নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভারতে ঢুকছে ইলিশ
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
ভারতে ইলিশ রপ্তানিতে বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও চোরাপথ পেরিয়ে দিব্যি দেশটিতে ঢুকছে টন টন ইলিশ।
আনন্দবাজার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকালের মধ্যে বনগাঁ সীমান্তের চোরাপথ দিয়ে বারাসাতে বড়বাজারের আড়তেই শুধু ঢুকেছে কয়েক টন। এক কেজি ২৫০-৩০০ গ্রামের সেই ইলিশ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি দেড় হাজার টাকায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাতের অন্ধকারে ঢাকা-খুলনা-বরিশাল থেকে যশোর হয়ে সীমান্তে চলে আসছে ইলিশ। বিভিন্ন এলাকা দিয়ে যন্ত্রচালিত ভ্যান রিকশায় করে থার্মোকলের পেটিতে বরফ চাপা দিয়ে তা ভারতে ঢুকে পড়ছে। উপরে থাকছে অন্য মাছ।পেট্রাপোল সীমান্ত লাগোয়া জয়ন্তপুরের কাঁটাতার পেরিয়ে, কখনও আবার পুটখালির ইছামতী পেরিয়ে আংড়াইল সীমান্ত হয়ে চলে আসছে ইলিশ। কোনও নজরদারিই আটকাতে পারেছে না তা।
মঙ্গলবার সকালে বারাসত বড় বাজারের প্রায় ৪০ জন আড়তদার ৫০ থেকে ১০০ কেজির মতো ‘বাংলাদেশি ইলিশ’ কিনেছেন। বাজারের মৎস্য ব্যাপারি শেখ ইস্রাইল বলেন, ‘‘৫০ কেজির মতো পাইকারি বাংলা ইলিশ কিনলাম। ১ কেজি ৩০০ গ্রামের এক-একটা মাছ দেড় হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হবে।”
অন্য মাছে নিষেধ না থাকলেও বছর দুয়েক যাবৎ ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। যার ফলে পদ্মার ইলিশ ভারতীয়দের কাছে প্রায় পৌঁছচ্ছে না। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বাংলাদেশে গিয়ে খাবারের মেন্যুতে ইলিশের অন্তত ৫টি পদ দেখে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন, ‘‘ইলিশ মাছ পাঠানো আটকে রেখেছেন কেন আমরা খেতে পাচ্ছি না!’’ প্রত্যুত্তরে ফের তিস্তা প্রসঙ্গ তুলে হাসিনা বলেন, ‘‘পানি দেন, ইলিশও যাবে।”
সেই জট এখনও খোলেনি। কিন্তু কূটনীতিতে আবেগ আটকায় না, বাণিজ্যও না। তাই নববর্ষের বাজার ধরতে ফের চোরাপথে যাত্রা শুরু হয়েছে ইলিশের।
ভারতীয় শুল্ক দপ্তরের ক্নিয়ারিং এজেন্টদের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এখন বড় বড় হাঁড়িতে করে চোরাপথে আসছে ইলিশ। পেটিতে বরফবন্দি হয়ে চলে যাচ্ছে বারাসতের বড়বাজারের মতো এলাকায়। সেখান থেকে ইলিশ পৌঁছে যাচ্ছে কলকাতার বিভিন্ন বাজারে।’’
উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল শুল্ক দপ্তরের সহকারি কমিশনার শ্রীরাম বিষ্ণু বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা থাকায় ইলিশ আমদানি বন্ধ। ভারতে বাংলাদেশের যে ইলিশ মিলছে, তা আশপাশের চোরাপথ দিয়েই ঢুকছে।”
নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের যুক্তি, ব্যাপক হারে জাটকা ধরা হতে থাকায় উৎপাদন কম হচ্ছিল। গত কয়েক বছর মায়ানমার থেকে ইলিশ ঢুকছিল বাংলাদেশে। জাটকা ধরায় লাগাম দেওয়ার পরে পদ্মা-মেঘনায় আবার প্রমাণ সাইজের ইলিশ মিলছে। যতটুকু ইলিশ মিলছে তা আগে দেশের মানুষ খাবে, পরে প্রবাসীরা। তাই রপ্তানি বন্ধ।
প্রতিক্ষণ/এডি/এআই