ভেজালে সয়লাব রাজধানীর ইফতার বাজার! (পর্ব-২)

প্রকাশঃ জুন ২৯, ২০১৫ সময়ঃ ৫:২১ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:৩২ অপরাহ্ণ

জহির উদ্দিন মিশু

0,,16972280_303,00এমনিতেই দেশে ভেজাল খাবারের ছড়াছড়ি। তার উপর আবার রমজান মাসে ভেজাল খাবারের দৌরাত্ম্য আরো বেড়ে গেছে। ভেজালের পাশাপাশি রয়েছে পুরনো খাবার বিক্রির প্রতিযোগিতা। এ দুয়ের কবলে পড়ে ভোক্তারা একেবারেই হাঁপিয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ বলা যেতে পারে, নির্ভেজাল ইফতারি খাবার প্রায় কিনতেই পাওয়া যায় না।

ইফতারির প্রধান উপকরণ হচ্ছে মুড়ি। আর এই মুড়িকে ধবধবে সাদা করতে ব্যবহার করা হচ্ছে রাসায়নিক সোডিয়াম হাইড্রো সালফাইড। আর মুড়ির দানাগুলো বড় করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ইউরিয়া সার। এছাড়া, জিলাপিকে উজ্জল ও দীর্ঘক্ষণ মচমচে রাখতে ভোজ্যতেলের সঙ্গে ব্যবহার করা হচ্ছে মবিল এবং বাসন্তী রঙ। ফলে সাধারণ জিলাপি থেকে এসব জিলাপি বেশি উজ্জ্বল দেখায় এবং দীর্ঘক্ষণ মচমচে থাকে।

ভাজাপোড়া যেমন পেঁয়াজু, বেগুনি ও আলুর চপে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন বিষাক্ত রঙ। যা ব্যবহার করা হয় কাপড়ে রঙ করতে। আর হালিম তৈরিতে খাসির মাংসের কথা বলে, দেয়া হচ্ছে গরুর মাংস। এমনকি আগের দিনের বাসি হালিম বিক্রি করা হচ্ছে পরের দিনও। ifter vazal

সরেজমিনে দেখা যায়, কলাবাগানের বিখ্যাত মামা হালিম তৈরি করা হচ্ছে অসাস্থকর পরিবেশে। মামা হালিম বিক্রির পাত্রগুলো রাস্তার পাশে স্তূপ করে রাখা হয় খুবই নোংরা অবস্থায়, ধুলা বালির মধ্যে।

পুরনো ঢাকার চকবাজারে গিয়ে দেখা গেছে,  জনপ্রিয় ‘বড়বাপের পোলায় খায়’ তৈরি হচ্ছে অত্যন্ত নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। বিক্রিও হচ্ছে নোংরা পরিবেশের মধ্যে। এছাড়া চকবাজারের অধিকাংশ ইফতার সামগ্রী ময়লার ড্রেনের উপরেই তৈরি করতে দেখা গেছে।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আইয়ুব আলী প্রতিক্ষণকে বলেন, রকমারি এসব ভেজাল ইফতার আমাদের পেটের নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যেমন গ্যাস্টিক, আলসার, বদহজম বাড়ার সাথে সাথে লিভার, কিডনি, ব্রেইন, হার্টসহ দেহের অন্যান্য অঙ্গও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এদিকে, ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই), জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদফতর ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু রমজান উপলক্ষে ভেজাল বিরোধী তৎপরতা বাড়ানো হলেও কমেনি খাদ্যে ফরমালিন, বিষাক্ত ক্যামিকেল ও রঙ মেশানোর পরিমান।

সাধারণ মানুষের মতে, এসব প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতা, অদক্ষতা ও জনবল সংকটের কারণে ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেও বন্ধ করা যাচ্ছে না ভেজাল খাবার তৈরি ও বিক্রি।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G