মধ্য থেকে আমরা তাদের মাকে খুঁজে বের করি।’
পুলিশের কাছে সব শুনে অবাক হয়ে যান নাজিয়া। দুবাইতে ছেড়ে আসা তার দুই কন্যার মুখ মনেই ছিলনা তার। শুধু জানতেন তার ছোট মেয়ের এক হাতে ৬টি আঙুল ছিল। সেটা জানতে পেরে হায়দারাবাদ পুলিশের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় আয়েশা ও ফাতিমার সঙ্গে।
ফাতিমা জানান, তার হাতে ৬টি আঙুল ছিল। কয়েক বছর আগে সেটি অপারেশন করে বাদ দিয়েছেন। আবার হায়দারাবাদে আসেন আয়েশা ও ফাতিমা। দেখা হয় তাদের মায়ের সঙ্গে। হাতের ছয় আঙুল চিনিয়ে দিল ছোট মেয়েকে। তা নাহলে হয়তো ডিএনএ টেস্ট করাতে হতো। অবশেষে জন্মের পর প্রথমবারের মাতো মাকে আবেগে জড়িয়ে ধরল দুই মেয়ে।
প্রতিক্ষণ/এডি/অারএম