যৌন নিপীড়নের স্বভাব জিনগত!
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
যৌন নিপীড়ন বা অপরাধের জিন বলে সুনির্দিষ্ট কোনও জিন নেই। জিন আছে এমন কোনো প্রমাণও মিলেনি। বলেছেন জিন গবেষক স্টকহোমের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের সাইকিয়াট্রিক এপিডেমিয়োলজির অধ্যাপক নিকোলাস ল্যাংস্ট্রম।
এই সুইডিশ বিজ্ঞানী বলেন, আবেগ নিয়ন্ত্রণ, বুদ্ধিমত্তা ও যৌন ক্ষুধার সঙ্গে সম্পর্কিত একদল জিনই আসলে কোনো ব্যক্তির এমন অপরাধের প্রবণতার জন্য দায়ী। খবর দি গার্ডিয়ানের।
অধ্যাপক ল্যাংস্ট্রমের নেতৃত্বে এই গবেষণায় বলা হয়, পুরুষদের মধ্যে যৌন নিপীড়নের স্বভাব থাকবে কি থাকবে না, তার ৪০ শতাংশই ঠিক করে দেয় ওই জিনগুলো।
“পরিবারের পূর্বপুরুষদের মানসিকতায় যদি নিপীড়নের স্বভাব থাকে, তাহলে নতুন প্রজন্মের মধ্যেও সেই মানসিকতার প্রভাব পড়ে। একজন যৌন নিপীড়ক পুরুষের আত্মীয়, সন্তানেরাও এমন নিপীড়কের ভূমিকায় নামতে পারেন।”
যৌন নিপীড়নের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এমন পুরুষরা, গড় পুরুষদের তুলনায় এই অপরাধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা অন্তত পাঁচগুণ বেশি বলেও দাবি করা হয়েছে গবেষণাটিতে।
এরতে আরও বলা হয়, যৌন নিপীড়ন বা হয়রানির স্বভাবের বিষয়টি বস্তুত জিনগত। বাবার কাছ থেকে ছেলের শেখা, বা ভাইয়ের কাছ থেকে ভাইয়ের শেখার মতো পরিবেশগত প্রভাব এখানে গৌণ।
এই গবেষণাটিতে ১৯৭৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সুইডেনে যৌন অপরাধের জন্য দোষী প্রমাণিত হওয়া ২১ হাজার ৫৬৬ জন পুরুষের নানা তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে । দেখা গেছে, যৌন অপরাধে দোষী প্রমাণিত হওয়া ওই পুরুষদের ভাই বা বাবাদের মধ্যে ২.৫ শতাংশ নিজেরাও এমন অপরাধে দোষী প্রমাণিত হয়েছেন।
ধর্ষণ এবং শিশু নিপীড়নের মতো দুই ধরনের যৌন অপরাধের ক্ষেত্রেই এই প্রবণতা একই রকম বলে দেখতে পেয়েছেন গবেষকেরা।
যৌন অপরাধের ক্ষেত্রে পারিবারিক ইতিহাস পর্যবেক্ষণ নতুন কোনও বিষয় নয়। এর আগেও এ বিষয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগই ছিল পর্যবেক্ষণমূলক।
সুইডিশ এই গবেষণাটিই এ বিষয়ে বিপুল পরিমাণ বাস্তব তথ্যের ভিত্তিতে এ যাবৎ পরিচালিত সবচেয়ে বড় গবেষণাগুলির মধ্যে একটি। গবেষণার ফল বলছে, যৌন অপরাধের প্রবণতা প্রধানত জিনগত প্রভাবে ঘটে থাকে।
অধ্যাপক নিকোলাস ল্যাংস্ট্রম বলছেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, পারিবারিক ঝুঁকিটা সব সময়ই থেকে যাচ্ছে।’
প্রতিক্ষণ/এডি/এআই