পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম নদীর নাম আমাজন। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর আন্দিজ পর্বতের নেভাদো মিস্মি নামক চূড়া হতে এই নদীর উৎ পত্তি। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৪০০ কিলোমিটার। আর প্রস্থ কোনো কোনো স্থানে ১০ কিলোমিটার। তবে বন্যার সময় আমাজন প্রস্থে ৩০ কিলোমিটারও ছাড়িয়ে যায়।
দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পর্বত থেকে শুরু হয়ে পাঁচটি দেশ জুড়ে বিস্তৃত আমাজন নদী আটলান্টিক মহাসাগরে গিয়ে মিলিত হয়েছে।
মজার তথ্য হচ্ছে, আমাজন নদী যে পরিমাণ জল ধারণ করে তা বিশ্বের যে কোনো নদীর তুলনায় বেশি। আমাজন নদী যেখানটায় সাগরে গিয়ে মিশেছে সেখানে প্রতি সেকেন্ডে ৪.২ মিলিয়ন ঘন ফুট পানি সাগরে গিয়ে পড়ে। বর্ষা মৌসুমে এই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৭ মিলিয়ন ঘন ফুট।
আমাজন নদীতে রয়েছে বিচিত্র রকমের জলজ প্রানীর ছড়াছড়ি। এই নদীর বিশিষ্ট বাসিন্দাদের মধ্যে আছে লম্বায় সাড়ে ৪ মিটারের চেয়েও দীর্ঘ ফ্রেশ ওয়াটার ফিশ, বুল শার্ক, ক্যাট ফিশ, ইলেকট্রিক ইল আর ভয়াবহ রাক্ষুসে মাছ পিরানহা।
এই নদীর চারপাশ ঘিরে আছে বিশ্বের ১ নম্বর প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য আমাজন বন। দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল, ভেনিজুয়েলা, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর জুড়ে বয়ে চলেছে আমাজন নদী। আর একই নামের দুনিয়ার সবচেয়ে বড় বনভূমি আমাজনের বিস্তার ওই ৫ দেশসহ মোট ৭টি দেশে।
সুবিশাল আমাজন জঙ্গলের ৬০ শতাংশই পড়েছে ব্রাজিলে। এই বনভূমিতে ৯টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর বাস।
দুর্গম আমাজনের জীবনে এসব আদিবাসীরা দল বেঁধে একসঙ্গে শিকারে যায়, রান্না করে, এক জাতির সঙ্গে অপর জাতির লড়াইয়ে অংশ নেয়।
এই আমাজনেই রয়েছে পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক প্রজাতির গাছ।
এখানে আরও আছে ২৫ লাখ প্রজাতির পোকামাকড়, দুই হাজার প্রজাতির পাখি (পৃথিবীর এক-পঞ্চমাংশ), ৪০ হাজার প্রজাতির গাছ, ৪২৮ প্রজাতির উভচর এবং ৩৭৮ প্রজাতির সরীসৃপ প্রাণী।
সবশেষে আরও একটি তথ্য- এই আমাজন নদীতেই আছে পৃথিবীর ২০ শতাংশ মাছ।
প্রতিক্ষণ/এডি/নির্ঝর