কুকুরের স্থানে জায়গা করে নিচ্ছে হাতি
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:
পৃথিবীর ইতিহাসে যুদ্ধ এক অনিবার্য অভিশাপের মতো টিকে আছে। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার পরেও আজও যুদ্ধ করে যাচ্ছে অনেক দেশ। আফ্রিকা থেকে শুরু করে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে নানান ইস্যুতে যুদ্ধ হচ্ছে।
এই যুদ্ধে একদিকে যেমন প্রকৃতির ক্ষতি হচ্ছে তেমনি অগুনতি সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছে, যাদের মারা যাওয়ার কোনো কারণই ছিল না। আফ্রিকার অনেক দেশে দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের পর এখন শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
কিন্তু তারপরেও প্রায় প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে ওই যুদ্ধেরই কারণে। যুদ্ধের সময় শত্রু-মিত্র পক্ষের পেতে যাওয়া মাইন বিস্ফোরিত হয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ মারা যায় পৃথিবীতে। এমনকি এই মাইন অপসারণ করতে গিয়েও অনেকের অঙ্গহানি থেকে শুরু করে মারা যায়।
দক্ষিণ আফ্রিকার অনেক স্থানে আজও গৃহযুদ্ধের সময়কার পেতে রাখা মাইন প্রাণহানি ঘটায়। দেশটির সরকার মাইন অপসারণে ব্যবস্থা নিলেও আখেরে তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। তাই মার্কিন সেনাবাহিনীর গবেষক দল দক্ষিণ আফ্রিকার মাইন অপসারণে মানুষ ব্যবহার না করে হাতি ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই মাইন অপসারণের কাজে কিছু হাতিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
গবেষক দলের অপারেটর শন হ্যান্সম্যান এ বিষয়ে জানান, ‘হাতির ঘ্রাণশক্তি অনেক প্রখর। কারণ বরফের মাঝেও হাতি ঘ্রাণ শুকে ঠিকই তার খাবার খুঁজে নেয়। আমরা রোবটের সাহায্যে মাইন ফিল্ড থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করে আনছি, যে উপাত্তের ঘ্রাণ শুকে হাতি বোমা নিষ্ক্রিয় করতে পারে।’ বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি সাফারি পার্কে হাতিদের এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচী চলছে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও মার্কিন গবেষকরা এই প্রকল্পে কাজ করছেন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই হাতিদের একটি দলকে মাইন উপদ্রুত অ্যাঙ্গোলায় পাঠানো হবে।
বিভিন্ন দেশে বোমা খোঁজার জন্য এতোদিন ব্যবহার করা হতো কুকুর। কিন্তু কুকুরের চেয়ে হাতির ঘ্রাণশক্তি অনেক বেশি প্রখর হওয়ার কারণে কুকুরের স্থানে জায়গা করে নিচ্ছে হাতি। কারণ হিসেবে গবেষকরা বলছেন, কুকুরকে প্রশিক্ষণ দিতে যে সময় লাগে তার চেয়ে অনেক কম সময় লাগে হাতিকে প্রশিক্ষণ দিতে, পাশাপাশি শুর থাকার কারণে খুব কাছ থেকে ঘ্রাণ নিতে পারে হাতি। এর আগে হ্যান্সম্যান ও তার দল জিম্বাবুয়েতে প্রায় ডজনখানেক হাতিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন চোরাশিকারী প্রতিরোধে।
প্রতিক্ষণ/এডি/রেহেনা, সূত্র:ওয়েবসাইট