বিজ্ঞানীদের ভুলে পৃথিবী বদলে দেয়া কিছু আবিষ্কার

প্রকাশঃ এপ্রিল ১৮, ২০১৫ সময়ঃ ৩:০৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:১২ পূর্বাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:

Crown; (c) Peter Copley; Supplied by The Public Catalogue Foundationপ্রত্যেক আবিষ্কারকই একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে গবেষণা চালান। তিনি কী আবিষ্কার করতে যাচ্ছেন এবং তা করতে তার যেসব উপাদান লাগতে পারে সেটা আগে থেকেই চিন্তা ভাবনা করে রাখেন। যদিও সব ক্ষেত্রে একজন উদ্ভাবক সফলতা পান না; তবু তিনি কী আবিষ্কার করতে যাচ্ছেন তা তার কাছে স্পষ্ট এবং সেই লক্ষ্যেই তিনি কাজ করেন।  মজার ব্যাপার হচ্ছে, পৃথিবীতে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আবিষ্কৃত হয়েছে যা আসলে আবিষ্কার করতে চাননি আবিষ্কারক। যা হওয়ার তা হয়েছে দুর্ঘটনাবশত। এমন কিছু আবিষ্কার নিয়ে আজকের এই লেখা:

পেনিসিলিন :

স্যার আলেক্সান্ডার ফ্লেমিং পেনিসিলিন আবিষ্কার করার পর পৃথিবীজুড়ে সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে মানব মৃত্যুর হার বিশ ভাগের এক ভাগ কমে গেছে। কিন্তু এই বিস্ময়কর ওষুধ তিনি তৈরি করেন হঠাৎ করেই । তিনি এ বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে তা ছুড়ে ফেলে দেন এবং তখনই যা চাইছিলেন তা হঠাৎ করেই পেয়ে যান। ১৯২৮ সালের একদিন ফ্লেমিং দেখেন, তার গবেষণা পাত্রে যে পদার্থ তৈরি হয়েছে তা সব ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলছে। সেখান থেকেই তৈরি হয় বিস্ময়কর অ্যান্টিবায়োটিক পেনিসিলিন।

পেসমেকার :

ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার জন হুপস হাইপোথারমিয়া নিয়ে গবেষণা করছিলেন এবং রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি দিয়ে দেহের তাপমাত্রা ফেরাতে কাজ শুরু করেন। তিনি বুঝতে পারেন, যদি ঠাণ্ডায় হৃদযন্ত্র কাজ বন্ধ করে দেয় তবে একে কৃত্রিমভাবে চালু করা যাবে। এ উপলব্ধি থেকেই ১৯৫১ সালে তৈরি হয় পেসমেকার।

এক্স-রে মেশিন:

press maker macineক্যাথোড রে আবিষ্কার হয়েছিল অনেক আগেই। কিন্তু গবেষকরা তখনও জানতেন না এটি ব্যবহার করে মানবদেহের কঙ্কালের ছবি তোলা সম্ভব। ১৮৯৫ সালে জার্মান পদার্থবিদ উইলহেম রঞ্জন কালো কার্ডবোর্ডে ঢাকা গ্লাস টিউবে ক্যাথোড রশ্মি চালিয়ে পরীক্ষা করছিলেন। মূলত তার উদ্দেশ্য ছিল গ্লাস থেকে ক্যাথোড রে বের হয় কিনা তা দেখার জন্য।

কিন্তু এ সময় তিনি লক্ষ্য করেন, যেখানে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন তার কয়েক ফুট দূরে একধরনের আলোক রশ্মি দেখা যাচ্ছে। তিনি ধারণা করলেন কার্ডবোর্ড কোথাও ফেটে গিয়ে হয়ত আলো বের হচ্ছে। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখলেন, কার্ডবোর্ড ফেটে নয় বরং কার্ডবোর্ড ভেদ করে রশ্মি বের হচ্ছে। হঠাৎ তার মাথায় এলো, যে রশ্মি কার্ডবোর্ড ভেদ করতে পারছে তা মানবদেহ কেন পারবে না। তার স্ত্রীর হাত সামনে রেখে পরীক্ষা চালালেন এবং প্রথম কেউ না কেটেই মানবদেহের কঙ্কালের ফটোগ্রাফিক ইমেজ তৈরিতে সক্ষম হলেন। পরে তিনি এর নাম দেন এক্স-রে। অনেকে অবশ্য একে তার নাম অনুসারে রঞ্জন রশ্মি নামেও ডাকে।

ভায়াগ্রা:

ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি ফাইজারের অধীনে ইংল্যান্ডের ওয়েলসে একদল গবেষক ১৯৮৫ সাল থেকে এনজাইনা (বুকে ব্যথা) ও হাইপার টেনশনের অধিক কার্যকরী ওষুধ আবিষ্কারের লক্ষ্যে গবেষণা চালিয়ে আসছিলেন। ১৯৯২ সালে তারা একটি নতুন ওষুধ আবিষ্কার করেন এবং পরীক্ষা চালানোর সময় তারা দেখতে পান, এনজাইনার ক্ষেত্রে এটি খুব অল্প কাজ করলেও অ্ন্য একটি বিষয়ে খুব দ্রুত কাজ করছে। বিষয়টি গবেষকদের কাছে সম্পূর্ণ অভাবনীয় হলেও ততক্ষণে ওষুধ শিল্পের অন্যতম বৈপ্লবিক আবিষ্কারটি তারা করে ফেলেন; এবং এখন সারাবিশ্বে যৌন সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে গবেষকদের ভুলে আবিষ্কার হওয়া এ ওষুধটি।

প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G