৩০ বছর বয়সীরাও টিকা দিতে পারবে

প্রকাশঃ জুলাই ২২, ২০২১ সময়ঃ ৮:৫০ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৫০ পূর্বাহ্ণ

সুরক্ষা অ্যাপসের মাধ্যমে দেশে করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণের বয়সসীমা ৩৫ বছর থেকে কমিয়ে ৩০ বছর করা হয়েছে। গতকাল সোমবার এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, ‘সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত আছে পর্যায়ক্রমে টিকাগ্রহীতার বয়স নিচে নামানো হবে। সে অনুসারেই কাজ হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এটা ৩০ বছরে নামল।’ এর আগে কভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি তাদের সর্বশেষ বৈঠকে নিবন্ধনের বয়স ১৮ বছরে নামানোর পরামর্শ দেয় সরকারকে।

এদিকে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকায় এসে পৌঁছয় কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় ৩০ লাখ ডোজ মডার্নার টিকা।

চীনের পর রাশিয়াও বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে কভিড টিকা উৎপাদনে রাজি হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, “রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।

রাশিয়া এ দেশে ‘বাল্ক’ আকারে স্পুিনক টিকা এনে বোতলজাত ও ফিনিশিংয়ের কাজ করবে। তবে তারা টিকা উৎপাদনের প্রযুক্তি বাংলাদেশকে দেবে না।” পররাষ্ট্রন্ত্রী বলেন, কভিডের টিকা তৈরির প্রযুক্তি সবাই পাক, সেটা রাশিয়াও চায়। তবে টিকা উৎপাদনকারী অন্যরা কেউ তাদের প্রযুক্তি দিচ্ছে না। তাই রাশিয়াও এটি অনুসরণ করবে। তিনি আরো বলেন, অন্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনার সুযোগ থাকলেও রাশিয়ার সঙ্গে সুযোগ কম।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, তিনি সাত দিনের মধ্যে সরকারি দামের চেয়ে অর্ধেক দামে রাশিয়ার টিকা আনবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এটি জেনে তিনি খুবই খুশি হয়েছেন। কিন্তু রাশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, টিকায় কোনো বেসরকারি এজেন্ট নিয়োগ করা হয়নি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পরে আমরা জানতে পেরেছি, একজন আমেরিকান রাশিয়ার টিকার এজেন্সি পেয়েছে। সেই ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি (জাফরুল্লাহ) টিকা আনবেন।’ মন্ত্রী বলেন, সাংবাদিক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবীসহ অনেকের কাছ থেকে তাঁরা এমন প্রস্তাব পেয়ে থাকেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে টিকা পাঠানোর বিষয়ে কোনো সময়সীমা জানাননি।

এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কভিডের টিকার জন্য ১৫ হাজার ৩৬ জন বিদেশগামী বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। তাঁদের মধ্যে ছয় হাজার ১৯ জন চীনগামী শিক্ষার্থী। এ ছাড়া কানাডাগামী এক হাজার ৯৯৮ জন, ভারতগামী এক হাজার ৬২, যুক্তরাজ্যগামী এক হাজার ৩২ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন।

গত ১৩ জুলাই থেকে বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের টিকার জন্য আবেদন শুরু হয়েছে। ২৭ জুলাই পর্যন্ত তাঁরা আবেদন করতে পারবেন।

এদিকে টিকা আসা ও নিবন্ধনে গতি বাড়লেও নিবন্ধনকারীদের অনেকেই নিবন্ধন করার পর ৮-১০ দিনের মাথায়ও টিকা দেওয়ার সময়সূচির এসএমএস পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন গণমাধ্যমের কাছে। গতকাল মডার্না, সিনোফার্ম ও ফাইজারের টিকাসহ প্রায় দুই লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে সারা দেশে। আজ-কালের মধ্যেই দেশে ফাইজারের টিকার প্রথম ডোজের জন্য নির্ধারিত মজুদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাই এই টিকার প্রথম ডোজ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্র।

এদিকে গতকাল মডার্নার ৩০ লাখ টিকা নিয়ে দেশে মোট টিকা আসার সংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়ে দুই কোটি ১০ লাখে পৌঁছেছে। এর মধ্যে অক্সফোর্ডের টিকা পাওয়া গেছে এক কোটি তিন লাখ ডোজ, চীনের সিনোফার্মের ৫১ লাখ ডোজ, মডার্নার ৫৫ লাখ ডোজ ও ফাইজারের এক লাখ ৬০০ ডোজ। এর মধ্যে অক্সফোর্ডের ৭০ লাখ ডোজ সরকারের চুক্তির আওতায় কেনা এবং বাকি ৩৩ লাখ ভারত সরকারের পক্ষ থেকে উপহার দেওয়া। সিনোফার্মের ৪০ লাখ কেনা এবং চীন সরকারের উপহার ১১ লাখ। ফাইজারের ও মডার্নার সব টিকাই কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় এখন পর্যন্ত পেয়েছে বাংলাদেশ।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ মাসেই কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় জাপান থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২৯ লাখ ডোজ টিকা আসছে। রাশিয়া থেকে ক্রয় চুক্তির আওতায় আগামী মাস নাগাদ ৫০ লাখ ডোজ স্পুিনক-ভি আসার কথা রয়েছে। এ ছাড়া সরকারের সঙ্গে সিনোফার্মের ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে প্রতি মাসে দেড় কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার কথা রয়েছে।

প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G