পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ‘বড় বাপের পোলায় খায়’

প্রকাশঃ জুন ১৮, ২০১৫ সময়ঃ ১০:২০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:১৮ পূর্বাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:

timthumb.php- ইফতার বাজার হিসেবে পুরান ঢাকার চকবাজারের ইতিহাস ও ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। খানদানি ইফতারি মানেই পুরান ঢাকার ইফতারসামগ্রী। রমজানের প্রতিদিন দুপুর থেকেই চকবাজার ছাপিয়ে পুরান ঢাকার অলিগলির বাতাসে ভাসে নানা স্বাদের মুখরোচক খাবারের মনকাড়া সুবাস। ঐতিহ্য বজায় রেখে দোকানি আর ব্যবসায়ীরা প্রতিবছর রমজানে আনছেন নতুন নতুন ইফতার আয়োজন। মূল আয়োজনটা চকবাজারকে ঘিরেই। এই বাজারের ইফতার সামগ্রীর প্রতি সব সময়ই বিশেষ আগ্রহ থাকে রোজাদারদের।

‘বড় বাপের পোলায় খায়’

রমজান মাসে চকবাজারে ইফতার কিনতে গেলে যে কথাটি সবচেয়ে বেশি শোনা যায় তা হচ্ছে, ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙা ভইরা লইয়া যায়।’ রকমারি ইফতার বাজারের একটি জনপ্রিয় আইটেম ‘বড় বাপের পোলায় খায়’। জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী এই পদটি প্রায় ৭৫ বছরের পুরনো।

এটি তৈরিতে ডিম, গরুর মগজ, আলু, ঘি, কাঁচা ও শুকনো মরিচ, গরুর কলিজা, মুরগির মাংসের কুচি, মুরগির গিলা কলিজা, সুতি কাবাব, মাংসের কিমা, চিড়া, ডাবলি, বুটের ডাল, মিষ্টি কুমড়াসহ ১৫ পদের খাবার আইটেম ও ১৬ ধরনের মসলা প্রয়োজন। আর মোট ৩১টি পদের যে মিশ্রণ তৈরি হয়, তার নামই ‘বড় বাপের পোলায় খায়’।

একটি বড় গামলায় এই ৩১ ধরনের পদ দুই হাতে ভালোভাবে মাখিয়ে তারপর ঠোঙায় করে বিক্রি করা হয়। এটি কিনতে ছোট-বড় সব বয়সী রোজাদারের মধ্যে রীতিমতো কাড়াকাড়ি লেগে যায়।

timthumb.phpকেবল এই আইটেমটির জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা ছুটে যান চকবাজারে। এখনো পুরান ঢাকার এমন অনেক পরিবার আছে, যাদের এটি ছাড়া ইফতার জমে না, পূর্ণতা পায় না। নতুন ঢাকার বাসিন্দারাও দিন দিন এই খাবারটির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বর্তমানে মূল্য প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত।

ইতিহাস ও ঐতিহ্য

নাজির হোসেনের ‘কিংবদন্তির ঢাকা’ বইয়ে উল্লেখ আছে, ‘১৮৫৭ সালের আগেই চকবাজার জমজমাট হয়। সে সময়েই চকবাজারে গড়ে ওঠে নানা রকম মুখরোচক খাবারের দোকান। রোজার সময় মোগলাই খাবার এবং রকমারি ইফতার বিক্রি করা হতো এখানে।’

শাহী মসজিদের সামনে একটি কূপ ছিল। তার চারপাশেই চেয়ার-টেবিল বিছিয়ে বিক্রি করা হতো ইফতারের বিভিন্ন উপকরণ। কালের বিবর্তনে পুরান ঢাকার চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজার বর্তমান চেহারা পেয়েছে। তবে ইফতারর বাহারি সমারোহের জন্য চকবাজার যে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে এ নিয়ে সন্দেহ ও বিতর্ক নেই।

মোগল রসুইখানার খাবারগুলো ঢাকার নবাবদের কল্যাণে আগেই ঢাকার ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে যায়। চকবাজারের কল্যাণেই সেসব খাবারের সঙ্গে পরিচয় ঘটে সাধারণ মানুষের। ক্রমেই এগুলো ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।

প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G