আপনার শিশুটি কি মানসিকভাবে সুস্থ?
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:
একটা সময় ছিল যখন যৌথ পরিবারে জন্ম নেয়া শিশুর যত্ন নিয়ে বাবা-মাকে তেমন ভাবতে হত না। দাদা-দাদী, চাচা-চাচী আর চাচাত ভাইবোনের তদারকিতে বেড়ে উঠত শিশু। পরিবার থেকেই শিশু,সৌজন্যতা ও সামাজিকতার শিক্ষা পেত। পাশাপাশি যে কোন ধরণের মনস্তাত্তিক সমস্যায় বন্ধুর মত পাশে পেত চাচাত ভাই-বোনকে। সময়ের পরিক্রমায় যৌথ পরিবার প্রথা এখন আর দেখা যায় না তেমন একটা। গ্রাম ও শহরে সবখানে জায়গা করে নিয়েছে একক পরিবার।
সংসারের প্রয়োজনে বেশিরভাগ স্বামী-স্ত্রী চাকরি করেন। ফলে দিনের অধিকাংশ সময় তাদের বাইরে থাকতে হয়। এ কারণে শিশুরা বাবা-মাকে কম সময়ের জন্য কাছে পায়। কর্মজীবী বাবা-মায়েরা সময় দিতে না পারায় অনেক সময় শিশুরা ভুল পথে পা বাড়ায়।
অনেক বাবা-মায়ের ধারণা, শিশুদের খেলনা কিংবা টাকা দিলে বেশি খুশি হয়। আসলে বাস্তবতা ভিন্ন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের হাতে পর্যাপ্ত টাকা দেওয়া হলে বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে তারা বিপথে পা বাড়াতে পারে। আর বন্ধুদের মধ্যে যদি কেউ মাদকাসক্ত থাকে তবে এ ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
অধিকাংশ বাবা-মা তার সন্তানের মাদকাসক্তের খবর অনেক দেরিতে পান। তখন মনঃচিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে কিছুদিন চিকিৎসা চলে। পরে আবারও তারা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে পরিবারের সঙ্গে শিশুদের একটা মানসিক দুরত্ব তৈরি হয়।
অনেক সময় বাবা-মায়ের সঙ্গে শিশুরা নির্ভয়ে সবকথা বলতে পারে না। এটা শিশুদের মানসিকভাবে দুর্বল করে তোলে। এছাড়া ছোটখাটো কারণে অতিরিক্ত বকাঝকা করলে পরে অনেক কিছুই শিশুরা বাবা-মাকে জানায় না। এজন্য বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তারা মিথ্যা কথা বলে। নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করে। এমনকি মাদকাসক্তও হয়ে যেতে পারে।
এ ব্যাপারে চিকিৎসকদের পরামর্শ হচ্ছে, যখন শিশুরা কিছু বলতে চায় তখন তা বলতে দেয়া উচিত। আর ভালো কাজে শিশুদের উদ্বুদ্ধ করলে তারা সে কাজটি বেশি করার চেষ্টা করে। তাদের পছন্দ অপছন্দের ব্যাপারটিও বাবা-মাকে গুরুত্ব দিতে হবে। ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে কিছু চাপিয়ে দিলে শিশুরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে।
তাই দিনের যতটুকু সময় পারা যায় সন্তানকে বাবা-মায়ের সময় দেয়া উচিত। এতে বিপদ ঘটার আগেই সময় থাকতে সন্তানকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়।
প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল