দশ বছর বয়সেই কোম্পানির বস!
যে বয়সে আমাদের ছেলেমেয়েরা ঠিকমতো খেলতেও পারে না। আর সেই বয়সে যদি একটা পুচকে ছেলে একটি কোম্পানিরে বস বনে যায় তাহলে ব্যাপারটা অবাক করাই, তাই না?
ছেলেটার নাম করি নিয়েভস। নিউইয়র্কের বাসিন্দা। বয়স দশের কোঠায়। কিন্তু এ বয়সেই একটা কোম্পানির বস হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। বর্তমানে সে তার কোম্পানির সিইও।
নিউইয়র্কের এই বালক নিয়েভস প্রমাণ করেছে বয়স কোনো ব্যাপার নয়। যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। সে নামী ব্যান্ডের জনপ্রিয় মডেল হিসেবে কাজ করে ও রেফ কুকির ব্যবসায় সাড়া ফেলে দিয়েছে।
নিউইয়র্কের কনকনে শীতে নিজের গাড়ি নেই বলে বরাবর বাসেই যেতে হতো তাকে। সব বন্ধুদের বাবার গাড়ি আছে কিন্তু করিদের নেই।সেই সামর্থ্যও ছিল না। সেই পাঁচ বছরের করির মনে একটা জিদ চেপে গেল। টাকা আয় করতে হবে এবং গাড়ি কিনতেই হবে। শুধু পরিকল্পনা করেই বসে থাকেনি করি। বাড়ির ঠিক সমানেই হট কোকো বিক্রির একটা ছোট্ট দোকান দেয়। তার সাথে মাকে বলে তার হাতে তৈরি কিছু খাবার মেনুতে যোগ করলো। আর এভাবেই শুরু করে লিটিল বিজেনেসম্যান করি।
প্রথম অবশ্য ইন্টারনেট ঘেঁটে কুকির বিভিন্ন রেসিপি রপ্ত করে সেগুলো পরিবেশন করতো কাস্টমারদের। কিন্তু আলাদা কিছু তো করতেই হবে। তাই নিজেই কিছু রেসিপি উদ্ভাবন করলো। আর সেগুলো কাস্টমাররাও লুফে নিল।
মাত্র দু’বছরের মাথায় করির ব্যবসা রমরমা হয়ে ওঠলো। ২০১২ সালের প্রথম দিকে মা ও ছেলে মিলে তাদের দোকানের সরকারি অনুমোদন নিয়ে নেয়। ধীরে ধীরে তাদের ব্যবসা এতটা বৃদ্ধি পায় যে একটা বাণিজ্যিক কিচেনের ব্যবস্থা করতেই হয়।
করির কোম্পানিতে এখন দিনে এক হাজার কুকি তৈরি হয়। আর অনলাইনেও অর্ডার পায় অনেক। সম্প্রতি সে এক টিভি শোতে অংশ নেয়। সেখানে করি জানায়, শুরুর দিকে কোম্পানিতে ‘মাস্টার বেকার’ হিসেবে কাজ করার জন্য তার মায়ের আয় ছিল ১৫ ডলার কিন্তু এখন আরো ১০ ডলার বাড়ানো হয়েছে। এখন তার বেতন ২৫ ডলার। সেই শোতে তাকে ১০ হাজার ডলার ও একটি গাড়ি দেয়া হয় উপহার হিসেবে।
এটা অবশ্য করির মায়ের জন্য চোখে জল আনার মতোই দৃশ্য। তাই তিনি টিস্যু দিয়ে বাববার চোখ মুছছিলেন।
করি যে শুধু ব্যবসা করে তা নয়। সে কিন্তু খুবই ফ্যাশন সচেতন। তাই হিলফিগার ও র্যাল্ফ লরেনের মতো নামী ব্যান্ড তাকে মডেল করেছে।
এছাড়া টিভি কমার্শিয়ালে অভিনয় করে প্রচুর নাম কুড়িয়েছে এই লিটল বিজনেসম্যান করি নিয়েভস।
ছোট্ট করি পৃথিবীকে অবাক করে দিয়েছে তার শ্রম মেধা ও আত্মবিশ্বাস দিয়ে।