আন্দোলন চলবে, সমাধানের চাবি সরকারের হাতে

প্রকাশঃ মার্চ ১৩, ২০১৫ সময়ঃ ৫:৫৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:

khaleda realসংকট সমাধানের চাবি সরকারের হাতে মন্তব্য করে ২০ দলীয় জোটের চলমান আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

শুক্রবার বিকেলে গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সঙ্কট নিরসনে কোনো উদ্যোগ ও আন্তরিকতা দেখায়নি। তারা বিএনপির সাত দফা প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে।

তারা বিএনপির দাবি বিবেচনায় না নিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে বাধ্য করেছে।

তিনি বলেন, ‘একটা যৌক্তিক পরিণতিতে না পৌঁছা পর্যন্ত এ আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’ সাহসিকতার মাধ্যমে সবাই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করলে সফল হবে।

দেশে গভীর সংকট চলছে মন্তব্য করে এর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশ আজ গভীর সংকটে। এই সংকট রাজনৈতিক। এর স্রষ্টা আওয়ামী লীগ, নির্দিষ্ট করে বললে শেখ হাসিনা।

জনগণের সম্মতি ছাড়া রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগ একতরফা সিদ্ধান্তে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাদ করে দেয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন সুযোগই তারা রাখেনি। মহাবিতর্কিত সংশোধনীর মাধ্যমে তারা গণতন্ত্রের নাম-নিশানা মুছে দিতে চেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে এবং সংবিধান রক্ষার স্বার্থে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন করা হচ্ছে বলে শেখ হাসিনা যে কথা বলেছিলেন তাতে আস্থা রাখা যে চরম ভুল ছিল তা দেশবাসী পরবর্তীতে বুঝতে পেরেছে।

তাদের কথায় আন্দোলন প্রত্যাহার করার পরই এ অবৈধ সরকার যৌথ বাহিনী নামিয়ে নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার, হত্যা, হয়রানি করেছে। আমরা এক বছর অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন ছাড়া আর কোনো পথ খুলে রাখা হয়নি। তাই আমরা আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছি।’

সংবাদ সম্মেলনে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়াসহ চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে কিছু দাবি তুলে ধরেন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, ‘গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তি, গুম-খুন- ও পুলিশি হয়রানি বন্ধ, মামলা প্রত্যাহার, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি, সভা-সমাবেশের ওপর বিধিনিষেধ প্রত্যাহার, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য দ্রুত সংলাপের আয়োজন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতা আমার কাছে বড় কিছু নয়। অতীতে আমি অনেকবার দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছি। গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে আমরা লড়াই করছি। এ আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা দলের বিরুদ্ধে নয়। এ আন্দোলন আদর্শের, এ আন্দোলন গণতান্ত্রিক মানুষের। এ আন্দোলন ক্ষমতা দখলের আন্দোলন নয়, এ আন্দোলন একটি শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গঠনের আন্দোলন।’

বিএনপি চেয়ারপারসন নেতাকর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে বলেন, যারা এখনো নিষ্ক্রিয় আছেন তারা সক্রিয় হোন।

উল্লেখ্য, টানা হরতাল-অবরোধ চলাকালে সারাদেশে সহিংসতার মধ্যে দুই মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন খালেদা জিয়া। ৫২ দিন আগে সর্বশেষ গণমাধ্যমের সামনে কথা বলেন তিনি।

খালেদা জিয়া গত ৩ জানুয়ারি রাত থেকে গুলশানে তাঁর রাজনৈতিক কার্যালয়ে রয়েছেন। এর মধ্যে গত ৫ জানুয়ারি বর্তমান সরকারের এক বছর পূর্তির দিন ২০-দলীয় জোটের তরফ থেকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

কিন্তু পুলিশি বাধায় তিনি তাঁর কার্যালয় থেকে বের হতে পারেননি। কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ থেকেই লাগাতার অবরোধের ডাক দেন খালেদা জিয়া। এরপর দফায় দফায় দেশজুড়ে হরতালও ডেকেছে ২০ দলীয় জোট।

কার্যালয়ে থাকার সময় গত ১৯ জানুয়ারি রাতে প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। ৫৩ দিন পর আজ আবার সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

প্রতিক্ষণ/এডি/কামরান

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G